কিভাবে ভালো রাখবেন কিডনি, কিডনি দিবসের বার্তা

নিজস্ব প্রতিবেদন ঃ বৃহস্পতিবার ১০ মার্চ ছিলো বিশ্ব কিডনি দিবস। আর এই বিশেষ দিনকে সামনে রেখে শিলিগুড়ি সেভক রোডের আনন্দলোক মাল্টি স্পেশালিটি হাসপাতালে কিডনি সচেতনতায় বিভিন্ন বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট কিডনি বিশেষজ্ঞ ডাঃ অভিনব দেবনাথ, নার্সিং হোমের কর্নধার ডাঃ সুশান্ত রায়,ডাঃ এ কে খান্ডেলওয়াল প্রমুখ। কিডনি কিভাবে ভালো রাখা যায় তা নিয়েও ডাঃ অভিনব দেবনাথ কিছু বক্তব্য মেলে ধরেন।
বর্তমানে কিডনি রোগীর সংখ্যা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। সঠিক সময়ে পরীক্ষা করে এবং দ্রুত চিকিৎসা শুরু করে আমরা এই রোগকে প্রতিরোধ করতে পারি অথবা এই রোগের
কিডনি ভালো রাখার আটটি গোল্ডেন রুলস এইরকম– এক) ফিট ও অ্যাক্টিভ থাকা– সঠিক ওজন যদি না বজায় থাকে তা ব্লাড প্রেসার ও সুগারের জন্য ঝুঁকি হতে পারে। অত্যধিক ওজনের জন্য কিডনির ওপর চাপ বেড়ে যায়। অনেকসময় রক্তে ক্রিয়েটিনিন বা প্রস্রাবে প্রোটিন নর্মাল থাকলেও কিডনির ভেতর প্রেসার অনেক বেশি থাকে। তা কিডনির জন্য ক্ষতিকর।তাই নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে সঠিক ওজন বজায় রাখা জরুরি।
দুই) স্বাস্থ্যকর খাদ্য ঃ খাবারে নুনের মাত্রা কম করা,প্রতিদিন এক চা চামচ বা ৫ গ্রামের কম। এবং প্রক্রিয়াজাত রেস্তোরাঁর খাবার কম খাওয়া। কিডনি রোগীদের ক্ষেত্রে নুনের মাত্রা বেশি থাকলে কিডনির ওপর ক্রমাগত প্রেসার বেড়ে যাবে।
তিন)ব্লাড সুগার পরীক্ষাঃ অর্ধেক লোক জানতেই পারেন না যে তাদের সুগার আছে। যখন সুগার ধরা পড়ে অনেকের কিডনিতে ইতিমধ্যে ড্যামেজ শুরু হয়ে যায়। তাই প্রথম থেকেই সুগারকে নিয়ন্ত্রিত করতে হবে। এখন শুধু সুগারকে নিয়ন্ত্রণ করাই যথেষ্ট নয় এমন ওষুধ ব্যবহার করতে হবে যার কিডনির উপর দীর্ঘস্থায়ী লাভ আছে। তাই নেফ্রোলজিস্টের কাছে একদম প্রথম দিকেই আলোচনা করাটা জরুরি।
চার) ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ ঃ হাই ব্লাড প্রেসার কিডনির জন্য ক্ষতিকর।নতুন গাইডলাইনে প্রেসার ১৩০/৮০ এর নিচে রাখার কথা বলা হয়েছে। প্রেসারের ওষুধ, রোগীর বয়স, কিডনির বর্তমান অবস্থা এবং প্রস্রাবে প্রোটিনের মাত্রা দেখে নির্ধারণ করতে হয়।সবার জন্য প্রেসারের ওষুধের নির্বাচন আলাদা।
পাঁচ) প্রচুর পরিমাণ জল খাওয়া ঃ সাধারণ সুস্থ লোকের দিনে তিন লিটার পর্যন্ত জল খাওয়া উচিত। এতে কিডনিতে ইনফেকশন বা পাথর হওয়ার প্রবনতা কম থাকে। তবে যাদের আগে থেকে কিডনির সমস্যা আছে তাদের কিডনির অবস্থার উপর নির্ভর করে জলের মাত্রা সীমিত করতে হবে।
ছয়) সিগারেট ঃ কিডনির রক্ত প্রবাহ কমিয়ে দেয় ও ক্যান্সারের ঝুঁকিকে ৫০ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়। তাই অবিলম্বে সিগারেট বন্ধ করা উচিত।
সাত)পেইন কিলার ব্রুফেন জাতীয় এবং কাউন্টার মেডিসিন নেওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। কারো কারো পেইন কিলারের একটা ডোজ থেকে কিডনিতে সমস্যা হয়ে যেতে পারে। এদের একুউট কিডনি ইনজুরি বা একুট ইনটারক্টিয়াল নেফ্রাইটিস হতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে গ্যাসের ওষুধ নিলেও তা কিডনিকে ক্ষতি করতে পারে। তাই ওষুধ নেফ্রোলজিস্টের পরামর্শ নিয়ে খেতে হবে।
আট) রেগুলার চেক আপঃ যাদের সুগার হাই ব্লাড প্রেসার এবং ওবেসিটি ( অতিরিক্ত ওজন) সংক্রান্ত সমস্যা আছে তাদের নিয়মিত রক্ত ও প্রস্রাব পরীক্ষা করা উচিত এবং নেফ্রোলজিস্টের তত্বাবধানে থাকা উচিত।
এদিন কিডনি বিশেষজ্ঞ ডাঃ অভিনব দেবনাথ, বিশিষ্ট চিকিৎসক ডাঃ সুশান্ত রায় প্রমুখ সাংবাদিক বৈঠকে আরও বলেন, কিডনির স্বাস্থ্য সর্বত্র সবার জন্য, প্রতিরোধ থেকে সনাক্তকরণ পর্যন্ত উপযুক্ত সুবিধাই অগ্রাধিকার।