আমই সেখানে ১৭ প্রজাতির, বাড়ির ছাদে সবুজ নিয়ে যেন অন্যরকম আল্পনায় আল্পনা দাস

নিজস্ব প্রতিবেদন ঃ  গাছেরা অসুস্থ হলে এই গৃহবধূ কষ্ট পান।দিনে দুবার গাছেদের সঙ্গে দেখা না হলে তিনি কষ্ট পান।
গাছেদের মধ্যে আম সেখানে মহারাজার স্থানে।এখনতো বাজারে আমের ছড়াছড়ি। কিন্তু এই ছাদে ১৭ প্রজাতির আম গাছের ফলন হচ্ছে স্রেফ টবের মধ্যে। আম,কাঠাল,কামরাঙা,বেদানা,আপেল,মোসাম্বি,কলা,কুল,
সবেদা,কমলালেবু, জামরুল সহ আরও বহু ফল গাছেদের কাছে তিনি যেন এক গাছ-মা। নাম তাঁর আল্পনা। আল্পনা দাস।কিন্তু বাড়ির ছাদে বহু রকমের গাছ দিয়ে তিনি যেন সবুজের এক অন্যরকম আল্পনা দিয়েছেন।
একটা সময় এই কুড়ি পঁচিশ বছর আগেও শিলিগুড়ি শহরে প্রায় সব বাড়িতেই ছিলো আম,জাম,কাঁঠাল,পেয়ারা, লিচু,কুল,কলার মতো গাছ। সবার বাড়িতে গাছ থাকায় তখন পরিবেশ ছিলো সতেজ। আজকের দিনের মতো এত রোগ ব্যাধি ছিলো না। কিন্তু সবুজ ধ্বংস করে কংক্রিটের জঙ্গল তৈরি থাকায় শহর থেকে হারিয়ে গিয়েছে সেই সব গাছে।সবুজবিহীন শহরে আর তেমন দেখা যায় না পাখিদের মেলা। গরমে হাসফাঁস করছে মানুষ। ঘরে ঘরে বেড়েছে রোগব্যাধি।কিন্তু এরমধ্যেও এমন কিছু মানুষ আছেন যাঁরা ব্যতিক্রমী কিছু কাজ করতে ভালোবাসেন।তাদের কাজে যেন প্রান জেগে ওঠে নতুন উদ্দীপনায়।এমন-ই একজন ব্যতিক্রমী মানুষ হলেন শিলিগুড়ি হাকিমপাড়া নিবাসী আল্পনা দাস। বিবেকানন্দ হাইস্কুলের পাশে এই গৃহবধূর বাড়ি।কিন্তু সদিচ্ছা থাকলেই উপায় হয়।বাড়ির ছাদকেও যে সুন্দর এক জঙ্গলে পরিনত করা যায় তার আদর্শ উদাহরণ তৈরি করেছেন আল্পনাদেবী।স্বামী পুত্র সংসার সামলে তিনি এক গুচ্ছ গাছকে নিজের সন্তান হিসাবে লালনপালন করে চলেছেন। আম জাম কাঁঠাল থেকে সবেদা,ড্রাগন ফল,বেদানা,কমলালেবু সহ কি নেই সেই তালিকায়।সকাল বিকাল মিলিয়ে তিন চার ঘন্টা সময় চলে যায় তাঁর এই গাছেদের পিছনে। আর পাখির কিচিরমিচিরতো লেগেই রয়েছে। ফল খেতে দুবেলাই নানান পাখি সেখানে আসছে।আর ব্যতিক্রমী এবং উল্লেখ করার মতো তথ্য হলো গাছেদের জলে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি জৈব সারও খেতে দিচ্ছেন। টবের মধ্যে নিয়মিত তিনি জৈব সার দেন গাছেদের। আর সেই জৈব সার তিনি নিজেই তৈরি করেন।ফেলে দেওয়া বিভিন্ন সব্জির খোসা,ডিমের খোসা দিয়ে আল্পনাদেবী নিজে হাতেই গাছেদের খাবার জৈব সার তৈরি করেন।আর যত ফল হয়,কোনোটাই বিক্রি করেন না।নিজেরা এবং প্রতিবেশীদের মধ্যে এমনিই বিলি করে দেন সব ফল।উত্তরবঙ্গ পুস্প প্রদর্শনী থেকেও পুরস্কার জিতে আনছেন তিনি।গাছেদের পিছনে সময় দেওয়া এবং পরিশ্রমকে তিনি পরিশ্রমই মনে করেন না।বরঞ্চ এতে তাঁর মন ফুরফুরে থাকে। শাশুড়ি মায়ের এই ব্যতিক্রমী কাজে বেশ খুশি এবং গর্বও অনুভব করেন পুত্র বধূ অমিতাশ্রী দাস।
সবুজে সবুজে প্রানের ফোয়ারা তৈরি করা এই ছাদ বাগানের স্রষ্টা আল্পনাদেবী কি বলছেন চলুন শোনা যাক।

বিস্তারিত জানতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন —–