বাজির বিরুদ্ধে ব্যাপক পুলিশি অভিযান, বাজি ব্যবহার না করার আবেদন চিকিৎসক ও পরিবেশপ্রেমীদের

নিজস্ব প্রতিবেদনঃ এবছর করোনা পরিস্থিতিতে সমস্ত রকম বাজি ব্যবহার নিষিদ্ধ হয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টও বাজির ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। তারপরও কিছু কিছু ক্ষেত্রে পাড়ার অলিগলিতে বাজি ব্যবহার করার অভিযোগ উঠছে। আর পুলিশও সেই অনুযায়ী বাজির বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা গ্রহনের কাজে নেমেছে। শুরু হয়েছে ধরপাকড় অভিযান। শুক্রবার শিলিগুড়ি থানার পানিট্যাঙ্কি পুলিশ ফাঁড়ি প্রচুর বাজি আটক করেছে। তার সঙ্গে মাদকও উদ্ধার করেছেন সেখানকার পুলিশ কর্মীরা। দুদিন আগে ভক্তিনগর থানার পুলিশ ইসকন রোডে হানা দিয়ে লক্ষ টাকার বাজি আটক করে। গ্রেপ্তার করা হয় একজনকে। এনজেপি থানার পুলিশ সাউথ কলোনিতে হানা দিয়ে প্রচুর টাকার বেআইনি বাজি আটক করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, কেও বাজি ব্যবহার করছে কিনা সে বিষয়ে তারা নজরদারি শুরু করেছেন। শনিবারও নজরদারি চলবে। কাওকে বাজি ফাটাতে বা বিক্রি করতে দেখলে পুলিশ গ্রেপ্তার করবে। শিলিগুড়িতে বাজি নিয়ে কারও অভিযোগ থাকলে শিলিগুড়ি থানার নম্বর ০৩৫৩-২৬৬২১০১/২৬৬২২১০ নম্বরে অভিযোগ জানাতে পারেন।

এদিকে বাজির বিরুদ্ধে চিকিৎসক, পরিবেশবিদ, শিলিগুড়ি ফাইট করোনা সকলের সচেতনতা বিষয়ক প্রচার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। শিলিগুড়ি সেভক রোডের আনন্দলোক মাল্টি স্পেশালিটি হাসপাতালের বিশিষ্ট বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ( চেস্ট স্পেশালিষ্ট) ডাঃ ইন্দ্রনাথ ঘোষ বলেছেন, বাজির ধোঁয়ার মধ্যে যেসব পদার্থ রয়েছে তা অত্যন্ত ক্ষতিকর পরিবেশের জন্য। মানুষের ফুসফুসের বিরাট সমস্যা তৈরি করে বাজির ধোঁয়া। এবছর করোনা চলতে থাকায় তাই আরও বেশি করে সচেতন হওয়া প্রয়োজন। যাদের ক্রনিক শ্বাস সংক্রান্ত সমস্যা রয়েছে তাদের জন্যতো আরও বিপজ্জনক। তাই এবছর বাজিবিহীন উৎসব পালনের আবেদন জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডাঃ ইন্দ্রনাথ ঘোষ। করোনা পরিস্থিতিতে বাজির ধোঁয়া যে বিরাট বিপদ ডেকে আনতে পারে সে বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন আনন্দলোক মাল্টি স্পেশালিটি হাসপাতালের বিশিষ্ট নেফ্রোলজিস্ট ডাঃ অভিনব দেবনাথও। এদিকে শিলিগুড়ির বিশিষ্ট সমাজসেবী, পরিবেশবিদ এবং আইনজীবী জ্যোৎস্না আগরওয়ালাও বাজির বিরুদ্ধে সকলকে বারবার সতর্ক করছেন। জ্যেৎস্নাদেবী বলেছেন, দীপাবলি হোক আলোর উৎসব , বাজির নয়। শিলিগুড়ি ফাইট করোনা থেকে সমাজসেবী কৌস্তভ দত্তও খবরের ঘন্টার মাধ্যমে সকলকে বাজি বন্ধ করার জন্য এগিয়ে আসার আবেদন করেছেন। বৃহত্তর শিলিগুড়ি খুচরা ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব রায়মুহুরি এবং হায়দরপাড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার পালও বাজি ব্যবহার না করার পক্ষে মতামত দিয়েছেন। তবে তাঁরা জানিয়েছেন, বাজি বন্ধের সিদ্ধান্ত আরও আগে নিলে ভালো হোত। কিন্তু ক্ষুদ্র ও খুচরা ব্যবসায়ীরা এতে যে ক্ষতির মধ্যে পড়লেন তার জন্য তাদেরকে সরকারিভাবে অনুদান দেওয়ার আবেদনও করেছেন তাঁরা।