নিজস্ব প্রতিবেদন ঃ অনেকে তাদের দেখে ভয় পান। অনেকে আবার তাদের দেখে বিদ্রুপ করেন। কিন্তু সমালোচকদের চোখকে তারা ঘুরিয়ে দিলেন তাদের সামাজিক ও মানবিক কাজের মাধ্যমে। রবিবার শিলিগুড়ি হাকিমপাড়ার টি এস ক্লাবে পদ্মশ্রী করিমুল হকের হাতে ৩৫ টি নতুন শাড়ি তুলে দিয়ে এক নতুন নজির তৈরি করলেন শিলিগুড়ির বৃহন্নলারা।
শিলিগুড়ি হাকিমপাড়ার টি এস এবং আশ্রমপাড়ার জে টি এস ক্লাব এর আগেও পদ্মশ্রী করিমুল হকের হাতে প্রচুর বস্ত্র তুলে দিয়েছিলেন। এক বছর বাদে রবিবার আবার তারা সেই মানবিক ও সামাজিক কাজে উদ্যোগী হলেন। ওই দুটি ক্লাবের তরফে ভবতোষ সাহা, প্রানতোষ সাহা, সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়,বনমালা ওয়েলফেয়ারের নাট্যকার বিশ্বজিৎ রায় সহ অন্যান্য সকলে কদিন ধরেই পদ্মশ্রী করিমুল হকের হাতে নতুন ও পুরনো বস্ত্র তুলে দেবেন বলে প্রচার করছিলেন।রবিবার ছিল সেই দিন। এদিন সকাল থেকে বিভিন্ন মানুষ টি এস ক্লাবের সামনে ভিড় করতে থাকেন বস্ত্র নিয়ে। সেখানে উপস্থিত হন বৃহন্নলারাও। ময়নার নেতৃত্বে সোনালী সহ অন্য বৃহন্নলারা নতুন শাড়ি নিয়ে উপস্থিত হন। আবার মা সুধাংশুবালা সারস্বত মহিলা সংঘের তরফে কবিতা বনিক সহ অন্যরাও প্রচুর জামাকাপড় নিয়ে সেখানে উপস্থিত হয়ে পদ্মশ্রী করিমুল হকের হাতে সব বস্ত্র তুলে দেন। ময়না জানান, তারা চাঁদা তুলে এই কাজটি করলেন। শুধু এদিনই নয়, বৃহন্নলা সমাজের তরফে তারা এরকম মানবিক ও সামাজিক কাজ করেন। এর আগে তারা অনাথ আশ্রম বা কারও মেয়ের বিয়েতে সাহায্য করেছেন।
সমাজসেবী সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় জানান, এদিন এক ট্রাকের মতো জামাকাপড় সংগ্রহ করা হয়েছে। সবই করিমূলবাবুর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও দুর্গা পুজো এবং কালী পুজোতে জেটিএস এবং টি এসে যে চাঁদা সংগৃহীত হয়েছে তার থেকে বাঁচিয়ে ত্রিশ হাজার টাকা এদিন তুলে দেওয়া হয় পদ্মশ্রীর হাতে। আশ্রমপাড়ার সমাজ কর্মী পল্টন দাসও এদিন সেখানে উপস্থিত হয়ে প্রচুর জামাকাপড় তুলে দেন। পদ্মশ্রী করিমূল হক বৃহন্নলাদের সামাজিক ও মানবিক কাজের প্রশংসা করার পাশাপাশি টি এস ও জে টি এসের সামাজিক ভাবনার তারিফ করেন। জে টি এস ও টি এসের তরফে প্রানতোষ সাহা এবং ভবতোষ সাহা বলেন, তারা তাদের এই রকম সামাজিক ও মানবিক কাজের প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখবেন। এদিন সংগৃহীত বস্ত্র চা বাগানের বন বস্তি এবং অন্য গরিবদের হাতে তুলে দেবেন পদ্মশ্রী করিমূল হক।