
নিজস্ব প্রতিবেদন ঃ ডুয়ার্সের কালচিনি ব্লকের হ্যামিল্টনগঞ্জের কালি পুজো এলাকার একটি প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী কালি পুজো। সেখানে এবছরও জাঁকজমকের সঙ্গে কালি পুজো হচ্ছে। এবছর এই পুজোর ১০৬ তম বর্ষ।ব্রিটিশ সাহেবদের হাত ধরে ১৯১৭ সালে এই পুজো শুরু হয়েছিল । একটি কাঠের মন্দির ও মাটির প্রতিমা স্থাপন করেছিলেন ইউরোপীয়ন সাহেবরা । পরবর্তী কালে স্থানীয় মানুষেরা প্রতিবছর এই পুজো করে আসছেন।এলাকার বিভিন্ন চা বাগানের শ্রমিক ও জনগণের সাহায্যে প্রথমে মন্দির পাকা হয়।তারপর ২০০২ সালে পাথরের মূর্তি স্থাপন করা হয় সেখানে । মন্দিরে বহুদিন ধরেই পুজো করে আসছেন মন্দিরের প্রধান পুরোহিত কেদারনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। বর্তমানে তার বয়স ৮৭। তিনি বলেন, ‘বছরের অন্য দিন যেমন তেমন, তবে কালি পুজোর দিনে আলিপুরদুয়ার জেলা ছাড়াও আশপাশের একাধিক জেলা থেকে দর্শনার্থীরা মন্দিরে পুজো দিতে আসেন। ‘ পুজো কমিটির সভাপতি জিবেশ নষ্কর বলেন, ‘১৯১৭ সালে যে রীতিতে পুজো হত সেই রীতি মেনেই আমরা পুজো করে আসছি। করোনার কারনে গত দু বছর পুজোতে দর্শনার্থীদের অনেক নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হতে হয়েছে, যা এবছর হবে না।’
এই কালি পুজোকে কেন্দ্র করে হ্যামিল্টনগঞ্জের আয়োজন করা হয় বিশাল মেলারও। গত দুবছর করোনার কারনে মেলা না হলেও, এবছর মেলা হচ্ছে। ১২ দিন ধরে এই মেলা চলবে বলে মেলা কমিটির তরফে জানানো হয়। এ খবর চাউর হতেই এক নতুন অক্সিজেন পেয়েছেন হ্যামিল্টনগঞ্জবাসী। কারন দুর্গা পুজো ও কালি পুজোর পর যেখানে সকলের মান ভার থাকে, সেখানে এই মেলা হ্যামিল্টনগঞ্জ বাসী ও চা শ্রমিকদের জন্য মনোরঞ্জনের অন্যতম রসদ। মূলত ৮৮ বছর আগে চা শ্রমিকদের মনোরঞ্জনের অন্যতম উৎস হিসেবে এই মেলার আয়োজন করা হয় বলে মেলা কমিটির তরফে জানানো হয়। এই মেলাও চালু করেছিলেন ইউরোপীয়ন সাহেবরা যেখানে বিভিন্ন রাজ্য ও প্রতিবেশী দেশ থেকে ব্যবসায়ীরা এখানে দোকান দিতে আসেন। মেলা কমিটির সহ সম্পাদক পরিমল সরকার জানান, ‘ আগেকার দিনে মানুষের মনোরঞ্জনের অন্যতম উৎস ছিল এই মেলা। ইংরেজদের হাতে মেলা শুরু হলেও আমরা সেই ঐতিহ্যকে এখনও ধরে রেখেছি।তবে করোনার কারণে গত দুবছর মেলা না হলেও, এবছর হচ্ছে। রকমারি দোকান, নাগরদোলার পাশাপাশি থাকছে সার্কাস। এছাড়া কিছু নতুনত্ব করারও প্রয়াস রয়েছে আমাদের।’
