জীবনে টাকাই সব নয়, হাসপাতালের চাকরি ছেড়ে মন্তব্য চিকিৎসকের

নিজস্বপ্রতিবেদনঃ জীবনে টাকাই সব নয়। টাকা মানুষকে খুশি করতে পারে না। জীবন ধারনের জন্য কিছু টাকা প্রয়োজন। কিন্তু সারা জীবন টাকার পিছনে ছুটলে কোনও লাভ হয় না। অন্তত এই দর্শনে বিশ্বাসী বিশিষ্ট বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডাঃ শীর্ষেন্দু পাল।

সম্প্রতি শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল থেকে চাকরি ছেড়েছেন বিশিষ্ট এই চিকিৎসক। তারপর থেকে তাকে বেশি বেশি করে আর্থিকভাবে অনগ্রসরদের জন্য বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবির করতে দেখা যাচ্ছে। নিজে প্রাইভেট চেম্বার করলেও রবিবার বা অন্য ছুটির দিনগুলোতে ডাক্তার পাল পিছিয়ে পড়া অঞ্চলে গিয়ে চিকিৎসা করছেন লোকজনের। তার পাশাপাশি বিনামূল্যে ওষুধও বিলি করছেন।
রবিবার তিনি শিলিগুড়ি টিকিয়াপাড়ার পরমানন্দ যোগানন্দ যোগাশ্রমে গিয়ে অনাথ শিশুদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। তার আগে পদ্মশ্রী করিমুল হককে সঙ্গে নিয়ে মাল ব্লকের একটি চা বাগানে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। আগামী ২২ সেপ্টেম্বর তিনি রাঙাপানির বৃদ্ধাশ্রম আপনাঘরে গিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষার পাশাপাশি ওষুধও বিলি করবেন। তার সঙ্গে আবাসিকদের মধ্যাহ্ন ভোজনের ব্যবস্থা করছেন। রবিবার অবশ্য তাকে অনাথ আশ্রমে শিবির করার জন্য সহায়তা করেন শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের এস আই সত্যেন রায়।
কিন্তু অন্য অনেক চিকিৎসক যখন টাকা রোজগারে বেশি মনোযোগীী তখন ডাক্তার শীর্ষেন্দু পাল সেদিকে কেন কম মনোযোগ দিচ্ছেন, প্রশ্ন করলে ডাক্তার পাল বলেন, জীবনে টাকাই সব নয়। টাকা মানুষকে খুশি করতে পারে না। জীবনধারনের জন্য কিছু টাকা প্রয়োজন। কিন্তু সারাজীবন টাকার পিছনে ছুটলে কোনো লাভ হয় না। মানুষ ভালো হলে টাকা এমনিই আসবে। কেও যদি সঠিক চিকিৎসক হন তার টাকাপয়সার অভাব হয় না। তবে সমাজসেবা করলে অনেক বেশি তৃপ্তি লাভ করা যায় বলে তিনি মনে করেন। তার কথায়, সমাজসেবামূলক কাজে যে তৃপ্তি রয়েছে তা টাকাপয়সায় নেই। দেশকে এগোতে হলে সবাইকে এগোতে হবে। গরিবদের মধ্যে এইসব স্বাস্থ্য শিবির অত্যন্ত প্রয়োজন। আমাদের দেশে হাসপাতালগুলোর ওপর অত্যন্ত চাপ বাড়ছে। সেই হিসাবে যদি এইধরনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবির বেশি বেশি করে হয় তবে সরকারি হাসপাতালের ওপর চাপ কমে। পিছিয়ে পড়াদের মধ্যে অনেক রোগ দেরীতে ধরা পড়ে। তখন সঠিক চিকিৎসা হলেও লাভ হয় না। স্বাস্থ্য শিবির হলে অনেক রোগ অনেক আগে থেকেই ধরা পড়ে। তখন সঠিক চিকিৎসা হলে রোগী সুস্থ জীবনযাপন করতে পারে। ডাক্তার শীর্ষেন্দু পাল এসব কথা জানানোর পাশাপাশি খবরের ঘন্টাকে বলেন, তিনি বিনামূল্যে ওষুধ বিলি করে আরও বেশি তৃপ্তি পান। তবে চিকিৎসকরা গরিব মানুষের দুঃখের কথা বিন্দুমাত্র চিন্তা করেন না বলে যে নেতিবাচক প্রচার রয়েছে সেদিক থেকে ডাক্তার শীর্ষেন্দু পাল এক ব্যতিক্রমী নজির তৈরি করেছেন।