নিজস্ব প্রতিবেদন, শিলিগুড়িঃ যেসব শিশুর ঠোঁট-নাক ইত্যাদিতে জন্মগত ত্রুটি রয়েছে তারা প্লাস্টিক সার্জারির মাধ্যমে ভালো হয়ে যাচ্ছে শিলিগুড়ি সেবক রোড এর আনন্দলোক নার্সিংহোমে। যারা দুঃস্থ, প্লাস্টিক সার্জারি করে শিশুসন্তানকে ভালো করার উপায় নেই, সেইসব পরিবারের শিশুদের বিনে পয়সায় প্লাস্টিক সার্জারির বিশেষ অপারেশনের মাধ্যমে সুন্দর করে তুলছেন ওই নার্সিংহোমের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডাক্তার নীলা ভট্টাচার্য। আর এই বিশেষ কাজের জন্য গত ২ মার্চ তামিলনাড়ুর চেন্নাইতে গ্লোবাল ওমেন আইকনস ২০১৯ নামে বিশেষ পুরস্কার পেলেন তিনি। তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল বনওয়ারীলাল পুরোহিত তার হাতে পুরস্কার তুলে দিয়েছেন। মাস্টারমাইন্ড ফাউন্ডেশন নামে একটি সংস্থা ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল।আর্ন্তজাতিক নারী দিবসের আগে এটি নিশ্চয়ই ভালো খবর। স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে তার এই বিশেষ পুরস্কার।
শিলিগুড়ি সেবক রোড এর আনন্দলোক নার্সিংহোমে ১২ বছর ধরে চলছে স্মাইলি ট্রেন নামে একটি প্রকল্প। আর এর পুরোধা ডাক্তার নীলা ভট্টাচার্য। তিনি এখন পর্যন্ত ৪ হাজার দুঃস্থ ছেলে-মেয়ের প্লাস্টিক সার্জারির মাধ্যমে বিশেষ অপারেশন করে তাদের সুন্দর, সুস্থ করে তুলেছেন। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত এবং প্রতিবেশী রাজ্য থেকেও এখানে এসে ছেলে মেয়ের অভিভাবকরা চিকিৎসা করিয়ে চলেছেন। এইসব পরিবারকে এর জন্য নার্সিংহোমে ওষুধ, খাদ্য বা অন্য কোন খরচ করতে হয়নি। নার্সিং হোম এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডাক্তার সুশান্ত রায় জানিয়েছেন, এটা একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। বহু শিশু এর মাধ্যমে সুস্থ, সুন্দর হয়েছে। ডাক্তার নীলা ভট্টাচার্য নার্সিংহোমে স্মাইল ট্রেন প্রকল্পের কাজও করে চলেছেন মন দিয়ে। দুর্ঘটনায় কেও হয়ত বিভৎসভাবে আহত হয়েছেন, কোন ব্যক্তি আগুনে পুড়ে গিয়েছেন, তাদের বিশেষ প্লাস্টিক সার্জারির চিকিৎসার প্রয়োজন হলে সেটাও সুন্দরভাবে করে চলেছেন এই মহিলা চিকিৎসক। ২০১৬ সালে ভারত সরকারের নারী ও শিশু বিভাগ মন্ত্রক ১০০জন মহিলাকে বিশেষভাবে পুরস্কারের জন্য চিহ্নিত করলে সেই তালিকায়
নীলা ভট্টাচার্যের নামও ছিল। রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় তাঁর হাতে পুরস্কার তুলে দিয়েছেন। শিলিগুড়ির ওই নার্সিং হোমে এই ধরনের কাজের মাধ্যমে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে বিরাট সুনাম অর্জন করেছেন তিনি। তাকে নিয়ে অনেকেই গর্ব করছেন।