পহেলা বৈশাখ মানে ব্যবসায়ীদের হালখাতা কিন্তু এই ব্যবসায়ীদের মন ভালো নেই, ব্যবসা মৃতপ্রায়

নিজস্ব প্রতিবেদন : পহেলা বৈশাখ মানে বাংলার জীবনে এক পরম্পরা। পয়লা বৈশাখ বাংলার জীবনে এক ঐতিহ্য। পয়লা বৈশাখ বাংলার ব্যবসায়ীদের কাছে এক যেন নতুন জোয়ার।ব্যবসায়ীরা এসময় হালখাতার উদ্দীপনায় মেতে ওঠেন। যদিও আজকাল অনলাইন, শপিং মল এবং ইংরেজি সংস্কৃতির দাপাদাপি যেন ভুলিয়ে দিতে বসেছে বাংলার চিরাচরিত পহেলা বৈশাখের ঐতিহ্য এবং হালখাতাকে। এই পরিস্থিতিতে অনেক ব্যবসায়ীর মন ভালো নেই। শিলিগুড়িতেই হিলকার্ট রোড থেকে বিধান মার্কেটে প্রবেশের মূল রাস্তায় ক্ষুদিরামপল্লী নিবাসী ব্যবসায়ীরা এ সময় যেন গালে হাত দিয়ে বসেছেন।তাদের বক্তব্য, পহেলা বৈশাখ আসছে ঠিকই। কিন্তু সেই ব্যবসা আর নেই। শুধু পহেলা বৈশাখ কেন,সারা বছরের হিসাবেও তাদের ব্যবসা আর আগের মতো নেই বলে জানালেন তাঁরা। হিলকার্ট রোড থেকে বিধান মার্কেটে প্রবেশের মূল রাস্তায় একেবারে যাকে বলে হিলকার্ট রোডের ধারে শিলিগুড়ি শহরের ঐতিহ্যমন্ডিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হলো মনোহারী বিপনি।বিভিন্ন প্রসাধনী এবং টয়লেট্রিজ স্টেশনারির এক ঐতিহ্যমন্ডিত নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান হলো মনোহারী বিপনি। শিলিগুড়ি হিলকার্ট রোডে পি এন বির বিপরীতে এই প্রতিষ্ঠানের অবস্থান। সেই প্রতিষ্ঠানের প্রধান কর্নধার তথা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ইন্দ্রনীল মুখার্জী বলেন,পহেলা বৈশাখ আসছে বটে। কিন্তু আগের মতো ব্যবসা কোথায়? অনলাইন, শপিং মলতো আছেই। তার সঙ্গে যানজট । যেখানে সেখানে টোটো দাঁড়িয়ে থাকছে।পার্কিং এর অবস্থা বিশৃঙ্খল।ফুটপাত সব দখল হয়ে আসছে।মানুষের হাঁটাহাঁটি করার রাস্তাও নেই। ফলে বিরক্ত হয়েই বহু পুরনো ক্রেতাকে তাঁরা হারিয়ে ফেলছেন। যানজট, পার্কিং এর সুবন্দোবস্ত নেই, টোটোর গাদাগাদিতে বিরক্ত হয়ে বহু ক্রেতা আর শহরের ঐতিহ্যমন্ডিত এইসব দোকানের দিকে যেতে চাইছেন না। ফলে দিনকে দিন অবস্থা এমন হচ্ছে যে তাদের বংশ পরম্পরার ব্যবসা মৃত্যুর দিকে এগোচ্ছে বলে ইন্দ্রনীলবাবু আক্ষেপ করেন।ওই এলাকার প্রবীন স্বর্ন ব্যবসায়ী বিমল রায়কর্মকারও বলেন, যুগ যুগ ধরে তাঁরা যে ব্যবসা করে আসছেন তা আজ তলানিতে ঠেকছে। ফলে পহেলা বৈশাখ সামনে এলেও তাদের সেই আগের আনন্দ আর নেই। অস্বাভাবিক যানজট,টোটোর বিরক্তিকর পরিস্থিতি, পার্কিং নেই, ফুটপাত দখল হয়ে যাওয়া সবমিলিয়ে মানুষ আর শহরের ঐতিহ্যমন্ডিত পুরনো এইসব দোকানগুলোর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। তাছাড়া শহরের লাগোয়া অঞ্চলগুলো যেমন চম্পাসারি, শালুগাড়া, শালবাড়ি,মাটিগাড়া,ফুল বাড়ির দিকে নতুন নতুন মার্কেট বা ব্যবসার প্রসার ঘটছে । এর জেরে ক্রেতারা হিলকার্ট রোডের যানজট ঠেঙিয়ে তাদের দোকানে আর আসতে চাইছেন না। ব্যবসায়ী দীপক বনিক বলেন,পহেলা বৈশাখ নিশ্চয়ই ব্যবসায়ী বা বাঙালি জীবনে আনন্দের সঙ্গে সঞ্চার ঘটায়।কিন্তু তাদের ব্যবসার পরিস্থিতি ভালো নয়।অবস্থা দিনকে দিন এমন হচ্ছে যে তাদের দোকানপাট সব বন্ধ করে রাখার মতো পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। হিলকার্ট রোড এবং বিধান মার্কেটে প্রবেশের রাস্তায় পার্কিং এর পাশে বসেন এক ছোলামটর বিক্রেতা। সেই গরিব ঠেলাচালকও বলেন,তাঁর ব্যবসাও আগের মতো নেই। কারন এক তাঁর ঠেলার সামনে আবর্জনার জঞ্জাল।দুই, যানজট। যানজটে মানুষ এতো বিরক্ত যে একটু ঠেলাগাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ছোলামটর কিনবেন তারও উপায় নেই। পিছন থেকে ধাক্কা দিচ্ছে টোটো।

বিস্তারিত জানতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন :