চোখের জলে বিদায় বিশিষ্ট চিত্র সাংবাদিক বিশ্বরুপ বসাককে

নিজস্ব প্রতিবেদন ঃ মুখে থাকতো এক গাল হাস, কথা ছিল মিস্টি আর নেশা পড়ে থাকতো ক্যামেরার লেন্সে। সেই বিশিষ্ট চিত্র সাংবাদিক বিশ্বরুপ বসাককে চোখের জলে বিদায় জানালেন শিলিগুড়ির সাংবাদিকরা।তাদের সঙ্গে রাজনৈতিক দলের নেতানেত্রীরা এবং অন্য সাধারণ মানুষ বৃহস্পতিবার দুপুরে শেষ শ্রদ্ধা জানালেন সকলের প্রিয় বিশ্বরূপ ওরফে বুমকে। এদিন কিরনচন্দ্র শ্মশানঘাটে তাঁর শেষ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তার আগে শিলিগুড়ি জার্নালিস্টস ক্লাবে শেষ শ্রদ্ধা অনুষ্ঠান হয়।

বুধবার বিকেলে বিশ্বরূপ তার বন্ধুদের সঙ্গে গাড়ি চেপে গিয়েছিলেন গাজলডোবায়। সেখানে একটি পিকনিক স্পট দেখে, তার ছবি তুলে বাড়ি ফিরছিলেন তারা।আমবাড়ি আসতেই তাদের গাড়ি দাড়িয়ে যায় লেবেল ক্রসিংয়ে।রেল গেট বন্ধ, অনেকটা দূর থেকে তখন প্রায় নব্বই কিলোমিটার বেগে ঝড়ের গতিতে ছুটে আসছে অসমগামী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। এনজেপি থেকে সেই ট্রেন যাচ্ছে অসমের দিকে। ট্রেন আসতে দেরি হবে ভেবে বিশ্বরুপ ও তার বন্ধুরা গাড়ি থেকে নেমে রেল লাইন টপকে এপারে এসে মিস্টি খেয়ে আবার রেললাইন টপকে ওপারে গিয়ে দ্রুত গাড়িতে ওঠার কথা ভাবতে থাকে। তারা ভাবতে থাকেন, তাদের গাড়ি রেল গেটের সামনে। ফলে তাদের গাড়ির জন্য পিছনে আটকে থাকা গাড়ি ইত্যাদির জন্য যানজট হতে পারে। সেই যানজট থেকে চিৎকার চেঁচামেচি হতে পারে। তারা তখন দ্রুত রেল লাইন টপকে এপার থেকে ওপারে নিজেদের গাড়ির দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালাতে থাকেন। ট্রেন তখন ঝড়ের গতিতে এগিয়ে আসছে। একে একে সবাই পার হলেও বিশ্বরূপ কিছুটা পিছনে। প্রত্যক্ষদর্শীরা দূর থেকে বিশ্বরুপকে ট্রেন লাইন টপকাতে নিষেধ করেন। কিন্তু বিশ্বরুপ হয়ত ভেবেছিলেন, সময়মতো টপকে যাবেন। কিন্তু শেষমেষ সম্ভবত ট্রেনের ইঞ্জিনের সামনে থাকা কোনও জিনিসে ধাক্কা খেয়ে বিশ্বরুপ ছিটকে গিয়ে লাইনের ধারে গিয়ে পড়েন। আর ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। সম্ভবত তাঁর মাথা, কোমড় এবং পায়ে গুরুতর চোট ছিল। এই মর্মান্তিক মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ শিলিগুড়ির সাংবাদিক মহল। শিলিগুড়ি জার্নালিস্টস ক্লাবের সভাপতি প্রমোদ গিরি, সাধারণ সম্পাদক অংশুমান চক্রবর্তী সহ অন্য সব সাংবাদিক শোকার্ত। তাঁরা সকলেই বিশ্বরুপের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেছেন।