
শিল্পী পালিত ঃ কলকাতার কসবা থেকে আজ আত্মকথা লিখেছেন শিবানী সিনহা।

আমি শিবানী —ছোট্টবেলা থেকেই খুব হারমোনিয়াম বাজানোর শখ ছিল। টেবিলের ওপর অদৃশ্য হারমোনিয়াম বাজানোর চেষ্টা করতাম। সেই দেখে আমার দাদু আমাকে পাড়ারই এক পিসির কাছে নিয়ে গেলেন গান শেখার জন্য। আট বছর বয়সে গান শেখা শুরু হলো। এর কয়েক বছর পর প্রথামাফিক ক্লাসিকাল শেখা শুরু হলো। পেলাম আমার প্রথম গুরুকে। তাঁর নাম অক্ষয় কুমার দাশগুপ্ত। আমি তাঁর শেষ ছাত্রী ছিলাম। আমাকে তাঁর গানের সম্ভার উজাড় করে দিয়ে গেছেন। আজ আমি যতটুকু গাইতে পারি সবটুকুই তাঁর জন্য। ওনার তানপুরাটি আমাকে উপহার স্বরূপ দিয়ে যান, যা আজও সযত্নে রাখা আছে ।
এরপর তিনি বয়সজনিত কারণে ছেলের কাছে চলে যাওয়ায় আমারো গানে ছেদ পড়ে কিছুদিন। এরপর আরো একটু বড়ো হয়ে রবীন্দ্রসংগীত শিখতে উদ্যোগী হলাম। শিখতে শুরু করলাম ডাঃ শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায়ের কাছে। কিন্তু এক বছর যেতে না যেতেই বিবাহ সূত্রে দার্জিলিঙের বাসিন্দা হলাম। সেখানে গিয়ে আবার ক্লাসিকাল শেখা শুরু হলো। এবার গুরু হিসাবে পেলাম মণি কুমার রাই কে। এইভাবে সঙ্গীত প্রভাকর সম্পূর্ণ করলাম।
ঘটনাচক্রে আবার কলকাতায় প্রত্যাবর্তন। এবার এসে ভর্তি হলাম ” রবিতীর্থ ” তে। শ্রীমতি সুচিত্রা মিত্রকে পেলাম গুরু হিসাবে। দিদির ভালোবাসা, স্নেহ, শিক্ষা সব সযত্নে রক্ষিত আছে মনের মণিকোঠায়। তাঁর সঙ্গে আকাশবাণী, দূরদর্শন, এবং অনেক অনুষ্ঠান করার সৌভাগ্য হয়েছে আমার।
এরপর দীর্ঘ কয়েক বছর গান থেকে একদম বিরত ছিলাম। কিন্তু যেটা না বললেই নয়, আমাকে আবার এই সঙ্গীত জীবনে ফিরিয়ে আনেন অর্পিতা বাগচীদি। তার উৎসাহতেই আবার গানে ফেরা। তার কাছে আমি চিরকৃতজ্ঞ। আবার নতুন করে গানের জীবনের পথ চলা শুরু হলো। এখন আমার সঙ্গীত গুরু শ্রী আশিস ভট্টাচার্য। তাঁর তত্ত্বাবধানে রবীন্দ্রসংগীত শিখছি । তবে আমি সবরকম গান গাইতে ভালোবাসি, তাই নিজেই শিখি আর আনন্দে গাই সেই সব গান।
এছাড়া যাদের সাহায্য ছাড়া আমার গান একদমই সম্ভব ছিল না, তিনি আমার শাশুড়িমা এবং বাড়ির প্রত্যেকটি মানুষ।এছাড়া আমার সব বন্ধুরা , যারা আমাকে সব সময় উৎসাহ দেয়, গান শুনতে চায়, তাদের সবাইকে জানাই আমার ভালোবাসা। সবাই আগামী দিনগুলো ভালো কাটান, ভালো থাকুন সবাই । ধন্যবাদ।
শিবানী সিনহা
কসবা
কলকাতা