শিল্পী পালিত ঃ আজ আমাদের খবরের ঘন্টা পোর্টালের আত্মকথা বিভাগে শিলিগুড়ি বাঘাযতীন কলোনির অজিত মালোর কথা মেলে ধরা হলো —-
আমি অজিত মালো,১৯৯৪ খ্রিস্টাব্দে ১৪ আগস্ট ধুবড়ি (আসাম) জেলায় আমার জন্ম। একসময় অশান্তির জেরে আসাম ছেড়ে পিতা সুকুমার মালো আমাদের শিলিগুড়ির বাঘাযতীন কলোনিতে নিয়ে আসেন। তখন আমি প্রথম শ্রেণির ছাত্র।ছোট বেলা থেকেই ছবি আঁকা,গান করা, গান শোনা, আর একান্ত নিজের জগৎ নিয়ে আমার দিন কাটে। ঈশ্বরের আশীর্বাদে তার সৃষ্টি ও পরিকল্পনায় শিল্পের প্রতি ভালোলাগা-টা কখন যেনো ভালোবেসে ফেলেছি। আমার দাদা ছবি আঁকত, ছোটবেলায় ওর দেখাদেখি আমিও ছবি আঁকতে ভালোবাসতাম।যখন আমি নবম শ্রেণীর ছাত্র চিএশিল্পী জয়নুল আবেদিন এর বিখ্যাত অংকিত নবান্ন আঁকা পেইন্টিং আমার খুব ভালো লেগেছিল। এই ভালোলাগাটা আমাকে ভীষণ ভাবে উৎসাহিত করে। কিন্তু এর-পরের সময়টা অনেক কস্টে দিন কেটেছে। আমি সাধারণ ঘরের ছেলে ছবি আঁকা শেখার সামর্থ আমার কাছে তেমন কিছু ছিলোনা।তখন আমি আর্ট স্কুলে ছবি আঁকা নিয়ে পড়াশোনা করি চিএশিল্পী গোবিন্দ রয়-এর কাছে। তিনি সব সময় আমাকে সাহায্য করেছিলেন শিল্প শিক্ষার দিক থেকে।
অনেক জন বলেছিল ছবি এঁকে কি হবে? শিল্পী হয়ে লাভ কি?
কিন্তু আমার খুব প্রিয় মানুষ রেভারেন্ট সলীল দেওরী তিনি প্রতিটি মুহূর্তে আমাকে উৎসাহ দিয়েছেন এবং বলেছেন ঈশ্বরের সৃষ্টিকে কাজে লাগাও। এই শিল্পের প্রতি আমার ভালবাসা দিন-এর দিন বাড়তে থাকে।
ড্রইং, পেইন্টিং, কোলাজ, জলরঙ, তেলরঙ, স্কেচ, বিভিন্ন মাধ্যমে কাজ করেছি। প্রথম দিকে স্কেচ ও ড্রইং করার মনোযোগ ছিল অনেক বেশি, কখনো গড়ছি ভাঙছি আবার কখনো নতুন করে গড়ার চেস্টা করছি। আজকাল পুরোদমে শিলিগুড়ি তথা উওরবঙ্গের বিভিন্ন জায়গার দৃশ্য আমাকে নাড়া দিয়েছে আমার জলরঙের পেপার ও ক্যানভাসে। ছবিতে কোথাও শুকিয়ে যাওয়া নদীর চড়, দুরের গাছ ও পাহাড় নীল আকাশের সাথে মিশে গিয়েছে। আবার কোথাও কীটপতঙ্গ আমার জলরঙের পেপারে মিশে আছে।
নদী আমার খুব প্রিয় তাই জলের স্রোতের মতো ভেসে যেতে চাই আমার শিল্পকর্মকে নিয়ে প্রকৃতির কাছে।
অনেক ওয়ার্কশপ ও চিএ প্রদর্শনী করেছি আমার আঁকা জলছবি নিয়ে, শিলিগুড়ি, কোচবিহার, কোলকাতা, বালুরঘাট, হায়দ্রাবাদ, গুয়াহাটি (আসাম), ব্যাঙ্গালোর, ঢাকা(বাংলাদেশ) আরো অনান্য জায়গায়।
নানান জায়গার চিত্রশিল্পী এবং দর্শকেরা আমার ছবির প্রশংসা করেছেন এবং ছবিও নিয়েছেন।
ছবি আঁকার পাশাপাশি শিশুদের সাথে কাজ করা ও সহযোগিতায় হাত বাড়িয়ে দেওয়া নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি, কারন প্রকৃতি বন্ধুই শিশু। শিল্পীর পরিচয় তার কাজের মধ্যে দিয়েই, তাই চাই শুধু আপনাদের আশীর্বাদ ও ভালোবাসা।
রঙ তুলির আঁচড় দিয়ে মনের ভাব প্রকাশ করে যাবো আমার পেপার ও ক্যানভাসে।
আমার ঠিকানা ঃ বাঘাযতীন কলোনি (মুক্ত মঞ্চ) পোস্ট অফিস ; প্রধান নগর, শিলিগুড়ি।