মহিলাদেরকে শাড়ি, পুজোয় আসছে লায়ন্স ক্লাবের উপহার

নিজস্ব প্রতিবেদনঃ গতবছর আর্থিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া মানুষদের লায়ন্স ক্লাব চাল, ডাল প্রদান করেছিলো। এবারে পুজোর আগে তারা নিয়ে আসছেন উপহার। এবার তারা মহিলাদেরকে সাড়ে তিনশ টাকা দামের একটি করে নতুন শাড়ি উপহার হিসাবে দেবেন। তার সঙ্গে আরও কিছু উপহার দেওয়া হবে। মূলত আর্থিক দিক পিছিয়ে পড়া মহিলারাই এই প্রকল্পের আওতায় আসবেন বলে লায়ন্স ক্লাব ইন্টারন্যাশনালের সভাপতি লায়ন সুরেশ সিনহল জানিয়েছেন। প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ বর্জনের বার্তা নিয়ে পরিবেশবান্ধব কাপড়ের ব্যাগের মধ্যে ওইসব উপহার সাজিয়ে তা বিলি করা হবে মহিলাদের মধ্যে।

লায়ন্স ক্লাব ইন্টারন্যাশনাল ৩২২ এফ এর অধীনে মোট ১২০টি শাখা রয়েছে।উত্তরবঙ্গ,সিকিম, ভুটান মিলিয়ে কাজ এই ১২০টি শাখার। আর এই সব শাখার কো-অর্ডিনেটর বা সভাপতি হিসাবে কাজ করছেন সুরেশ সিনহল। আগামী বছর জুন মাস পর্যন্ত তিনি এই দায়িত্ব চালিয়ে যাবেন বলে আপাতত ঠিক আছে।
গতবছর লায়ন্স ক্লাব পাঁচ টাকায় ডালভাত খাওয়ানোর কর্মসূচি গ্রহন করেছিলো। তাতে ২লক্ষ৭০ হাজার মানুষকে দুপুরবেলা ডালভাত খাওয়ানো সম্ভব হয়। এবার ২০২০ সালের জুন মাস পর্যন্ত তিন লক্ষ মানুষকে ডালভাত খাওয়ানোর কর্মসূচি গ্রহন করা হয়েছে বলে সুরেশবাবু জানিয়েছেন।
সারা বছর ধরে সামাজিক ও মানবিক নানান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে লায়ন্স ক্লাবের বিভিন্ন শাখা। সেই সব কর্মসূচিরই একটি ছিলো পয়লা জুলাই চিকিৎসক দিবস ও চার্টার্ড একাউন্টস ডে-তে বিভিন্ন চিকিৎসক ও চার্টার্ড একাউনটেন্টকে সংবর্ধনা প্রদান। লায়ন্স ক্লাবেরই আর একটি কর্মসূচি শেষ হয়েছে। সেটি হলো নেত্র জ্যোতি। লায়ন্স ক্লাবের চারটে নিজস্ব চক্ষু হাসপাতাল রয়েছে।শিলিগুড়িতে দুটি, আলিপুরদুয়ারে একটি ও মালদায় একটি। এইসব হাসপাতালের মাধ্যমে সম্প্রতি সত্তর হাজার লোকের চোখ পরীক্ষা করা হয়েছে। এক মাসের মধ্যে সত্তর হাজার লোকের চোখ পরীক্ষার পাশাপাশি ৩৯০০ লোকের ছানি অপারেশন হয়েছে চল্লিশ দিনের মধ্যে।
গত জুলাই আরও দুটি কর্মসূচি গ্রহন করেন লায়ন্স ক্লাবের সদস্যরা। এরমধ্যে একটি হল, ধূপ ছাদ। গরমের জন্য বিনামূল্যে বিলি করা হয় চার হাজার ছাতা। ট্রাফিক পুলিশ ছাড়াও ডাক পিওনেরা গরমে রোদের মধ্যে কষ্টের সঙ্গে কাজ করেন।তাদেরকে দেওয়া হয় ছাতা। এর বাইরে লায়ন্স ক্লাবের মহিলা মহলও পিছিয়ে পড়া স্কুল ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বিলি করেন ছাতা। এরই সঙ্গে শুরু হয় রক্ত অর্পণ কর্মসূচি। ১২০ টি শাখা মিলে ৬০০০ ইউনিট রক্ত সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা স্থির হয়। চল্লিশ দিনের মধ্যে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ২৮০০ ইউনিট রক্ত সংগৃহীত হয়েছে ইতিমধ্যে। তরাই ব্লাড ব্যাঙ্ক, রোটারি ব্লাড ব্যাঙ্ক সহ অন্যান্য ব্লাড ব্যাঙ্কে জমা দেওয়া হচ্ছে সেই সব রক্ত। ভিন্ন ধর্মী এই সামাজিক ও মানবিক কর্মসূচি বিভিন্ন মহলে সাড়া ফেলে। সুরেশবাবু জানিয়েছেন, তাদের ১২০ টি শাখা মিলে চার হাজার সদস্য প্রতি মাসেই কিছু না কিছু ইতিবাচক সামাজিক কাজ করে চলেছে। বিগত দু-মাসে তারা ত্রিশ হাজার বৃক্ষরোপনও করেছেন। এবার আসছে পুজোর বিশেষ উপহার কর্মসূচি। মহালয়া থেকে বিজয়া দশমী পর্যন্ত চার হাজার শাড়ি বিতরন হবে। লায়ন্স ক্লাবের সব শাখা এই কাজে নামছে। মহিলাদের একেকজনকে সাড়ে তিনশ টাকা দামের নতুন শাড়ি ছাড়া কিছু উপহারও দেওয়া হবে। এরপর ১৪ নভেম্বর ডায়াবেটিক ডেকে সামনে রেখে ডায়াবেটিক পরীক্ষা, স্বাস্থ্য পরীক্ষা হবে বিভিন্ন স্থানে। সবমিলিয়ে লায়ন্স ক্লাব এর এইসব বহুমুখী মানবিক ও সামাজিক কর্মসূচি মানব কল্যানে ক্রমশই একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে।