সাজুবাবুর সঙ্গে যোগ করুন,ফলাফল যোগই হবে

নিজস্ব প্রতিবেদন,শিলিগুড়িঃ +×+=+ মানে যোগ এর সঙ্গে যোগ গুন করলে যোগই হয়।এতো আমরা বীজগণিতের ফর্মুলা জানি। কেও যদি বলেন, ঈশ্বরের সঙ্গে যোগ করবেন মানে ঈশ্বরের কাছে যাবেন তবে যোগ করুন মানবিক ও সামাজিক কাজ করে। পৃথিবীর সব সত্যদ্রষ্টা মহাপুরুষরাই বলে গিয়েছেন,গরিব অসহায় মানুষদের পাশে থাকুন। ঈশ্বরের কাছে যাবেন। আর এই দর্শনকে সামনে রেখে এখনও বহু মানুষ, সমাজসেবী সংগঠন অসহায় গরিব দুঃখীদের জন্য কাজ করছেন। এমন ভাবনা নিযেই বিগত কয়েকবছর ধরে প্রত্যন্ত ডুয়ার্সের বন্ধ চা বাগানের অসহায় শ্রমিকদের বস্ত্র দান করে নজির তৈরি করেছেন বীরপাড়ার বীরসা মুন্ডা বস্ত্র ব্যাঙ্কের প্রতিষ্ঠাতা সাজু তালুকদার।

এখন সাজুবাবু আবার তার সামাজিক ও মানবিক ভাবনা বিষয়ক কাজে যোগ করেছেন হেভেন শেল্টার হোম। রাস্তায় পড়ে থাকা নাম না জানা পুরুষ ও মহিলাদের তুলে নিয়ে গিয়ে নিজের ওই হেভেন শেল্টার হোমে রাখছেন সাজুবাবু। তারপর তাদের অন্ন, বস্ত্র, চিকিৎসার ব্যবস্থা করছেন তিনি। কিন্তু কেন? তিনি কি একাজ করে টাকা পাবেন? একাজ করে কি তার ব্যবসা হবে? প্রশ্ন করলে সাজুবাবু বলেন,কোনও অর্থ আসবে না। এ আসলে একরকম যোগ। যোগ করুন যোগই হবে। বিয়োগ কিছু হবে না। ওই অসহায় ফুটপাতের মানুষেরাা বা চা শ্রমিকেরা যে ভালোবাসা দেয় বা যে নির্মল হাসি দিয়ে কাছে টেনে রাখে তা লাখ টাকা খরচ করেও পাওয়া যাবে না। ডুয়ার্সের কোণায় কোণায় তাই সাজু তালুকদার এখন একটি নাম।
ছেলেবেলায় স্কুলে যাওয়ার সময় ইউনিফর্ম না থাকায় স্কুলে বকুনি খেতে হয়েছে সাজুবাবুকে। স্কুলের কর্তৃপক্ষ এটা বোঝার চেষ্টা করেনি যে ঘরে অভাব থাকায় স্কুল ইউনিফর্ম তিনি তৈরি করতে পারেননি। শেষে পড়াশোনাই ছেড়ে দেন। আর বড় হয়ে তাই মানুষের বস্ত্র না থাকার কষ্ট তিনি খুব বুঝতে পারেন। তাই নিজ উদ্যোগে খুলেছেন বস্ত্র ব্যাঙ্ক। ডুয়ার্স, শিলিগুড়ি সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তিনি বস্ত্র সংগ্রহ করছেন আর সেসব বিলি করছেন বন্ধ চা বাগানের শ্রমিক ও অন্য বস্তি এলাকায়।
সামান্য গাড়ি চালক সাজুবাবু। গাড়ি তিনি চালান বটে কিন্তু বড় মাপের একজন চালক বটে। নিজের গাড়ি চালানোর রোজগার এর সঙ্গে কিছু মানবিকগুনসম্পন্ন মানুষের সহায়তায় আজ হেভেন শেল্টার হোমের দুঃখী কিছু মানুষকে তিনি বাঁচিয়ে রাখার মতো বড় চালকের ভূমিকা পালন করছেন।
শুক্রবার,৭জুন২০১৯, সাজুবাবু আসেন শিলিগুড়ি। তাকে চাল, আটা,ফল, পুরানো জামাকাপড়, টাকাপয়সা, পুরানো টিভি, পুরানো ফ্যান দিয়ে একরকম মানবিক ও সামাজিক যোগ করেন হায়দরপাড়ার বিকি সাহা, পুস্পিতা সাহা, ব্যবসায়ী অরবিন্দ ঘোষ, সুকান্তনগর লাফিং ক্লাবের কামেলি কুন্ডু, দেশবন্ধু পাড়ার সঙ্গীত শিল্পী চম্পা রায়চৌধুরী, তার স্বামী অবসরপ্রাপ্ত আয়কর অফিসার শৈবাল রায়চৌধুরী,বাচিক শিল্পী জুই ভট্টাচার্য, প্রধাননগরের গোপাল সাহা ও নিরঞ্জনা সাহা, সমাজকর্মী অভিজিৎ দাস, খবরের ঘন্টার সহসম্পাদিকা শিল্পী পালিত ও তার স্বামী কাঞ্চন পালিত। সাজুবাবুকে আরও কেও সহায়তা করতে চাইলে 7001622811 নম্বরে যোগাযোগ করুন।