ঘুড়ির মাধ্যমে এবার উত্তরবঙ্গের আকাশ দখল করছে চিন!

নিজস্ব প্রতিবেদন ঃ শীত এলে ঘুড়ি ওড়ানোর পুরনো রীতি শুরু হয় উত্তরবঙ্গের অনেক এলাকায়।কিন্তু সময়ের নিয়মে বহু কিছুর পরিবর্তন ঘটতে থাকায় ঘুড়ি ওড়ানোর জগতেও পরিবর্তন এসেছে। আর এখনো ঘুড়ি ওড়ানোর মাধ্যমে উত্তরবঙ্গের আকাশ দখল করছে চিন।
ইলেকট্রনিক্সের বিভিন্ন সরঞ্জামে এতদিন দাপট দেখাচ্ছিল চীনের বিভিন্ন কোম্পানি। চিনা বাল্বও অনেক আগেই বাজার দখল করেছে । এবার ঘুড়ি ওড়ানোর লাটাইয়েও চীনের দাপট। মালদার বিভিন্ন বাজারে এখন ঘুরছে চিনা লাটাই।
প্লাস্টিকের তৈরি একরকম চিনা লাটাই নাকি চোরাপথে নেপাল হয়ে শিলিগুড়ি হয়ে ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন জায়গায়। চিনে তৈরি এই লাটাইয়ের দাপটে এখন বেতের তৈরি লাটাইয়ের চাহিদাও কমছে বলে অভিযোগ।
শীতের মরশুম শুরু হতেই উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় আকাশে ঘুড়ি উড়ানোর প্রবণতা শুরু হয়। খোলা মাঠে অথবা বাড়ির ছাদ থেকে বিশেষত ছুটির দিনগুলিতেই ঘুড়ি উড়ায় অনেকেই। আর ঘুড়ি ওড়ানোর জন্য প্রয়োজন হয় লাটাইয়ের। এই লাটাইয়ের মাধ্যমে ঘুড়িতে সুতো পেঁচিয়ে রাখা হয়। ধীরে ধীরে সেটি সেই সুতোর মাধ্যমে ঘুরিয়ে উড়ানো হয় আকাশে। কিন্তু এবারে দেখা যাচ্ছে মালদার বাজারে প্লাস্টিক এবং ফাইবারের এক প্রকারের লাটাই দেদার বিক্রি হচ্ছে। বেতের লাটাইয়ের দামের থেকেও সস্তা আধুনিক এই লাটাই যা চিনা লাটাই বলেই বাজারে চলছে। পাশাপাশি কাগজের ঘুড়ি বন্ধ হয়ে এখন প্লাস্টিকের ঘুড়ির বিক্রির চাহিদা বেড়েছে ক্রমাগত।
মালদা শহরের দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন মার্কেট, নেতাজি পুরো মার্কেট , রবীন্দ্র এভিনিউ, নেতাজি সুভাষ রোড , মকদমপুর মার্কেট সহ বিভিন্ন এলাকায় অলিগলির দোকানগুলিতেই মিলছে চীনা মানজা দেওয়া প্লাস্টিকের ও ফাইবারের এক প্রকারের লাটাই । রীতিমতো রেডিমেড চিনা মাঞ্জা এই লাটাই গুলি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকায়। বেতের তৈরি লাটাই কিনতে গেলে যার দাম ২০০ থেকে ২৫০ টাকা পরে। অত্যন্ত সস্তা হওয়ার ফলে এই ধরনের চিনা লাটাই এখন বাজার কাপাচ্ছে । যদিও এই চিনা লাটাইয়ের সুতো থেকে অনেক দুর্ঘটনাও ঘটছে। অনেকের হাত কেটে যাচ্ছে।
মালদা মানিকচকের শেখপুরা এলাকার লাটাই প্রস্তুতকারক এমাদুল শেখ , বদিরুদ্দীন শেখদের বক্তব্য, এটি এক ধরনের কুটির শিল্প বলা যেতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে আমরা শীতের মরশুমে লাটাই বিক্রি করে থাকি। শহরের বিভিন্ন বাজারগুলিতে এবছর সেই বিক্রির চাহিদা অনেকটাই কমে গিয়েছে। প্লাস্টিক ও ফাইবারের এইসব লাটাই কোথা থেকে আসছে, সেটা আমরা বুঝে উঠতে পারছি না। এব্যাপারে প্রশাসনকে অন্তত তদারকি করে দেখা উচিত।