নিজস্ব প্রতিবেদন ঃ শিলিগুড়ি হাকিমপাড়ার ছোট্ট শিশু মধুরিমা ঘোষ দুবছর আগে মারা গিয়েছে। মেয়েকে হারানোর দগদগে ক্ষত নিয়েও বিরাট মানবিক ও সামাজিক কাজে ব্রতী হয়েছেন শিলিগুড়ি হাকিমপাড়ার মদন ঘোষ। রবিবার তিনি শিলিগুড়ি শহর লাগোয়া বৈকুন্ঠপুর জঙ্গলের পাশে ফারাবাড়ি বল্লামপাড়াতে বিভিন্ন রকম মানবিক ও সামাজিক কাজ করলেন। তার পাশাপাশি মেয়ের জন্মদিনও পালন করলেন।
দুঃস্থ বিধবাদের মধ্যে বিলি করা হলো শাড়ি। দুঃস্থ অসহায় শিশুদেরও বিলি করা হল বস্ত্র। তার সঙ্গে সুভাষপল্লী ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন এর সহযোগিতায় গ্রামের সকলের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হলো। এর বাইরে শিশুদের নিয়ে হলো বসে আঁকো প্রতিযোগিতা। তছাড়া পুজো অনুষ্ঠানতো ছিলই। এর পাশাপাশি মধুরিমার নবছর পূর্তিতে গ্রামের শিশুদের নিয়ে কেক কাটলেন মদনবাবু।
দুবছর আগে মধুরিমা মারা যায়। ঠিক কি কারনে মধুরিমা মারা গিয়েছে তা আজও স্পষ্ট নয় বাবা মদন ঘোষের কাছে। তবে মেয়ের চিকিৎসার জন্য কলকাতা, দিল্লি সর্বত্র দৌড়ঝাপ করেছেন তিনি। পরে জানতে পারেন, তার মেয়ের নাকি বুকের ভিতরে টিউমার হয়েছিল।
মেয়েকে হারানোর যন্ত্রনা বুকের ভিতর মাঝেমধ্যে খোঁচা দেয় মদনবাবুকে। পেশায় তিনি ব্যবসায়ী। গতবছরই তিনি এক কোটি ৩৩ লক্ষ টাকায় কিনে ফেলেন তিন বিঘা জমি। ফরেস্টের পাশে সেই জমি কিনে তাতে সীমানা প্রাচীরও দিয়ে দেন। আর পুরো জমিটাই মেয়ের স্মৃতির উদ্দেশ্যে তিনি দান করছেন পরমানন্দ যোগানন্দ যোগাশ্রমকে। বর্তমানে এই আশ্রম চলছে শিলিগুড়ি টিকিয়াপাড়াতে। আশ্রমে সব অনাথ শিশুরা থাকে। মেয়ে মধুরিমার স্মৃতির উদ্দেশ্যে অনাথ আশ্রমে জমি দান করাই নয়, অনাথ আশ্রমের আবাসিকদের বসবাসের জন্য সেখানে বিল্ডিংও করে দিচ্ছেন মদনবাবু। এভাবেই তিনি তার হারানো মেয়ের স্মৃতি বাচিয়ে রাখতে চান। মদনবাবুর এই মহৎ কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেন আশ্রমের সঞ্জয় মহারাজ।