ইংরেজি স্কুলে ভাওয়াইয়া

নিজস্ব প্রতিবেদন,শিলিগুড়িঃ আধুনিক কি বোর্ডের সঙ্গে দোতারা, সারেঙ্গি মিশিয়ে উত্তরবঙ্গের মাটির গান ভাওয়াইয়া নিয়ে কিছু কাজ করার ভাবনায় মেতেছেন শিলিগুড়ির সঙ্গীত শিল্পী ঝিনুক খানতালুকদার। শিলিগুড়ি ফুলবাড়িতে একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের সঙ্গীত শিক্ষিকা তিনি। দিনরাত গান নিয়েই তার সময় কাটে।
শিলিগুড়ি সুভাষপল্লী বাগরাকোটে বাড়ি ঝিনুকদেবীর। তার স্বামী বোধিসত্ব কালিম্পঙের একটি কলেজের শিক্ষক। ঝিনুকদেবীর আসল বাড়ি কোচবিহার জেলার দিনহাটায়। ছোট থেকেই তিনি সঙ্গীত চর্চা নিয়ে আছেন। তার মায়ের কাছে প্রথম তার সঙ্গীত শিক্ষা শুরু। পরে প্রয়াত সুনীল দাসের কাছে সঙ্গীত শিক্ষা। রবীন্দ্র সঙ্গীত থেকে নজরুল গীতি, ক্ল্যাসিক্যাল, ভাওয়াইয়া সবেতেই তার গলায় সুন্দর সুর খেলে। একসময় রাজ্য ভাওয়াইয়া সঙ্গীত প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়ে তিনি প্রথম পুরস্কার পান। পরে আবার রাজ্য স্তরের রবীন্দ্র সঙ্গীত প্রতিযোগিতাতেও তিনি প্রথম হন। বিয়ের পর তার শিলিগুড়ি চলে আসা। রবীন্দ্র ভারতি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি রবীন্দ্র সঙ্গীতে এম এ পাশ করেন। এখন একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের সঙ্গীত শিক্ষিকা। মজার দিক হল, ইংরেজি মাধ্যম স্কুল হলেও সেখানে ইংরেজি গান নিয়ে কোনও মাতামাতি হয় না। তার পরিবর্তে ঐতিহ্যের হিন্দি গান নিয়ে চর্চা হয়। আর মাঝেমধ্যে কোন অনুষ্ঠান হলে রবীন্দ্র সঙ্গীত ও লোক গান নিয়ে আলোচনা হয়। সামনে আবার অনুষ্ঠান হলে উত্তরবঙ্গের মাটির গান ভাওয়াইয়া নিয়ে আলোচনা হবে বলে ঝিনুকদেবী জানালেন। ঝিনুকদেবীর বাবা প্রয়াত সুশান্ত চন্দ্র তালুকদার উত্তরবঙ্গের মাটির গান নিয়ে কাজ করতেন। কোথায় কুশান গান হয়, কোথায় পালাগান হয়, কোথায় সারেঙ্গি আছে তার খোঁজখবর রাখতেন তিনি। আর এর জন্য গ্রামে গ্রামে ঘুরতেন। তার বাবার অসমাপ্ত কাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আগামী দিনে কিছু কাজ করতে চান ঝিনুকদেবী। তিনি বলেন, ভাওয়াইয়া গান উত্তরবঙ্গের সম্পদ। উত্তরবঙ্গের এই মাটির গানের অনেক কিছু হারিয়ে যাচ্ছে। তাই এর ওপর আরও কিছু কাজ করার ইচ্ছে আছে। তার স্বামী বোধিস্বত্ত তাকে এই কাজে সহযোগিতা করছেন।