সেবা ধর্ম ও সঙ্গীতকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে চলেছেন আর্য্যমিত্রা

শিল্পী পালিতঃঃ জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়িতে তার জন্ম। সঙ্গীত চর্চা নিয়ে বেশ এগিয়ে চলেছেন তিনি। আর্য্যমিত্রা চক্রবর্তী।আজ আত্মকথায় তার কথাই মেলে ধরা হচ্ছে।

—-আমি আর্য্যমিত্রা চক্রবর্তী। আমার জন্ম জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ির মাটিতে। শিক্ষা ও সঙ্গীতের সূত্রপাত ধূপগুড়ির মাটিতে ।তারপর শিক্ষাগত কারণে জলপাইগুড়িতে স্থানান্তরিত। পিতা শ্রী দেবাশীষ চক্রবর্তী একজন শিক্ষক, মাতা শ্রীমতী পান্না চক্রবর্তী একজন স্বাস্থ্যকর্মী। উভয়েই সরকারি চাকুরে। আমার শৈল্পিক সত্তার সৃষ্টি পরিবারের সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলেই। শৈশবে গান, আবৃত্তি ও নৃত্য একই সঙ্গে ভালোবেসে সাথে নিয়ে চলা শুরু। সেই থেকে সুর তাল ছন্দের প্রতি উৎসাহ ছিল বরাবর। আর গানের তালে তাল মিলিয়ে মঞ্চ থেকে মঞ্চ পুরস্কার আর পুরস্কার। প্রতিযোগীতামূলক অনুষ্ঠানের শেষে আমাদের দু ভাইবোনের ঝুলি ভরে উঠতো পুরস্কারে।তাই দেখে লোকে মাকে বলতেন রত্নগর্ভা, জানিনা এক অজানা ভালোলাগা , এগিয়ে যাওয়ার অদম্য ইচ্ছা আমার শিল্পী মনকে উৎসাহিত করতো। অনষ্ঠানে সকলের ভালো লাগা আমার অনুপ্রেরণা জোগাতো।
সাথে বাবা ছিলেন আবৃত্তি শিক্ষক আর মায়ের অক্লান্ত ইচ্ছে শক্তি আমার পাথেয়। স্কুলের গন্ডি পেড়িয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি দিই কলকাতায়। জয়েন্ট এন্ট্রান্স জেনপার দিয়ে Bsc. nursing course এ graduation সম্পূর্ণ করি।কলেজে পড়াকালীন
সঙ্গীতচর্চার সময়ের অভাব থাকলেও নিয়মিত কলেজের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ এবং নিজের গান লেখা ও সুর করার এক অনন্য প্রয়াস আমার মধ্যে জেগে ওঠে।
নার্সিং এর প্রবল পড়াশোনার চাপ সাথে clinical duties আমার গান গাওয়ার ইচ্ছাকে দমাতে পারেনি, যত বাধা এসেছে ততোই আমি আরো সুদৃঢ় হয়েছি আমার সংকল্পে।
তারপর চাকরি জীবনে পদার্পণ করি। প্রথমে বেসরকারি নার্সিং হোমে Staff Nurse হিসেবে যোগদান, তারপর আর একটি নার্সিং হোমে এ Sister Tutor হিসেবে যোগদান। Sister Tutor হওয়ার কিছুদিন পরেই সরকারি চাকরিতে পদার্পণ Jalpaiguri District Hospital এ, SNCU এর জরুরী বিভাগে Staff Nurse হিসেবে। বর্তমানে আমি ইন সার্ভিস CHO প্রমোশনের ট্রেনিং এ আছি। একটি বেসরকারি নার্সিং হোমে Sister Tutor হিসেবে কাজ করতে করতে নিজের শিক্ষা ও সংগীতের প্রতি অনুরাগ উজাড় করে দিই আমার ছাত্রীদের মাঝে ।
কাজের পাশাপাশি প্রথম টেলিভিশনে আত্মপ্রকাশ শিলিগুড়ির একটি বৈদ্যুতিন গণমাধ্যমে Music এ ‘প্রথম আলো’ প্রভাতী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। তারপর একাধিক বেসরকারি টিভি ও রেডিও চ্যানেলে অনুষ্ঠানের আহ্বান। উত্তরবঙ্গের সীমা ছাড়িয়ে কলকাতার টিভি চ্যানেল ‘Channel ONE’ এর অনুষ্ঠান ‘Folk Akhra’ এ অংশগ্রহণ করা। এরপর ‘দূরদর্শন জলপাইগুড়ি’ এর নিবেদিত ‘কৃতিকথা’ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করি এবং অনেক প্রশংসা অর্জন করি ও আরো উৎসাহিত হই।
আজ আমার বাবা মায়ের আনন্দাশ্রু ও তাদের সমর্থন আমাকে আরো সমৃদ্ধ করে। এগিয়ে যাওয়ার পথে পেয়েছি খুব কাছের বন্ধু সৌম্যদ্যুতি হার এর অনুপ্রেরণা, সে নিজেও একজন শিল্পী সত্তার অধিকারী। আমি কৃতজ্ঞতা জানাই সকলকে যারা আমায় এই যোগ্যতা অর্জনে অনুপ্রাণিত করেছেন।
রবীন্দ্র সংগীত, স্বর্ণযুগের আধুনিক বাংলা ও হিন্দি গান, লোকসংগীত ও আঞ্চলিক গানগুলি আমার ভীষণ প্রিয়। সেবা ধর্ম ও সংগীত, এককথায় পেশার সাথে Passion কে সমান গুরুত্ব দিয়ে এগিয়ে যাওয়াই আমার চিরকালের অনন্য প্রয়াস। আগামীতে আরো অনেক অনুষ্ঠান করার ওর নতুন কিছু গান নিয়ে কাজ করার ইচ্ছে আছে।