
বাপি ঘোষ ঃ শিলিগুড়ি ঘোঘোমালি ফল বাজার নিবাসী সেই অসহায় সূত্রধর পরিবারের কথা আপনাদের সকলের নিশ্চয়ই মনে আছে।সেই পরিবারের মেয়ে ইতিহাসে অনার্স নিয়ে এম এ পাশ করা তাপসী সূত্রধর কঠিন মায়োপিয়া রোগে আক্রান্ত। ফলে একা একা চলাফেরা করার শক্তি হারিয়ে ফেলেছে তাপসী।তাপসীর সঙ্গে সঙ্গে সেই পরিবারের ছেলে দীপঙ্কর সূত্রধরও একই ব্যাধিতে আক্রান্ত। তাদের পরিবারে চলছে আর্থিক দৈন্যদশা। তাদের দরকার পুষ্টিকর খাদ্য এবং অর্থ সাহায্য। কিছুদিন আগে খবরের ঘন্টায় এই মানবিক পোস্ট দেখে বিভিন্ন মানবিক গুণসম্পন্ন মানুষ এগিয়ে আসেন। সেই পরিবারে ছিলো না কোনো বিদ্যুৎ সংযোগ। অন্ধকারে বা লন্ঠনের আলোয় রাত কাটাতো সেই পরিবার।খবরের ঘন্টায় সেই খবর হওয়ার পর এস জে ডি এ বোর্ড সদস্য এবং সমাজসেবী গৌতম গোস্বামী এবং টোটোন সাহা এগিয়ে আসেন। সেই পরিবারে আলোর ব্যবস্থা হয়। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আশ্বাস থেকে শুরু করে পরিত্রান সহভাগিতার সমাজসেবী তথা শিক্ষিকা পৃথা সেন , শ্রীরামকৃষ্ণ অনুরাগী সমাজসেবী সাগ্নিক ব্যানার্জী,সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়, উত্তরবঙ্গ পৌষ মেলা ট্রাস্টের সমাজসেবী জ্যোৎস্না আগরওয়ালা, আত্মজ সংস্থার বীনা চক্রবর্তী , আনন্দমার্গ রিলিফ টীম, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডাঃ শীর্ষেন্দু পাল, সমাজসেবী ও এঙ্কার জুঁই ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি এন্ড স্মাইলিং সোসাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটির বিশিষ্ট সমাজসেবী নবকুমার বসাক সহ আরও অনেকে এগিয়ে আসেন।প্রচুর পুষ্টিকর খাদ্য সামগ্রী জমা হয় সূত্রধর পরিবারে।সকলের ভালোবাসা ও আন্তরিকতায় যখন অসহায় তাপসী ও দীপঙ্করের মুখে হাসি ফুটছিল তখনই বিগত ক’দিন ধরে আরও একটি মর্মান্তিক সংবাদ হলো,তাপসী দীপঙ্করের মা কঠিন ব্যাধিতে আক্রান্ত। তাঁর এখন কালো পায়খানা হচ্ছে এবং স্ত্রী রোগজনিত জটিল ও কঠিন ব্যাধির জন্য ক্রমাগত রক্তক্ষরন হচ্ছে। মুখের মধ্যেও কালচে ভাবপ দেখা দিয়েছে। কঠিন সেই ব্যাধির কথা তাপসী ও দীপঙ্কর সহ ওদের মা বাবাকে না জানালেও চিকিৎসার জন্য আন্তরিক ও মানবিক প্রয়াস নিয়েছিলেন সমাজসেবী জুই ভট্টাচার্য, মৃন্ময়ী সংস্থার নবনীতা নন্দী পাল,পিয়ালি সরকাররা।বুধবার তাঁরা তাপসীদের বাড়িতে যান। কিন্তু তাপসী ও দীপঙ্কর এর মায়ের কঠিন ব্যাধির চিকিৎসা শুরু হলে তাপসী দীপঙ্করের কি হবে।