আলো নেই, শৌচাগার নেই — শহরের বুকে কুপির আলোয় এ আরেক সূত্রধর পরিবারের মর্মান্তিক পরিবেশ

নিজস্ব প্রতিবেদন ঃ  ক’দিন আগেই খবরের ঘন্টায় ঘোঘোমালি ফল বাজার রোড নিবাসী জিতেন সূত্রধরের বাড়িতে বিদ্যুৎ না থাকার খবর পোস্ট হয়।লন্ঠন আর কুপির আলোয় ওই পরিবারের রাত কাটানোর খবর প্রচারিত হলে এসজেডিএর বোর্ড সদস্য তথা সমাজসেবী গৌতম গোস্বামীর নজরে আসে বিষয়টি।এরপর সেই বাড়িতে আলো জ্বালানোর প্রয়াস নেওয়া শুরু হয় গৌতমবাবুর উদ্যোগে।কিন্তু ওই ফলবাজার রোডের কাছেই ঘোঘোমালি বাজারের মধ্যেই আরও এক হতদরিদ্র সূত্রধর পরিবারের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে যে বাড়িতে লন্ঠনও নেই। কুপির আলোয় রাত কাটায় সেই পরিবারের সদস্যরা।পরিবারের এক ছেলে কুপির আলোয় উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে সূর্যসেন কলেজে ভর্তি হয়।কিন্তু তারপর মাঝরাস্তাতেই পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায় আর্থিক কারনে।
এই সূত্রধর পরিবারের প্রধান অনন্ত সূত্রধর কিছু দিন আগে মারা গিয়েছেন।পরিবারের প্রধান এখন অনন্ত সূত্রধরের স্ত্রী সন্ধ্যা সূত্রধর।
কাঠের প্লাঙ্কিং এবং বাঁশের বেড়া দেওয়া ভাঙাচোরা সেই ঘর জোড়াপানি নদীর ধারে। সে ঘরের একপাশে পাঠার মাংসের দোকান,আরেকপাশে মুরগির মাংসের দোকান, তার গায়েই আবার সুটকি মাছের দোকান এবং অন্যান্য মাছের বাজার।বর্ষা হলেই নদী ফুঁসে ওঠে। আর সেই সূত্র ধর পরিবারের ঘরে জল প্রবেশ করে। সে পরিবারের বিদ্যুৎ সংযোগের বন্দোবস্ত হয়েও হয়নি। কেন হয়নি,তা এক রহস্যময়।সন্ধ্যা নামলেই সন্ধ্যাদেবী নিজেদের হাতে বসানো ছোট্ট কালী মায়ের ভরসায় কুপি জ্বালিয়ে ঘরে রাত কাটান। আর সন্ধ্যা নামলেই মশার কামড়ে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে গোটা পরিবার। এভাবে দিনের পর দিন শহরে মধ্যে কেও বেঁচে থাকতে পারে? গোটা পরিবার একের পর এক নানা প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করে ক্লান্ত। তাঁরা বিদ্যুৎ চান।পরিবারের সদস্যা রিয়া সূত্রধর বলেন, চারদিকের মাছমাংসের বর্জ্য তাদের ঘরের দিকে ফেলা হয়। তাঁরা কি মানুষ নন? প্রসঙ্গত এ বাড়িরই এক মেয়ে রাধা ওরফে রিনি সূত্রধর মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় কলকাতার আলিপুরে উদ্ধার হয়েছে। সে মেয়ে এখন কলকাতার ঈশ্বর সঙ্কল্প হোমে রয়েছে।
কুপির আলো,মশার কামড়,বর্ষায় নদীর তেজ,মাছমাংসের বর্জ্য নিয়ে আর কতদিন এই সভ্য যুগে সময় অতিবাহিত করবে এই পরিবার? সন্ধ্যা সূত্রধর বলেন,তার বড় পুত্র একমাত্র রোজগার করে।তার রোজগারে কোনোমতে সংসার চলে।দুবেলা নুন ভাত জুটলেও কুপির আলো, মশার দাপাদাপি, নদীর জল,চারদিকের বর্জ্য এবং ভাঙা শৌচাগার নিয়ে কতদিন সুস্থ থাকা যায়?

বিস্তারিত জানতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন —-