মৃত্যুর দূতকে থমকে দিয়ে শিলিগুড়িতে মস্তিষ্কের বিরল অপারেশন!!

নিজস্ব প্রতিবেদন ঃ চিকিৎসকরা কখনও কখনও এমন বিস্ময়কর কাজ করেন যা আমরা সাধারণ মানুষ ভাবতেও পারি না।একজনের মাথা থেকে খুলি খুলে সেই খুলি বা হাড় পেটের মধ্যে রেখে দিয়েছিলেন অপারেশনের মাধ্যমে, দেড় মাস পর পেট থেকে সেই খুলির হাড় খুলে আবার মাথায় লাগিয়ে দেওয়ার কাজ হল।উত্তর পূর্ব ভারতের গেটওয়ে শহর শিলিগুড়িতে চোখ কপালে তোলার মতোই এমন অভাবনীয় মস্তিষ্কের অপারেশন হচ্ছে। হ্যাঁ প্রতিভাবান নিউরোসার্জন ডাঃ মলয় চক্রবর্তীর নেতৃত্বে এমন ঝুকিপূর্ণ অপারেশন সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন হয়েছে শিলিগুড়ির মতো শহরে।
যে শহর কয়েকবছর আগেও ছিলে নিতান্ত এক গেঁয়ো শহর আজ সেই শহরেই কিন্তু অনেক প্রতিবন্ধকতার মধ্যেই চিকিৎসা জগতে বিস্ময়কর সব কাজ হয়ে যাচ্ছে। ডুয়ার্সের ক্রান্তি লাগোয়া মৌলানী গ্রামের গরিব রিকশা চালক সুপেন রায়ের মাথায় কিভাবে যে জটিল অপারেশন হয়েছে তা আপনি ভাবতেও পারবেন না। মৃত্যু যেখানে ছিল প্রায় নিশ্চিত সেখানে আপাতত মৃত্যু থমকে গিয়েছে বৃদ্ধ রিকশা চালক সুপেন রায়ের জীবনে।প্রায় দুমাস আগে গ্রামের কাছেই এক দুর্ঘটনায় মাথায় আঘাত পান সুপেন।তাঁর মস্তিষ্কের বাম অংশে রক্ত জমাট বাঁধে। তাঁকে বাঁচিয়ে তোলা কঠিন কাজ হয়ে পড়ে।সুপেনের পরিবারের সদস্যরা ভগবানতুল্য ব্যক্তিত্ব, দেশের গর্ব পদ্মশ্রী করিমূল হকের দ্বারস্থ হন।করিমূলবাবু সঙ্গে সঙ্গে প্রতিভাবান নিউরোসার্জন ডাঃ মলয় চক্রবর্তীর দ্বারস্থ হন। ডাক্তার চক্রবর্তীর নেতৃত্বে নিউরোসার্জন ডাঃ সফি গুরুতর অসুস্থ রিকশা চালক সুপেন রায়ের মস্তিষ্কের ঝুকিপূর্ণ অপারেশন শুরু করেন শিলিগুড়ি এসএফরোডে। মৃত্যুর দূতকে থমকে দিয়ে তাঁরা রোগীকে বাঁচানোর জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েন। টানা কয়েকঘন্টা ধরে অপারেশনে তাঁরা এমন কিছু কাজ করেন যা সত্যি কুর্নিশ জানানোর মতোই। চিকিৎসকরা যে ভগবানের সমান তা এই বিরল অপারেশন থেকে বোঝা যায়।সুপেন রায়ের মাথা থেকে খুলির হাড় খুলে নিয়ে তারা তা অপারেশনের মাধ্যমে পেটের পাশে চামড়ার ভিতরে রেখে দেন।সুপেন রায়কে তাঁরা ছুটি দিয়ে দেন নার্সিং হোম থেকে। টানা দেড় মাস ওষুধ গ্রহণের পর সুপেন রায় একটু সুস্থ হলে শুক্রবার আবার ডাঃ মলয় চক্রবর্তীর কাছে উপস্থিত হন চিকিৎসার দ্বিতীয় পর্বের জন্য। শুক্রবার পদ্মশ্রী করিমূল হকও উপস্থিত হন ডাক্তার মলয় চক্রবর্তীর কাছে। আর এদিনই সুপেন রায়ের পেট থেকে সেই খুলির হাড় খুলে তা আবার মস্তিষ্কের বাম দিকে প্রতিস্থাপনের অপারেশন প্রক্রিয়া শুরু হয়,শনিবার হবে অপারেশন যা চিন্তার বাইরে। এধরণের ঝুঁকিপূর্ন বিরল অপারেশনের মাধ্যমে মানুষ বাঁচানোর জন্য ডাক্তার মলয় চক্রবর্তীরকে এদিন ভগবানের সঙ্গে তুলনা করেন পদ্মশ্রী। আবার ডাক্তার মলয় চক্রবর্তীও পদ্মশ্রীর মানবিক মুখ এবং সামাজিক কাজকর্মের ভূয়সী প্রশংসা করেন। সুপেনের পরিবারের সদস্যরা চিকিৎসক ডাঃ মলয় চক্রবর্তী এবং পদ্মশ্রী করিমূল হকের অকৃত্রিম সহযোগিতার জন্য বারবার তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।