কে প্রতিদিন তাপসী দীপঙ্করকে বাথরুমে পৌঁছে দেবে।বাথরুমের পর শৌচকর্ম কে করিয়ে দেবে এই দুই ভাইবোনকে? কেননা ওরা ওদের মা ছাড়া শৌচকর্মও করতে পারে না।বীরপাড়ার মহানুভব সমাজসেবী তথা হেভেন শেল্টার হোমের কর্নধার সাজু তালুকদার শুরুতেই খবরের ঘন্টায় ওই পরিবারের মর্মান্তিক পরিস্থিতি দেখে গোটা পরিবারটিকে হেভেন শেল্টার হোমে রাখার জন্য এগিয়ে আসেন। কিন্তু সূত্রধর পরিবার তাতে রাজি হয়নি।বুধবার জুই ভট্টাচার্য, নবনীতা নন্দীরা বিনা চিকিৎসায় তাপসীদীপঙ্করের মা-কে মরতে দিতে রাজি নন,এমন সংবেদনশীল মানবিক মুখ নিয়ে তাপসীদের বাড়িতে উপস্থিত হন।তাপসীর মা এর একটি নার্সিং হোমে স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে চিকিৎসা এবং বিভিন্ন পরীক্ষানিরীক্ষার টাকাও তারা সংগ্রহ করতে উদ্যোগী হন।খবরের ঘন্টার তরফে সাংবাদিক বাপি ঘোষ তাঁর মোবাইলে ফোন থেকে ভিডিও কলে বীরপাড়ায় সাজু তালুকদারের সঙ্গে তাপসী দীপঙ্করের কথা বলিয়ে দেন।সাজুবাবু তাদের জানান,হেভেন শেল্টার হোমে তাদের জন্য বাথরুম পায়খানা ঘরের মধ্যে আছে এমন ঘর দেওয়া হবে। শৌচকর্মের জন্য কোনো অসুবিধা হবে না,সব ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে কিন্তু তাতেও রাজি হয়নি তাপসী ও দীপঙ্কর। যদিও ওদের অসুস্থ বাবা বলেন যে তাপসী দীপঙ্কর বীরপাড়ায় চলে যাক এবং ওদের মা এর চিকিৎসা দ্রুত শুরু হোক।কিন্তু দীপঙ্কর কিছুতেই তাঁর মা-কে এক মুহুর্তের জন্য কাছ ছাড়া করতে রাজি নয়।দীপঙ্কর সকলের সামনে জানায়,তাঁর মা এর চিকিৎসা তাঁদের বাড়িতেই হোক।তাদের মা এর মৃত্যু যদি হয় তবে তাদের বাড়িতেই হোক।তাঁরা বীরপাড়ায় যাবেন না।ফলে জুঁইদেবী এবং নবনীতাদেবীরা ওদের মা এর এলোপ্যাথি চিকিৎসার মানবিক প্রয়াস থেকে পিছু হটেন।তবে ওদের মা এর যে কঠিন রোগ হয়েছে তারজন্য দ্রুত চিকিৎসা শুরু হওয়া দরকার। কিন্তু দীপঙ্কর মা’কে একমুহূর্তের জন্য ছাড়তে রাজি নয়।শেষে স্থির হয়, বাড়িতেই আয়ুর্বেদ চিকিৎসা শুরু হবে দীপঙ্কর ও তাপসীর মায়ের।
অসহায় এই সূত্রধর পরিবারের পাশে অর্থ সাহায্যের জন্য ব্যাঙ্কের ডিটেইলস হলো—
Central Bank of India
,Ghogomali Branch
Mr. Jiten Sutradhar
Chayan para,Falbazar Road
Account no: 3832328819
IFSC code : CBIN0284223
যোগাযোগের জন্য ফোন নম্বর :9434826307
বিস্তারিত জানতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন —
