পড়াশোনাকে আরও সহজ করতে ছাত্রছাত্রীদের জন্য ল্যাবরেটরি তৈরি করে দিয়েছেন এই তরুন শিক্ষক

নিজস্ব প্রতিবেদন ঃ সেই ল্যাবরেটরীতে কেও প্রস্রাব পরীক্ষার খুঁটিনাটি শিখে নিচ্ছে। কেও শিখছে রক্তের গ্রুপ নির্নয় বা অন্য আরও কিছু। শিলিগুড়ি লেকটাউনে তরুন প্রতিভাবান শিক্ষক দেবরাজ ঘোষের কাছে বিজ্ঞান পড়তে গিয়ে এমন বহু কিছু হাতেনাতে শিখে নিচ্ছে ছাত্র ছাত্রীরা। বায়োলজি, কেমিস্ট্রির ল্যাবরেটরি প্রাইভেট শিক্ষকের কোচিং সেন্টারে।অন্যরকম পদ্ধতির এই বিজ্ঞান শিক্ষা বেশ শোরগোল ফেলে দিয়েছে ছাত্র ছাত্রী এবং অভিভাবক মহলে। তাই অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ছাত্রীরা এখন শিলিগুড়ি লেকটাউন সানরাইজ ক্লাবের পাশে দেবরাজ স্যারের কাছে উপস্থিত হচ্ছে। ২৬ বছরের তরুন এই শিক্ষক বলছেন, আসলে ছাত্রছাত্রীদের শুধু টেক্সট বই পড়লেই চলবে না, সঙ্গে প্র্যাকটিক্যালও করতে হবে। থিওরির সঙ্গে প্র্যাকটিকাল করলে ছাত্রছাত্রীদের মননশীলতা বৃদ্ধি পায়, তাদের পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ আরও বেড়ে যায়। পড়ার বিষয় অনেক সহজ হয়ে যায়। তাই নিজে উদ্যোগ নিয়ে বায়োকেমেস্ট্রি ল্যাব বসানোর বিনিয়োগ নিয়েছেন দেবরাজ।
বেশি দিন হয়নি তিনি শিলিগুড়িতে এই ল্যাব বসিয়ে প্রাইভেট কোচিং দিচ্ছেন। বায়োলজি, কেমিস্ট্রি, ফিজিক্স, অঙ্কের জন্য দেবরাজের কগনিশন হাবে প্রতিটির জন্য এক হাজার টাকা ফী কিন্তু ল্যাবের জন্য কোনো অতিরিক্ত ফী দিতে হচ্ছে না ছাত্র ছাত্রীদের। মাত্র দুচারজন ছাত্র ছাত্রী নিয়ে দেবরাজ এই কোচিং সেন্টার শুরু করলেও অল্প সময়ের মধ্যে আজ তা চল্লিশ ছাড়িয়েছে। শিলিগুড়ি ও তার আশপাশের বিভিন্ন ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের ছাত্র ছাত্রীদের মুখে মুখে এখন ঘুরছে দেব স্যারের নাম।
কলকাতার আলিপুরে বাড়ি দেবরাজ ঘোষের। তার বাবা কলকাতা জিমখানা ক্লাবের কর্মকর্তা এবং একজন রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী।হার্টলে হাইস্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে আশুতোষ কলেজ থেকে মাইক্রোবায়োলজিতে অনার্স পাশ করেন তিনি। তারপর টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে বায়োটেকনোলজিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী। এরপর কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ থেকে ব্যাকটিরিয়ার ওপর তাঁর বিশেষ মাইক্রোবায়োলজির গবেষণা। বোস ইন্সটিটিউট, ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ কলেজ এন্ড এপিডেমিক ডিজিজের কিছু যন্ত্রপাতির সাহায্য এবং তথ্য সংগ্রহ করে নেদারল্যান্ডের একটি জার্নালে তাঁর গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। তরুন গবেষক দেবরাজ জানাচ্ছেন, মানুষের ত্বকে সংক্রমন হলে রাইবোফ্লোভন নামে একরকম ভিটামিন প্রয়োগ করা যায় ত্বকে।তারপর সেই ভিটামিনে আলো প্রয়োগ করে উত্তেজিত করে তোলা হয়।আর যত তা উত্তেজিত হবে ততই ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়াগুলোকে নষ্ট করবে।
দেবরাজের এই গবেষণা ত্বক বিশেষজ্ঞদের মধ্যে সাড়া ফেলেছে। ইন্ডিয়ান সায়েন্স কংগ্রেসের আজীবন সদস্য ছাব্বিশ বছরের এই তরুন।২০২০ সালে দাতের ইনফেকশন নিয়ে ইন্ডিয়ান সায়েন্স কংগ্রেসে তাঁর আর একটি গবেষণা পত্র প্রকাশিত হয়েছে।