নিজস্ব প্রতিবেদন, শিলিগুড়িঃ একদিকে ফটোগ্রাফি, আর একদিকে যোগাসন এই নিয়ে ৭৪ বছরেও বেশ তরুন শিলিগুড়ি রবীন্দ্রনগরের প্রাণেশ বসাক। আর যেকদিন বাঁচবেন এই নেশা নিয়েই তিনি তার সময় পার করতে চান।
মোবাইল ফোন চলে আসায় ক্যামেরা প্রযুক্তিতে বিরাট বিপ্লব ঘটেছে বিগত বেশ কয়েকবছরে। যারা বহুদিন ধরে স্টুডিও করে আসছেন তাদের ব্যবসা কার্যত এখন অনেকটাই চ্যালেঞ্জের মধ্যে। আগে ক্যামেরায় বেশ চলতো রিল। এখন তা প্রায় ইতিহাসের পাতায়। স্টুডিওর ডার্ক রুম সর্বত্রই উঠে গিয়েছে। আগে কালার ছবি চেন্নাই থেকে প্রিন্ট হয়ে আসতো।এখন সেটাও ইতিহাস। আগে ছেলেমেয়েরা পুজোর অনেক আগে থেকে পয়সা জমাতো এই আশা নিয়ে যে পুজোয় সাজগোজ করে স্টুডিওতে গিয়ে ছবি তুলবেন। প্রযুক্তির উন্নতি সে ব্যবস্থাকেও ভেঙে দিয়েছে। এখন সেলফি যুগ আসায় সবার হাতে প্রায় স্মার্ট ফোন। ফলে পুরোন সব স্টুডিি প্রশ্নের মধ্যে। বহু স্টুডিও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। একদুটি যেসব আছে পাস পোর্ট তোলা, বিয়ে বাড়ির কাজ, কিছু ছবি প্রিন্ট করা আর টুকিটাকি দু’চারটে ছবি তোলা। ছেলেবেলা থেকে ফটোগ্রাফি চালিয়ে যাওয়া শিলিগুড়ি রবীন্দ্রনগরের প্রানেশ বসাকও এই সঙ্কটের মধ্যেও তার ফটোগ্রাফি চালিয়ে যাচ্ছেন। আগের সে ব্যবসা নেই। সারাদিন কার্যত মাছি মারতে হয়। তবুও স্টুডিও নিয়ে আছেন। ১৯৮০ সালি শিলিগুড়িতে স্টুডিও খোলেন। এখনও তা নিয়ে আছেন। তার কথায়, ফটেগ্রাফি ভালোবাসি। এটা একরকম নেশা। তাই কাজ চলছে। আর এই ৭৪ বছর বয়সেও প্রাণেশবাবুর এই প্রাণ শক্তির পিছনে প্রধান চাবিকাঠি হল, তার যোগাসন। সর্বাঙ্গ আসন, হলাসন, পবন মুক্তাসন থেকে গোমুখাসন সহ তিরিশ রকমের আসন তিনি চটপট করে ফেলতে পারেন। শিলিগুড়ি সুকান্ত নগর কুন্ডু পুকুর মাঠে লাফিং ক্লাবে গিয়ে তিনি প্রতিদিন সকালে আসন শেখান। নিজে যোগাসন করেন আর অন্যদেরও শেখান।আসন করায় এই বয়সেও তিনি তরুন। রোগব্যাধি সব তার কাছ থেকে অনেক দূরে। কাজেও পান প্রাণ। বহু বয়স্ক মানুষ লাফিং ক্লাবে তার তত্বাবধানে আসন শিখে বেশ আছেন। লাফিং ক্লাবের সভাপতি প্রদ্যুৎ কুমার দেবও সেকথা স্বীকার করেন। বুধবার ২১ জুন বিশ্ব যোগাা দিবসের দিনও সকালে প্রাণেশবাবু কুন্ডু পুকুর মাঠে সকলের সামনে নানা রকম যোগাসন দেখিয়ে বেশ হাত তালি কুড়োলেন। প্রাণেশবাবু জানালেন, নতুন প্রজন্ম যোগা করুক নিয়মিত। তিনি শেখাতে আগ্রহী। যোগা বিরাট এক ওষুধ। যোগার ফলে বার্ধক্যেও তরুন থাকা যায়।