শিশু সন্তানকে বুকের দুধ দিলে মায়েরও উপকার হয়

নিজস্ব প্রতিবেদন,শিলিগুড়িঃ পয়লা আগস্ট থেকে শুরু হতে চলেছে বিশ্ব মাতৃ দুগ্ধ সপ্তাহ।গোটা দেশের সঙ্গে উত্তরবঙ্গেও এনিয়ে নানান কর্মসূচি শুরু হতে চলেছে। শিলিগুড়ি জংশন পাতি কলোনি এলাকায় এ বিষয়ে মায়েদের নিয়ে সচেতনতার অনুষ্ঠান করতে চলেছে ব্রেস্ট ফিডিং প্রমোশন নেটওয়ার্ক অফ ইন্ডিয়া। এর তরফে ডাঃ সুবল দত্ত সারা বছর ধরেই মাতৃ দুগ্ধ নিয়ে প্রচার করেন।এই সময়ে তা আরও বেশি করে করবেন ।
ডাঃ সুবল দত্ত বলছেন,শিশু সন্তানকে মা বুকের দুধ পান করালে এক) শিশুর শরীরে রোগ প্রতিরোধক শক্তি বৃদ্ধি পায়। অপুষ্টির কারনে শিশুর শরীরে যেসব রোগ বাসা বাধে তা প্রতিহত করা যায়।সর্দি,কাশি,হাঁপানি, নিমুনিয়া,ব্রঙ্কাইটিসের মতো রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে মায়ের বুকের দুধ।দুই) ডেঙ্গু,জাপানি এনকেফলাইটিস সহ অন্য অনেক ভাইরাসঘটিত রোগ ঠেকাতে পরোখভাবে সহযোগিতা করে মায়ের দুধ।তিন) মায়ের দুধ শিশুর হার্ট ভাল রাখে। শিশুর ওজন বৃদ্ধি করে। শিশুর বুদ্ধি এতে ভালো হয়।
মায়ের দুধে রয়েছে সিস্টিন,টরউইন,আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি আ্যাসিড,গ্যালাক্টোজ সেরিব্রোসাইড।এসব উপাদান শিশুর মস্তিষ্ককে মজবুত করে।ভবিষ্যতে শিশুর বুদ্ধিমত্তা এতে ভালো হয়।ছমাস পর্যন্ত শিশুকে মায়ের দুধ দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে তারা ছমাসের মাথায় অন্নপ্রাশন দেওয়ার কথা বলছেন বলে ডাক্তার দত্ত জানান।ছমাস বয়সে একটু শক্ত খাবার দিতে বললেও বুকের দুধ কিন্তু দুবছর পর্যন্ত চলবে।শিশুকে নিয়মিত বুকের দুধ পান করালে তা পরিবার পরিকল্পনাতেও সহায়তা করে।এটি জন্ম নিরোধেও অনেকটা সহায়তা করে। নিয়মিত বুকের দুধ পান করালে মায়ের স্তন,জরায়ুর ক্যান্সার প্রতিরোধে অনেকটা সহায়তা করে। দূষনজনিত এলার্জির কারনে শিশুর সমস্যা হলে মায়ের দুধের আই জি ই তা ঠেকাতে সাহায্য করে। দুরারোগ্য ব্যাধি ঠেকাতে মায়ের দুধের আই জি এম সহায়তা করে।আবার আই জি এ পেটের রোগ ঠেকাতে প্রতিরোধক শক্তি বাড়িয়ে তোলে।অনেক মায়ের ধারনা আছে,বুকের দুধ দিলে নিজের স্লিম ফিগার থাকবে না,এ ধারনাও ভুল বরঞ্চ বলা যায় ফিগার আরও ভালো হয়।শিশুকে বুকের দুধ দিলে মা ও শিশুর মধ্যে একটা একাত্মবোধ তৈরি হয়।সবচেয়ে বড় কথা,ভবিষ্যতে দেশকে বুদ্ধিমান সব নাগরিক উপহার দিতে হলে মায়ের দুধের বিকল্প নেই।অন্যদিকে যারা শিশুকে বুকের দুধ না দিয়ে কৌটার দুধ দিচ্ছেন তারা বিরাট সর্বনাশ করছেন শিশুর। যেসব মায়েরা বলেন তার বুকের দুধ নেই তারাও ভুল ভাবছেন ।একটি ঘরে শিশুকে নিয়ে মা যদি এক মনে এক ধ্যানে শিশুকে দুধ পান করানোর সুচিন্তায় মাতেন তবে শিশু অবশ্যই দুধ পাবে।আর যারা পিছিয়ে পড়া তারা ডালভাতসবুজশাকসব্জি নিয়মিত খেলেই দুধ পান করানোর কোনও সমস্যা হবে না।আর ডাক্তার দত্ত মাতৃ দুগ্ধের প্রচার আন্দোলন জোরদার করতে তার চার্চ রোডের চেম্বারে পরিস্কার বলে দিচ্ছেন, যারা শিশুকে কৌটার দুধ দেন সেইসব শিশুকে নিয়ে তার চেম্বারে অভিভাবকদের প্রবেশ নিষেধ ।এই কড়া মনোভাবের জেরে কৌটা কোম্পানিগুলো অসন্তুষ্ট হলেও ডাক্তার দত্ত তার সিদ্ধান্তে অনড়।