
নিজস্ব সংবাদদাতাঃ গানের আসরে টিভির পর্দা মাতিয়ে সাড়ে চার মাস পর মালদায় ফিরলো শিশু শিল্পী রাফা ইয়াসমিন । বহুল প্রচলিত একটি টিভি চ্যানেলের গানের প্রতিযোগিতায় টপ টেনে স্থান পেয়েছে মালদার রাফা ইয়াসমিন। দীর্ঘ সাড়ে চার মাস মুম্বাই থেকে প্রশংসা কুড়িয়েছে খ্যাতনামা সঙ্গীতশিল্পীদের কাছ থেকে। যাদের মধ্যে রয়েছেন শংকর মহাদেভান, উদিত নারায়ান, টনি কাক্কারের মতন নামজাদা বাদ্যকার এবং গায়কেরা। দীর্ঘদিন পর মালদায় নিজের বাড়িতে ফিরে শহরবাসীর কাছে তার সাফল্যের কথা তুলে ধরতেই রাস্তায় নেমে শোভাযাত্রার মাধ্যমে প্রচার সারল রাফা ইয়াসমিন ও তার পরিবারের লোকেরা।

বুধবার দুপুরে মালদা শহরে রাস্তায় ব্যান্ড পার্টি নিয়ে রাফা ইয়াসমিনকে শোভাযাত্রায় যেতে দেখে রীতিমতো উদ্দীপনা বেড়ে যায় শহরের পথচারী মানুষের মধ্যে । রাস্তার দুই ধারে দাঁড়িয়ে গায়িকা রাফা ইয়াসমিনকে তাক লাগিয়ে দেখেন বহু মানুষ। স্টার প্লাসের চ্যানেলে “তারে জামিন পার” গানের প্রতিযোগিতায় গোটা দেশের মধ্যে ১০ জনের মধ্যে অন্যতম স্থান করেছে রাফা ইয়াসমিন। গোটা দেশের বাছাই করা কুড়িজন শিশু গায়ক-গায়িকা প্রতিযোগীদের মধ্যেই ছিল অন্যতম রাফা। এবারে স্টার প্লাস চ্যানেলের মাধ্যমে হংকংয়ের গানের আসর জমাতে চলেছে সে।
উল্লেখ্য, মালদা শহরের মীরচক এলাকার বাসিন্দা রাজ্জাক হোসেনের একমাত্র মেয়ে রাফা ইয়াসমিন। পেশায় ব্যবসায়ী রাজ্জাক হোসেনের স্ত্রী তানিয়া ইয়াসমিন। তাঁদের মেয়ে রাফা ইয়াসমিন ছোট থেকেই গানের প্রতিভা সম্পন্ন এমনটাই দাবি এলাকার মানুষদের। বর্তমানে রাফা সপ্তম শ্রেণীতে মালদা শহরের একটি বেসরকারি স্কুলে পাঠরত। সাড়ে চার মাস মুম্বাই থাকলেও অনলাইনের মধ্যে মাধ্যমে পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছে সে। তবে রাফার সাথে সাড়ে চার মাস ধরে মুম্বাই থেকেছেন তার মা তানিয়া ইয়াসমিন । গত সোমবার রাফাকে নিয়ে মা তানিয়া ইয়াসমিন মালদা এসেছেন। আর তারপরেই বুধবার মেয়ের এই সাফল্য পাওয়ার বিষয়টি প্রচারে তুলে ধরতেই শোভাযাত্রা বের করেন।
গায়িকা রাফা ইয়াসমিনের মা তানিয়া ইয়াসমিন বলেন, মধ্যবিত্ত ঘরের পরিবারের হয়েও আমার মেয়ে রাফা ইয়াসমিন মুম্বাই গিয়ে একটুও বিচলিত হয় নি। গোটা দেশের প্রায় ১০০ জন প্রতিযোগী থাকলেও কুড়িজন স্টার প্লাস চ্যানেলে তারে জমিন পার গানের আসরে সুযোগ পায়। তার মধ্যে আমার মেয়েও ছিল। একের পর এক প্রতিযোগীদের পিছনে ফেলে মেয়ে অনেকটাই উপরে উঠে এসেছে। প্রথম ১০ জনের মধ্যে স্থান করতে পেরেছে আমার মেয়ে। তার প্রশংসা করেছেন বিখ্যাত গায়ক উদিত নারায়ন, শঙ্কর মহাদেবনের গায়কেরা। বাদ্যকর টনি কাক্কার খুব প্রশংসা করেছেন। এরপর স্টার প্লাস চ্যানেল থেকেই মেয়ে হংকংয়ে যাচ্ছে গানের আসর মাতাতে। আমরা চাই আরও বড় হোক মেয়ে।শিশু শিল্পী রাফার বাবা রাজ্জাক হোসেন বলেন, গত ৮ সেপ্টেম্বর স্ত্রী তানিয়া ইয়াসমিনের সঙ্গে মেয়েকে মুম্বাই পাঠিয়েছিলাম স্টার প্লাস চ্যানেলে গানের আসরে যোগদানের জন্য। অক্টোবর মাস থেকেই শুরু হয় প্রতিযোগিতা । টানা সাড়ে চার মাস ধরে প্রতিযোগিতা চলেছে। বিভিন্ন বড় শিল্পীর মন জয় করতে পেরেছে আমার মেয়ে । টিভির পর্দায় দেশবাসী আমার মেয়েকে দেখেছে। এর থেকে আর প্রশংসার কিছু হয় না। রাফা মালদা তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ উজ্জ্বল করেছে। কারণ, বাংলা থেকে শুধুমাত্র আমার মেয়ে ছিলো। আগামীতে আরও বড় হোক মেয়ে এই আশা রাখি।
এদিকে রাফা ইয়াসমিন মালদায় আসার পর তাঁকে সংবর্ধনা জানাতে তৎপর ইংরেজবাজার পুরসভা কর্তৃপক্ষ। পুরসভার প্রশাসক মন্ডলীর চেয়ারপার্সন তথা বিধায়ক নিহার ঘোষ বলেন, রাফা ইয়াসমিন আমাদের মালদার সম্পদ। মুম্বাই গিয়ে ও গান করে জেলার নাম উজ্জ্বল করেছে। বহু শিল্পীদের প্রশংসা কুড়িয়েছে ছোট্ট মেয়েটি। আমরা তাকে সম্বর্ধনা জানাবো। ওকে আশীর্বাদ করব , ভবিষ্যতে যেন আরো বড় শিল্পী হয়ে উঠতে পারে।