লুপ্তপ্রায় বাদ্যযন্ত্র সংগ্রহ করে সঙ্গীত চর্চায় মগ্ন এই ব্যতিক্রমী কিশোর শিল্পর

নিজস্ব প্রতিবেদন ঃ  পুরনো দিন সময়ের নিয়মে বিদায় নেয় ঠিকই কিন্তু পুরানো সেদিনের বিভিন্ন সামগ্রী কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মূল্যবান থেকে অতি মূল্যবান হয়ে ওঠে।আর কেও যদি ব্যতিক্রমী প্রতিভা বা অতি মননশীল হয় তবে তার কাছেতো পুরানো সেদিনের কথা যেন হীরের মতোই হয়ে ওঠে। জলপাইগুড়িতে এমন একজন প্রতিভাবান কিশোরের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে।
সঙ্গীত শিক্ষা‌র তালিম তাঁর নেওয়া হয়নি কখনও। কিন্তু সঙ্গীতে যেন তার জন্মগত প্রতিভা। এই প্রতিভাকে সঙ্গী করে এক অসাধ‍্য সাধনায় মগ্ন হয়েছে জলপাইগুড়ি‌র শহরের কিশোর শিল্পী সায়ন সেন। রাহুল দেব বর্মনের সঙ্গীতে ব‍্যবহৃত প্রায় ৪৫টি লুপ্তপ্রায় বাদ্যযন্ত্র সংগ্রহ করে সঙ্গীত চর্চায় মগ্ন হয়েছে এই কিশোর শিল্পী।*
বাংলার হারিয়ে যাওয়া আরও বিভিন্ন রকমের ছোট ছোট বাদ‍্যযন্ত্র রয়েছে তার কাছে। জলপাইগুড়ি‌ শহরের সেনপাড়ায় বাড়ি সায়নের। জলপাইগুড়ি জেলা স্কুল থেকে এবার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে সে। প্রায় হারিয়ে যাওয়া পুরনো দিনের মুখশঙ্কু ছাড়াও বেশকিছু বাদ্যযন্ত্র রয়েছে তার সংগ্রহে। এই বাদ‍্যযন্ত্রগুলো‌র নিয়মিত তালিম নেয় সে। আজকের ডিজিটাল যুগে এসব বাদ‍্যযন্ত্রের তেমন কোন‌ও প্রচলন নেই কোথাও। কোন‌ও সঙ্গীত পরিচালক বা শিল্পীদের‌ও এসব বাদ‍্যযন্ত্রের ব‍্যবহার করতে দেখা যায় না। সায়ন বলে, এই বাদ‍্যযন্ত্রগুলোকে সামগ্রিক‌ভাবে পার্কারশন ইন্সট্রুমেন্ট বলা হয়। মুখশঙ্কু, ঘটাম, খাঞ্জিরা, ডুপকি, গুইরো, সিঙ্গিং পাইপ সহ আরও অনেক রকম বাদ‍্যযন্ত্র রয়েছে তার কাছে।এগুলো রাজস্থান, কর্ণাটক সহ বিভিন্ন রাজ‍্য থেকে সংগ্রহ করতে হয়েছে তাকে। কিশোর এই ছাত্র জানায়, পুরনো দিনের যন্ত্রানুসঙ্গীতের প্রতি ভালোবাসা তার ছোট থেকেই রয়েছে। সেই ভালোবাসার টানেই মোবাইল ও টিভি থেকে দেখে দেখে এগুলো সংগ্রহ করা। নিজের বাড়িতে বসেই নিজে নিজে এগুলোর তালিম নেয় সে। বর্তমানে ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রপাতির জন্য এর ব্যবহার নেই বললেই চলে। তবে পুরোনো দিনের সঙ্গীতের ঐতিহ্যকে ধরে রাখার জন্য‌ই এই বাদ‍্যযন্ত্র সংগ্রহ করে ও বাজায়। বাবা শেখর সেন ও মা কনিকা সেন সবসময় তাকে ‌এব‍্যাপারে উৎসাহ দিয়ে চলেছেন। কনিকা সেন বলেন, মোবাইল ও টিভিতে দেখে পুরোনো দিনের এই বাদ‍্যযন্ত্রগুলো সংগ্রহ করে গান বাজনা শিখছে ছেলে। আমরাও সবসময় তাকে উৎসাহ দিই।