শিলিগুড়ি গেটবাজারে বাঁশের সাহায্যে পরিবেশবান্ধব সামগ্রী

নিজস্ব প্রতিবেদন ঃ শিলিগুড়ি এনজেপি গেটবাজারের নর্থ কলোনি নিবাসী দেবাশিস কুন্ডু করোনার দুঃসময়ে পরিবেশের জন্য উপযোগী ইকো-ফ্রেন্ডলি কিছু সামগ্রী তৈরি করে নতুন এক বার্তা দেওয়া শুরু করেছেন । বাঁশ কেটে বোতল, ফ্লাস্ক, মগ সহ আরও অনেক সামগ্রী তিনি তৈরি করছেন। দক্ষিন ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে সেসব সামগ্রীর চাহিদা তৈরি হয়ে গিয়েছে।
করোনা শুরু হওয়ার আগে ক্যাটারিংয়ের ব্যবসা ছিল দেবাসিসবাবুর।তাতেই চলতো সংসার। কিন্তু করোনা লকডাউন শুরু হওয়ার পর তাঁর পুরনো ব্যবসা মুখ থুবড়ে পড়ে। তখন হঠাৎই তাঁর মাথায় আসে এক নতুন আইডিয়া। বাঁশের কিছু কাজ। ভাবনা মাত্র সামান্য কিছু বাঁশ নিয়ে কাজ শুরু করেন।প্রথমে একটি এসট্রে।তারপর ফুলদানি। তাঁর হাতের তৈরি সেই সব ছোট খাটো বাঁশের কাজ প্রতিবেশী মহলে প্রশংসা পেতে থাকে। এরপর তিনি বাঁশের মগ, বাঁশের বোতল, বাঁশের কন্টেনার, ফ্লাস্ক, ফুলদানি,টেবিল ল্যাম্প সব তৈরি করতে থাকেন।বেশ সফলতাও আসতে থাকে। তিনি আরও ভাবতে থাকেন, এমন কিছু সামগ্রী বাঁশ দিয়ে তৈরি করতে হবে যাতে কম খরচে মানুষ সেসব কিনতে পারে। প্লাস্টিকের সামগ্রী বর্জন করা এবং পরিবেশ বান্ধব কিছু সামগ্রী ব্যবহার করার ওপরই তিনি এখন প্রচার করছেন। যাতে পরিবেশকে প্লাস্টিকের দূষণ থেকে বাঁচানো যায়।
তার বক্তব্য , উত্তরবঙ্গের সম্ভাবনাময় শিল্প হলো বাঁশ। শহর এলাকা থেকে বহু তলের চাপে সবুজ বাঁশ বন হারিয়ে যেতে থাকলেও গ্রামে কিন্তু বাঁশ বন রয়েছে। সেই সব বাঁশ দিয়ে কিন্তু দূষন ঠেকাতে প্লাস্টিকের বিকল্প হিসাবে অনেক সামগ্রী তৈরি করা যেতে পারে। বাঁশ দিয়ে আরও নতুন নতুন সামগ্রী দেবাশিসবাবু আগামীদিনে বাজারে নিয়ে আসতে চলেছেন। তিনি জানান, ১৩/১৪ রকম প্রজাতির বাঁশ রয়েছে। এরমধ্যে চার পাঁচ রকম প্রজাতির বাঁশ ব্যবহার করে তিনি কাজ করছেন। বাঁশ দিয়ে তিনি তৈরি করছেন তিন রকম বোতল।বাঁশের তৈরি সাধারণ বোতলের দাম তিনি রেখেছেন ৩৫০ টাকা।আবার বাঁশের মধ্যে মেটাল দিয়ে বোতল তৈরি করছেন তাতে এক লিটার জল রাখা যায়, দাম ৬০০ টাকা। হাফ লিটারের একটি বাঁশ ফ্লাস্কের দাম তিনি রেখেছেন ৬৫০ টাকা। বাঁশের মগের দাম তাঁর কাছে ৪৫০ টাকা। প্রথমে বাঁশ সংগ্রহ, তারপর সেগুলো ঠিকমতো কেটে নিতে হয়।এরপর ঘুন পোকার সমস্যা আটকাতে বাশগুলোকে দুমাস ধরে ট্রিটমেন্ট করে নিতে হয়।ট্রিটমেন্টের পর বাঁশগুলোকে ড্রাই করে হিট দিতে হয়। তারপর স্মোক ট্রিটমেন্ট। যাতে ভবিষ্যতে সেসব বাঁশে ফাটল না ধরে। এতগুলো পদ্ধতি অবলম্বনের পর বাশগুলোকে নিয়ে শুরু হয় ওইসব সামগ্রী তৈরির কাজ।