
নিজস্ব প্রতিবেদন ঃবৃদ্ধ বাবার ওপরই চলতো সংসার। কিন্তু হঠাৎ এক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ঘরে বসে পড়েন বৃদ্ধ বাবা।সংসারে নেমে আসে কষ্ট। কলেজ ছাত্র প্রতীক পাল দিনরাত ভাবতে থাকেন,কিভাবে তাঁর বাবার কষ্ট লাঘব করা যায়। কিভাবে তাঁর বাবা আবার সামান্য হলেও রোজগার করতে পারেন।ভাবতে ভাবতেই সেই বৃদ্ধ বাবার সন্তান এক অভিনব কায়দায় বের করে ফেলেন এক সাইকেল।সেই সাইকেলই এখন সেই বৃদ্ধের সঙ্গী। আর হা,এই সাইকেলে ভর করে তিনি সংসারে কিছু রোজগারও এনে দিতে পারছেন।
অসুস্থ বাবার জন্য ব্যাটারি চালিত সাইকেল তৈরি করে চমকে দিলেন ছেলে।নিজে কলা বিভাগের ছাত্র প্রতীক পাল। কিন্তু ছোট থেকেই কারিগরির বিষয়ে দারুণ ঝোঁক তাঁর ।আর ওই কারিগরি বুদ্ধিকে কাজে লাগিয়েই অভিনব সেই সাইকেল তৈরি করে ফেলেছেন প্রতিক ।আলিপুরদুয়ার ১নম্বর ব্লকের আলিপুরদুয়ার জংশন লাগোয়া চেচাখাতার প্রবীণ বাসিন্দা রঞ্জিত কুমার পাল। ২০১৮ সালে পথ দুর্ঘটনায় তিনি মারাত্মক ভাবে জখম হন।ভেঙে যায় পা, চোট পান কোমড়ে। দেড় বছর বিছানায় পড়ে থাকেন।তিনিই পরিবারের একমাত্র উপার্জনশীল ব্যক্তি হওয়ায় অনটন বাড়তে শুরু করে সংসারে।তাতে কলেজের পাঠ চোকাতে হয় ছেলে প্রতিককে।দীর্ঘ সময়ের পর খানিক সুস্থ হয়ে উঠলেও চলাফেরার ক্ষমতা প্রায় হারিয়ে ফলেন বাহাত্তর বছরের হার্ডওয়্যার ব্যবসায়ী রঞ্জিত বাবুু।বাড়ি থেকে তিন কিলোমিটার দূরের নিজস্ব দোকানে পৌঁছতে গিয়ে নাকাল হচ্ছিলেন ওই বৃদ্ধ।বাবার ওই অসহায়তা দেখে, নিজের বুদ্ধিতেই ব্যাটারির সাহায্যে মোটর চালিত সাইকেল গড়ার মতলব আঁটেন ছেলে ।প্রায় সামান্য খরচে তৈরি হয় ওই সাইকেল।তাতে প্যাডেল মারার ব্যবস্থা থাকলেও,সাইকেলে চেপে একবার এক্সিলেটর ঘোরালেই বনবন করে ছুটতে শুরু করে ওই আজব সাইকেল।যার ঘন্টায় সর্বোচ্চ গতিবেগ পঁচিশ কিলোমিটার আর একনাগাড়ে ছুটতে পারে ত্রিশ কিলোমিটার পর্যন্ত।ছেলের তৈরি করা ওই সাইকেলে চেপেই প্রায় বিনা কষ্টে এখন দিনভর চক্কর কাটেন বৃদ্ধ বাবা।ব্যবসার জায়গায় যাওয়া আসা থেকে নিত্যদিনের কাজের সঙ্গী স্বয়ংক্রিয় ওই সাইকেলই এখন প্রিয় বাহন হয়ে উঠেছে রঞ্জিত বাবুর।আর বাবাকে কষ্ট থেকে খানিক মুক্তি দিতে পেরে অনেকটাই নিশ্চিন্ত ছেলে প্রতিক।
