
নিজস্ব প্রতিবেদন ঃ মা আসছে।তিনিতো মা,সকলের মা,জগৎ জননী মা দুর্গা। কিন্তু এই সংসারে এমন অনেক মা আছেন যাদের বাস্তবে মা দুর্গার মতো দশ হাত না থাকলেও তাদের কাজ, তাদের সংগ্রামকে স্যালুট বা শ্রদ্ধা জানাতে হয় সবসময়।আর এইসব মায়েদের শ্রদ্ধা নিবেদনই আসল মা দুর্গার পুজো। খবরের ঘন্টা তাদের মা আসছে অনুষ্ঠানে কদিন ধরে এমন সংগ্রামী মা বোনেদের কাহিনী মেলে ধরছে।আজ শুনুন এমনই একজন মা এর কথা,যাঁর জন্ম থেকে এ পর্যন্ত সমস্ত জীবনটাই সংগ্রামের জীবন।নিজের সন্তান বড় করে তোলা বা সংসার চালাতে গিয়ে দিনরাত পরিশ্রম করে যাওয়া এমনই একজন মা হলেন ভারতী ঘোষ। ১৯৪৭ সালের ১৫ই আগস্ট ভারতবর্ষ স্বাধীন হওয়ার দিনে তাঁর জন্ম হয় কোচবিহার জেলার দেওয়ানহাটে। যেহেতু দেশ স্বাধীন হওয়ার দিনে তাঁর জন্ম তাই তাঁর কাকা প্রয়াত কংগ্রেস নেতা মধুসূদন দে তাঁর নাম রাখেন ভারতী।জন্মের পরই তাঁর শিলিগুড়ি চলে আসা এবং সংগ্রামের শুরু। পারিবারিক আর্থিক অবস্থা ভালো না থাকায় তাঁকে কখনো বিড়ির পাতা কাটতে হয়েছে, কখনো কাগজের ঠোঙ্গা বানাতে হয়েছে। বিয়ের পরও তাঁর সংগ্রাম থামেনি।তাঁর স্বামী প্রয়াত দিলীপ কুমার ঘোষ ছিলেন শিলিগুড়ির নাম করা ব্রিজ খেলোয়াড়। কোথাও কোনো ব্রিজ খেলার আসর বসলে তাতে অংশ নিয়ে পুরস্কার জিততেন প্রয়াত দিলীপ কুমার ঘোষ। আর প্রয়াত দিলীপ ঘোষ ছিলেন ভালো খোল বাদক।কোথাও কোনো বড় কোনো ভজনকীর্তনের আসর বসলে তাতে খোল বাজানোর জন্য ডাক আসতো দিলীপ ঘোষের।ফলে সংসারের দিকে তেমনভাবে নজর দিতে পারতেন না তিনি।খোল বাদক এবং ব্রিজ খেলার নেশাতে ডুবে থাকায় তিনি সংসারের প্রতি ধ্যান দিতে পারতেন না। ফলে তাঁর সংসারও আর্থিক দিক থেকে ভয়ানকভাবে পিছিয়ে পড়ে।সেই পরিস্থিতিতে পেটের ভাত সংগ্রহ করা এবং পুত্র সন্তানদের বড় করে তোলার কঠিন দায়িত্ব ভারতীদেবীকে নিতে হয়।ভারতীদেবীকে যদিও সবসময়ই সহযোগিতা করেন তাঁর প্রয়াত মা শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের কর্মী নীহার বালা দে। এমনকি ভারতীদেবীর বড় পুত্র বর্তমানে খবরের ঘন্টার সম্পাদক বাপি ঘোষকে শৈশব থেকে কোলেপিঠে বড় করে তোলার দায়িত্ব নেন প্রয়াত নীহার বালা দে। অপরদিকে ভারতীদেবী বাকি দুই সন্তানকে বড় করে তোলার জন্য কখনো হলুদ কারখানা, কখনো চানাচুর কারখানা, কখনো শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে স্পেশাল আয়া হিসাবে কাজ করেছেন।বর্তমানে ভারতীদেবীর ঠিকানা শিলিগুড়ি শান্তিনগরে নিজস্ব বাড়ি। কোনো কর্মই ছোট নয় যদি সৎ ভাবে সেই কর্ম করে থাকেন।সেদিক থেকে লড়াই সংগ্রামের এক বড় প্রতীক ভারতীদেবী।প্রসঙ্গত তাঁর বড় পুত্র খবরের ঘন্টার সম্পাদক বাপি ঘোষ জানিয়েছেন, ক’দিন আগে শিলিগুড়িতে কলাঙ্গনের এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি নিজের অজান্তে নিজের সম্পর্কে দুএকটি ভুল তথ্য দিয়েছেন। সেটি হলো তাঁর জন্ম বিহারের ঠাকুরগঞ্জে নয়,তাঁর জন্ম শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে। ভারতীদেবীর কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী খবরের ঘন্টার সম্পাদক জানিয়েছেন, তাঁর জন্ম সোমবার, সরস্বতী পূজার দিন রাত আটটায়, শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে।
বিস্তারিত জানতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন–
