
নিজস্ব প্রতিবেদন ঃ প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সংস্পর্শে তিনি দু’বার এসেছেন। ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে অনুষ্ঠানে গিয়ে তিনি জনগনমন এবং বন্দেমাতরম গান গেয়েছেন। তখন তিনি মাত্র চৌদ্দ পনের বছরের কিশোরী, তাঁর মা প্রয়াত কংগ্রেস নেত্রী রাজকুমারীদেবীর সূত্রেই তাঁর ইন্দিরা গান্ধীর সংস্পর্শে আসা।দু-দুবার ইন্দিরা গান্ধী তাদের রায় বেরেলির বাড়িতে এসেছেন, একসঙ্গে এক টেবিলে বসে খাওয়াদাওয়া সেরেছেন। শুধু ইন্দিরা গান্ধী কেন, পরবর্তীতে প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ীর সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছেন।আর প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এল কে আডবানি তাঁকে একেবারে নামে চিনতেন।এল কে আডবানি,ডঃ মুরলী মনোহর যোশীর সঙ্গে তিনি কয়েকবার তিনবিঘা সীমান্ত সফর করেছেন। ডঃ মুরলী মনোহর যোশী তাঁর শিলিগুড়ি হাকিমপাড়ার বাড়িতে এসে খাবারও খেয়ে গিয়েছেন।আবার প্রয়াত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুষমা স্বরাজ শিলিগুড়ি এলে তাঁর বাড়িতেই রাত্রি বাস করেছেন।প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী উমা ভারতীর সঙ্গে তিনি শিলিগুড়িতে এক হোটেলে এক রুমে রাত কাটিয়েছেন। তিনি একসময় বিজেপির রাজ্য সম্পাদকও ছিলেন।দার্জিলিং লোকসভা এবং শিলিগুড়ি বিধান সভাতে বিজেপির টিকিটে কয়েকবার প্রার্থীও হন।যদিও জয়ী হতে পারেননি।তবে রাজনীতিতে অনেক ঠেলাঠেলি গুঁতোগুঁতি থাকলেও কখনো আদর্শ বা সততা থেকে সরে আসেননি। অতীতে আজকের দিনের মতো রাজনীতে এমন পাগলামি ছিলো না বলেও তিনি মন্তব্য করেন। এখন এই ৮২ বছর বয়সে সক্রিয় রাজনীতি থেকে অনেক দূরে শিলিগুড়ি হাকিমপাড়া নিবাসী ডাঃ গীতা চ্যাটার্জী।তবে সংবাদপত্র পড়ে,অনলাইনে কিছু কাজ করে এবং পরিবারের সঙ্গে সময় দিয়ে তিনি এখন দিব্যি পার করছেন।রাজনৈতিক সততা বা মূল্যবোধ প্রসঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা স্মরন করিয়ে দেন।বলেন,তাঁর বাবা প্রয়াত চন্দ্রমোহনলাল ভাটনগর ছিলেন ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টরট অফিসের সেক্রেটারি। উত্তরপ্রদেশের রায়বেরেলিতে তাদের পৈতৃক বাড়ি। তাঁর মা রাজকুমারীদেবী ছিলেন কট্টর কংগ্রেস কর্মী এবং সমাজসেবী। আদর্শের জন্য তাঁর মা রাজনীতি করতেন।রাজনীতিতে নাম লেখানোর আগে তাঁর বাবা তাঁর মা-কে একটিই শর্ত দিয়েছিলেন,তা হলো—কখনোই এম এল এ বা অন্য কোনো ভোটে প্রার্থী হওয়া চলবে না। দলটা করা আদর্শ বা দেশ সেবার জন্য, ভোটে টিকিট পাওয়ার জন্য নয়। তাঁর মা সারা জীবন তাই করেছিলেন।অন্য প্রার্থীদের জেতানোর জন্য তাঁর মা দিনরাত পরিশ্রম করতেন কিন্তু নিজে কখনো প্রার্থী হননি। এমনকি বিরোধী সব দল তাঁর মা এর আদর্শ বা কাজ দেখে সবাই একযোগে আবেদন জানিয়েছিলেন, আপনি ভোটে প্রার্থী হলে কেও বিরোধী আসনে লড়াই করবে না।সবাই আপনাকে ওয়াকওভার দিচ্ছেন। কিন্তু না,তারপরও তাঁর মা রাজকুমারী দেবী প্রার্থী হননি।আজকের রাজনীতিতে এমন ব্যক্তিত্ব কোথায়? মা বাবার আদর্শ দেখে এবং দেশের সর্বোচ্চ রাজনীতির অলিন্দে ঘোরাফেরা করেও তিনি কখনো ব্যক্তিগত সুবিধা নেননি। তাই এই বার্ধক্যে পৌঁছে কেও তাঁর খবর না নিলেও তাঁর কোনো যায় আসে না।দিব্যি সময় পার করে দিচ্ছেন তিনি। অন্য দলে যোগদান করার নানা অফার এবং প্রলোভন পেলেও হাসি মুখে সব অফার ফিরিয়ে দিয়েছেন।

বিস্তারিত জানতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন ——