
নিজস্ব প্রতিবেদন ঃ পাতাল ফুঁড়ে বুদবুদ আকারে অনবরত বের হচ্ছে মিস্টি জলের ধারা।আলিপুরদুয়ারের বারবিশাতে এই ঘটনা ঘিরে ব্যাপক কৌতূহল দেখা দিয়েছে।
ঘটনাটি একটি বাঁশ বাগানে। মাটির নিচ থেকে অনবরত বের হচ্ছে জল। পাতাল ফুঁড়ে বুদবুদ আকারে বের হচ্ছে এক মিস্টি জলের ধারা।* *বিগত ষাট বছর বা তার বেশি সময় ধরে বিরামহীনভাবে চলছে এই ঘটনা।
আলিপুরদুয়ার জেলার কুমারগ্রাম ব্লকের ভলকা-বারোবিশা একনম্বর গ্রাম পঞ্চায়তের বারোবিশা গ্রামে খোকন দাস নামে একজনের বাড়িতে গেলেই চোখে পড়ছে বিস্ময়কর জলধারা।ওই বাড়ির বাঁশ বাগানেই রয়েছে এই জলধারা। ওই জলধারার স্থানীয় নাম ‘পাতাল’।*
ওই বারোবিশা গ্রামে একসময় পানীয় জলের উৎস ছিল ওই প্রাকৃতিক জলধারা। সবাই স্নানও সারতেন সেখানে।পরে নলকূপ ও জনস্বাস্থ্য কারিগরি বিভাগ জলের পাম্প বসায় গ্রামে, এখন ওই জলধারায় স্নান করতে যান অনেকেই। ওই জলধারার আরও একটি বৈশিষ্ট হ’ল যে, গরমের সময় ওই জল গায়ে ঢাললে বরফ গোলা জলের অনুভূতি মেলে।আবার শীতের সময় জল হয়ে ওঠে রীতিমত উষ্ণ। কিন্তু কী কারনে ওই জলধারার জলের উষ্ণতার পরিবর্তন হয় তা নিয়ে আজ পর্যন্ত কোনে গবেষণাই হয়নি বলে আক্ষেপ প্রকাশ করেন খোকনবাবু। ওই প্রাকৃতিক জলধারার অতিরিক্ত জল আপন খেয়ালেই নিজের পথ বেছে নিয়ে মিশে গিয়েছে বারোবিশা গ্রামের বুক চিরে চলে যাওয়া সুটিমারি নদীতে। বিস্ময়কর জলের উৎস দেখতে অনেকেই ছুটে আসেন সেখানে। আর তাই বাঁশ ঝারের ওই এলাকাটিকে সব সময় সাফসুতরো রাখেন খোকনবাবু।এদিকে এই বারোবিশা গ্রামই হ’ল আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদের সভাধিপতি শীলা দাস সরকারের পৈত্রিক ভিটে। ফলে তাঁর শৈশব থেকে কৈশোর এবং যৌবনের অনেকটা অংশ কেটেছে ওই গ্রামেই। তিনি বলেন “পাতালের সঙ্গে এখনও একটা আত্মার টান আছে। ওখানকার মিষ্টি জল খেয়ে ও স্নান করেই তো বড় হয়েছি। বান্ধবী ও পরিবারের সঙ্গে ওই জলে হুটোপুটির স্মৃতি আজও টাটকা রয়েছে। আর যাঁর বাড়িতে রয়েছে ওই ‘পাতাল’, সেই খোকন দাস বলেন “এখন আমার বয়স ছাপ্পান্ন।আমার জন্মের আগে থেকেই ওই জলধারা একই গতিতে যে বয়ে চলেছে আজও তার কোনো পরিবর্তন নেই। বর্ষায় যেমন জলের পরিমাণ বাড়ে না, তেমনি শুখা মরসুমে কমেও যায় না। তবে ঠিক কী কারনে দুই ঋতুতে জলের তাপমাত্রার ওই আমূল পরিবর্তন হয় তা আমাদের কাছে আজও বিষ্ময়ের।”
