পিছিয়ে পড়া গ্রাম-বস্তিতে নিয়মিত স্বাস্থ্য শিবির করছেন এক চিকিৎসক

নিজস্ব প্রতিবেদন, শিলিগুড়িঃ পিছিয়ে পড়া গ্রাম ও বস্তি এলাকায় গিয়ে নিয়মিত স্বাস্থ্য শিবির বসিয়ে চলেছেন শিলিগুড়ির এক চিকিৎসক। তিনি নিজেতো বটেই তার সঙ্গে প্রবীন এক চিকিৎসক এবং অন্য টীম নিয়ে তিনি চলে যাচ্ছেন প্রত্যন্ত গ্রামে যেখানে সাধারণত ডাক্তার যায় না। একই সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছেন ওষুধও। আর এসবের পুরো খরচটাই তিনি বহন করছেন নিজের পকেট থেকে। চিকিৎসকরা টাকা ছাড়া কথা বলেন না, চিকিৎসকরা গ্রামে যেতেই চান না বলে যখন প্রচার আছে তখন ডাঃ আশুতোষ ঘোষদের মতো এমন ডাক্তারও আছেন যারা সামাজিক দায়বদ্ধতার কথা চিন্তা করে নিয়মিত গ্রাম ও বস্তি এলাকায় গিয়ে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবির বসিয়ে চলেছেন।

এক বা দুবছর ধরে নয়, টানা পনেরো বছর ধরে শিলিগুড়ি ও পার্শ্ববর্তী এলাকার গ্রাম ও বস্তি অঞ্চলে গিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবির বসিয়ে চলেছেন ডাঃ ঘোষ। অন্তত মাসে একটি শিবিরতো করেনই। আর এজন্য তিনি তার সঙ্গে নেন প্রবীন চিকিৎসক ডাঃ মনোরঞ্জন ঘোষকে। শেষ শিবির তার হয়েছে গাজলডোবাতে। সামনে রাজগঞ্জের মহান ভিটাতে শিবির রয়েছে। ডাঃ মনোরঞ্জন সাহা ছাড়া তিনি রোগীদের নাম লেখা, ওষুধ বিতরনের জন্য সঙ্গে নেন অভিজিৎ মৈত্র, মলয় মিত্র, বিনয় মজুমদার, সমর ভট্টাচার্যকে। পনের বছর ধরে কয়েক লাখ টাকা তিনি খরচ করে ফেলেছেন এইসব শিবির করবার জন্য। আর এনিয়ে তার কোনও আক্ষেপ নেই। তার পরিস্কার কথা, যাদের পয়সা নেই, টাকা নেই বলে যারা গ্রাম থেকে একটু শহরে এসে ডাক্তার দেখাতে পারেন না, তাদের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা নেই? চিকিৎসকদের প্রতি এইসব অসহায় মানুষরাও তাকিয়ে থাকেন। এদের চিকিৎসা করে বিনা পয়সায় ওষুধ দিলে এরা যেভাবে শ্রদ্ধা ভক্তি জানায় তা লাখ টাকাতেও মেলে না।
শিলিগুড়ি এন জে পি ভক্তিনগর এলাকায় নার্সিং হোম রয়েছে ডাঃ আশুতোষ ঘোষের।সেখানে তিনি নিয়মিত প্রাইভেট চেম্বারও করেন পারিশ্রমিকের বিনিময়ে। যদিও গরিবদের জন্য ছাড় রয়েছে। আর এই নার্সিং হোম বা চেম্বার থেকে যা আয় হয় তার কিছু অংশ তিনি ওইসব স্বাস্থ্য শিবিরের জন্য ব্যয় করেন। শিলিগুড়ি চয়নপাড়া উগ্র তারা ওয়েলফেয়ার সোসাইটি তাকে অনেক সময় সহায়তা করে স্বাস্থ্য শিবির আয়োজনে। নিশ্চিন্তপুর চা বাগানেও তিনি স্বাস্থ্য শিবির আয়োজন করেছেন। সেখানে অনেকের শরীরে ত্বকের রোগ পেয়েছেন। তিনি বলেন, গরিব পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য ধারাবাহিকভাবে তার এই শিবির চলবে।