গানই জীবনের মূল মন্ত্র দেবিকাদেবীর

শিল্পী পালিত ঃ গানের নেশাতেই ডুবে থাকেন দেবিকাদেবী।পুরো নাম দেবিকা গুহ। তার সঙ্গীত জীবনের কথা তিনি নিজেই জানিয়েছেন। তিনি তার নিজের যেসব কথা জানিয়েছেন, পড়ুন–


গানই সর্বশ্রেষ্ঠ সাধনা।সত্যি ই তাই।কোন শৈশব কাল থেকে বাবা মা এর হাত ধরে আমার এই সাধনার অনুপ্রবেশ সেকথা আজ আমার পক্ষে বলা বড়ই কঠিন।বাবা শ্রী ননীগোপাল দে মহাশয়ের চাকরি বারবার বদলি হওয়ার জন্য বিভিন্ন জায়গায় স্কুল কলেজ পরিবর্তন হয়েছে।
একেবারে শৈশবটি কেটেছে আমাদের কলকাতায়।তারপর কোচবিহার,অবশেষে শিলিগুড়ি। শিলিগুড়িতেই বাবা অবসর গ্রহণ করেন।আমার দাদা বিকাশ দে, আমার মা শ্রীমতি দীপালি দে, এই আমার পরিবার।
শৈশবে কলকাতায় থাকাকালীন শ্রীবিজয় মুখার্জির কাছে আমার সংগীত শিক্ষার হাতে খড়ি।তারপর সেখান থেকে কোচবিহারে এসে শ্রীপ্রানেশ চৌধুরীর কাছে বছর পাঁচেক শিক্ষা গ্রহণের পর শিলিগুড়িতে আসি।যোগাযোগ হয় বিশিষ্ট সংগীত শিক্ষক শ্রী উৎপল বসু মহাশয়ের সঙ্গে।শুরু হয় তাঁর তত্ত্বাবধানে শাস্ত্রীয় সংগীতের তালিম।দীর্ঘ বছর আমি তাঁর কাছে তালিম প্রাপ্ত হই।
শাস্ত্রীয় সংগীত চর্চার পাশাপাশি আমি অতুলপ্রসাদ, রজনীকান্ত, দ্বিজেন্দ্রলাল রায় ও নজরুলগীতি, এই সব গানের চর্চাও সমানভাবে শুরু করি।সেই সময় আরেকজন বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী শ্রীমতি নন্দিতা কর্মকারের সান্নিধ্য পেয়ে আমি বিশেষ ভাবে উপকৃত হয়েছি।
কলকাতায় শ্রী সুশীল চট্টোপাধ্যায় মহাশয়ের সান্নিধ্যে আসতে পেরে নিজেকে ধন্য এবং গর্বিত মনে করি।
ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ এবং পুরস্কার অর্জন করা ছাড়াও সবিশেষ উল্লেখযোগ্য হল “পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সংগীত একাডেমি” থেকে যেদিন পুরস্কৃত হই।কলকাতার শিশিরমঞ্চর সেই পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান আজও আমার কাছে চিরস্মরণীয়।
মা-বাবার পরেই যাঁর কথা সবচেয়ে বেশি বলা বিশেষ ভাবে প্রয়োজন তিনি হচ্ছেন আমার দাদা শ্রী বিকাশ দে।যিনি সর্বতো ভাবে আমাকে ছোটবেলা থেকে অনুপ্রেরণা জুগিয়ে গেছেন বা এখনো যাচ্ছেন।তিনি একজন তবলার প্রতিষ্ঠিত শিল্পী।
এর পর আসি আমি আমার আকাশবাণী র সংগীতানুষ্ঠান এর কথায়।প্রায় ২০-২৫ বছর ধরে আমি আকাশবাণী র নিয়মিত (B- high grade)শিল্পী।আমি নিয়মিত দুরদর্শনেও অনুষ্ঠান করে থাকি, এ ছাড়া স্থানীয় চ্যানেলগুলোতেও সংগীত পরিবেশন করে থাকি।
গান ই আমার জীবন এর মূল মন্ত্র।পরিকল্পনা বলতে আমার যতটুকু শিক্ষা আছে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে যদি উজাড় করে দিয়ে যেতে পারি তাহলেই আমার সংগীত জীবন সম্পূর্ণরূপে সার্থক বলে মনে করি।