ক্রীড়া প্রতিভা তুলে আনতে শিলিগুড়ি মহকুমার খড়িবাড়িতে প্রশিক্ষন

নিজস্ব প্রতিবেদন ঃ পঁচিশ বছর বয়স লোকনাথ বিশ্বাসের।ইতিহাসে স্নাতক উত্তীর্ণ হয়েছেন। কিন্তু বিগত আট বছর ধরে তাঁর একটাই নেশা, গ্রামের ছেলেমেয়েদের বিভিন্ন মাদকের নেশা থেকে সরিয়ে এনে খেলাধূলায় অংশগ্রহণ করানো। এথলেটিক থেকে ফুটবল, কবাডি, থ্রো বল সবেতেই তিনি গ্রামের ছেলেমেয়েদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেছেন। সকাল বিকাল তিনি পড়ে থাকছেন ছেলেমেয়েদের খেলা শেখানোর কাজে।সাফল্যও আসতে শুরু করেছে।কিছুদিন আগেই হরিয়ানার রোহতকে জাতীয় থ্রো বল প্রতিযোগিতায় সে গ্রামের ছয় জন ছেলেমেয়ে অংশ নেয়। আবার সে গ্রাম থেকেই কয়েকজন ছেলেমেয়ে উত্তর প্রদেশে কবাডি খেলে এসেছে।
শিলিগুড়ি মহকুমার নেপাল সীমান্তের কাছেই রয়েছে খড়িবাড়ি বুড়াগঞ্জ।সেখানে প্রত্যন্ত একটি এলাকা হাতিডোবা। সেখানেই শুরু হয়েছে ক্রীড়া প্রশিক্ষক লোকনাথ বিশ্বাসের দিনরাত ক্রীড়া সাধনা। তরাই স্পোর্টস একাডেমি থেকে শিক্ষক পুস্পজিৎ সরকার, প্রসেনজিৎ সরকার প্রমুখ লোকনাথকে পিছন থেকে উৎসাহিত করে চলেছেন।
প্রশিক্ষক লোকনাথের বহু সমস্যা। আর্থিক অনগ্রসরতাই মূল সমস্যা। তারমধ্যেই চলছে প্রানপন প্রয়াস।জাতীয় থ্রোবল খেলায় সম্প্রতি হরিয়ানাতে গিয়ে এই গ্রাম থেকেই অংশ নেয় পঙ্কজ সিংহ, জ্যোতিষ সিংহ, সীমা নায়েক,দীপ্তি সিংহ, স্যুইটি সরকার, নীতিশ তির্কী। এদের মধ্যে কেও চা পাতা তোলে, কেও জমিতে হাল চাষ করে, কেও আবার অন্য কাজ করে। আর্থিক সমস্যা তাদের পরিবারকে আষ্টেপৃষ্টে ধরে রেখেছে। তারমধ্যেই পড়াশোনা করে ওরা খেলাধূলাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়। জাতীয় স্তরের থ্রোবলে এরা অংশ নিলেও এদের কারও জুতো কেনার পয়সা নেই, কেও আবার একটি ট্রাকস্যুটও কিনতে পারে না। নিয়মিত অনুশীলন করার জন্য পুষ্টিকর খাবারেরও প্রয়োজন। কিন্তু সেখানেও খামতি থেকে যাচ্ছে। এরমধ্যেও ওদের জেদ,খেলাধূলাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
প্রশিক্ষক লোকনাথ বলেন, তাদের মাঠে দুপুর দুটো থেকে তরাই স্পোর্টস একাডেমির পরিচালনায় প্রশিক্ষণ শুরু হয়ে যায়। সাত আট কিলোমিটার দূরের গ্রাম থেকে ছেলেমেয়েরা কেও হেঁটে, কেও সাইকেলে প্রশিক্ষণ নিতে আসে। এথলেটিকে সেখানে ৩০ জন, কবাডিতে ১৮ জন, ফুটবলে ৩৫ জন প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। কঠোর অনুশীলন চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত।