সঙ্গীত চর্চা করলেও নাট্য চর্চা বিশেষ নেশা মিন্টুর

শিল্পী পালিতঃ সঙ্গীত চর্চা তিনি করেন। কিন্তু নাট্য চর্চা তার নেশা। আজকের আত্মকথায় অনিল বরন গোস্বামীর কথা পড়ুন—

—আমি অনিল বরণ গোস্বামী। জন্ম বাংলাদেশের সিলেট জেলার রাজঘাট চা বাগানে। অবশ্য সকলের কাছে মিন্টু নামেই পরিচিত। প্রথম নাটক বাবার সাথে নয় বছর বয়সে, রাজা হরিশ্চন্দ্র নাটকে। আমার বাবা খুব ভাল অভিনেতা ছিলেন।
শিলিগুড়িতে প্রথম নাটকে অভিনয় অর্ধেন্দু রায় চৌধুরীর গ্রুপে।পরে অধ্যাপক শ্যামাপদ ভট্টচার্যের সাথে দুটি নাটকে অভিনয় করি।
১৯৭৭ এ অসিত ভট্টচার্যের সাথে যাত্রা শুরু।তিনি ছিলেন আমার সত্যিকার এর নাট্যগুরু। পাঁচ বছরে প্রায় দশটি নাটক যা আমার নাট্য জীবনে মোড় ঘুরিয়ে দেয়। পরে বিনায়ক দেব, প্রফেসর কালিদাস চক্রবর্তী, দেবাশীষ চক্রবর্তী, ও চন্দ্রশেখর দের পরিচালনায় বেশ কটি নাটক করি।
মাঝখানে ১৯৮৫ সালে,চাকরির প্রয়োজনে শিলিগুড়ি ছাড়তে হয়। তখন রায়গঞ্জ, মালদা, বালুরঘাট ও কলকাতাতে, বেশ ক’টি নাটক করি। পরে আবার শিলিগুড়ি ফিরে এসে নাট্যরঙ্গ (যার নাম ছিলো “রঙ্গন “ফাউন্ডার ছিলাম আমি)এ যোগ দেই ২০১২ তে।পরিচালক ব্যোমকেশ ঘোষ। ৫/৬ টি নাটক করেছি। সাজা, চিঠি ও মরা ভালো লেগেছে।
২০১৮ তে আমার উল্লেখযোগ্য নাটক” দায়বদ্ধতা “(রচনা ও পরিচালনায় অপু উকিল)। ২০১৯ এ ওরই পরিচালনায় নাটক ব্রিলিয়ান্ট করে অনেক আনন্দ পেয়েছি। ভীষণ সফল নাটক। যেটি শিলিগুড়ির নাট্যজগতে বেশ আলোচিত হয়েছিলো।
অপুর লেখা ও পরিচালনায় নাটক” দ্বৈধ”করি কলকাতা ভাঙুর এ নাট্য প্রতিযোগিতায় “।যেখানে একটি চরিত্র সম্মিলিতভাবে ২য় স্থান লাভ করে।জীবনের শ্রেষ্ঠ নাটক গুলি হল, তিতাস একটি নদীর নাম, কল্লোল ফেরারী ফৌজ, কলকাতা হ্যামলেট, প্রফেসর মামলক, সূর্য শিখর, সওদাগরের নৌকা, মারীচ সংবাদ, লৌহ কপাট, অগ্নিগর্ভ হেকিমপুর, এরাও মানুষ, আরো অনেকগুলো নাম মনে করতে পারছি না।বিভিন্ন কম্পিটিশনে শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরষ্কার পেয়েছি।অনেক স্মারক ও সন্মান পেয়েছি।
ছোটবেলা থেকেই সংগীতের চর্চাও ছিল। গানে হাতে খড়ি আমার মায়ের কাছে। পরে ছোট ভাই পিন্টু গোস্বামী। শিলিগুড়ি, রাজগঞ্জ, মালদা, কলকাতা নাগাল্যান্ড, ও শিলং এ অনেক গানের অনুষ্ঠানও করেছি। তবে শুধু রবীন্দ্র সংগীত ও নজরুল গীতি। মালদা থাকাকালীন ১৯৮৬ সালে,দিশারী পুরস্কার পাই।
পরিশেষে যেটা না বললেই না হয়, ২০১৯ এর জানুয়ারিতে একটা নতুন নাটকের গ্রুপ তৈরি করি। যেটা করতে উৎসাহিত করেছে, অপু ও শিশু নাট্যমের দ্বীপোজল চৌধুরী। ওদের সহযোগিতা ছাড়া এটা সম্ভব হতোনা।আমি সারা জীবন ওদের কাছে কৃতজ্ঞ থাকবো। এখন শুধু একটাই উদ্দেশ্য, এই গ্রুপটাকে কিভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। এটা আমার একটা চ্যালেঞ্জ। এর জন্য প্রয়োজনীয় সব কিছু করতে প্রস্তুত।খুব শিগগিরই আমরা আরেকটা চ্যালেঞ্জ নিয়ে সামনে আসছি। নাটক ছাড়াও আমার চাকরি জীবনে অনেক সফলতা পেয়েছি। দেশের প্রায় ৮ টি রাজ্যে পোস্টিং ও অনেক সম্মাননা পেয়েছি।২০০৭ এ কমেন্ডেবল সার্ভিস এর জন্য (সেন্ট্রাল গভ:) রাষ্ট্রপতি পুরস্কার পাই।আগামী দিনগুলো শুধু নাটক নিয়েই বেঁচে থাকতে চাই।