জগন্নাথদেবের মাসির বাড়ি যাত্রা

স্বামী অখিলাত্মাপ্রিয় দাস
সভাপতি,শিলিগুড়ি ইসকন
আজ শনিবার,১৪ জুলাই শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের রথ যাত্রা।আজ তিনি বলরাম ও সুভদ্রাকে নিয়ে মাসির বাড়ি যাবেন।শিলিগুড়ি ইসকন মন্দির থেকে দুপুর আড়াইটায় জগন্নাথ দেব রথে চাপবেন।এবারে শিব মন্দিরে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে মাসির বাড়ি গুন্ডিচা মন্দির স্থির হয়েছে। সেখানে সাত দিন ধরে ১৪ জন মাসি জগন্নাথ,বলরাম ও সুভদ্রার সেবা করবেন। তারা প্রতিদিন ছাপান্ন ভোগ দিয়ে জগন্নাথ দেবের সেবা করবেন।
আজ জগন্নাথ দেবের রথ যাত্রার সময় আপনারা রথের দড়ি ধরে টানুন।জগন্নাথ দেবকে রথে দর্শন করুন । আর তার প্রসাদ পেয়ে জীবন ধন্য করুন। ব্রহ্মান্ড পুরানে আছে, রথেচ গমনম দৃষ্টুয়া পুর্নজন্ম ন বিদ্যতে। অর্থাৎ রথে যদি জগন্নাথ দেবকে দর্শন করেন তবে আর পুর্নজন্ম হবে না।জন্ম-মৃত্যু-জ্বরা-ব্যাধির সংসার যন্ত্রনা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।শিলিগুড়িতে এবার ইসকন রথের শোভাযাত্রায় আদিবাসী নৃত্যের আয়োজন করা হয়েছে। পৌন্ড্র বিজয়ের পর জগন্নাথ দেব শ্রী মন্দির থেকে পালকিতে চেপে রথে গিয়ে বসবেন।সেই সময় কাসার বাদ্যের সঙ্গে হরি ধ্বনি হবে।এ প্রসঙ্গে একটি পৌরানিক গল্প বলতে হয়।ওড়িশার রাজা ছিলেন ইন্দ্রদ্যুম্ন। তিনি খুব জগন্নাথ দেবের ভক্ত ছিলেন। জগন্নাথ দেব তার আরাধনায় তুষ্ট হলে রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন কিছু বর প্রার্থনা করেন। সেই সব প্রার্থনার মধ্যে একটি ছিল, তার যেন কোনও সন্তানাদি না হয়। রাজা জগন্নাথদেবকে বলেন, সন্তান চাই না এজন্য যে সন্তান হলেই সে উত্তরাধিকারী হবে। আর উত্তরাধিকারের সূত্রে সে দাবি করবে,বাবার তৈরি মন্দিরও তার। আর সেই সূত্রে আমার,আমার বলে তার অহঙ্কার জন্মাবে।এই প্রার্থনা শুনে ইন্দ্রদ্যুম্নের স্ত্রী গুন্ডিচা ডুকরে ওঠেন ।গুন্ডিচাদেবী জগন্নাথ দেবের কাছে কেদেকেটে বলতে থাকেন,তার সন্তানাদি না থাকার জ্বালা কীভাবে জুড়োবেন।তখন জগন্নাথ দেব তাকে সান্তনা দিয়ে বলেন, আমি তোমার সন্তান হবো। তোমার গুন্ডিচা মন্দিরে তুমি আমার দর্শন পাবে । মাসি হল মা এর মতো।সেই থেকে জগন্নাথ দেবের মাসির বাড়ি যাত্রার গল্প প্রচলিত হয়। জয় জগন্নাথ- বলরাম- সুভদ্রা।