দিনরাত সঙ্গীতের সাধনাতেই মগ্ন সংহিতা

শিল্পী পালিত, শিলিগুড়ি ঃঃ শিলিগুড়িতো বটেই জলপাইগুড়ি সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে সঙ্গীতের জগতে এখন পরিচিত নাম সংহিতা বিশ্বাসবাগচি। তার সঙ্গীত সাধনা নিয়ে অনেক কথাই তিনি জানিয়েছেন। সেসব মেলে ধরলাম তার কথাতেই ঃ “মা হওয়া কি মুখের কথা, মাকে দেখেই বুঝি ভালোবাসার শেষ ঠিকানা, মায়ের কাছেই খুঁজি”___আমি খুব ছোট্টোবেলা থেকে একটি স্বপ্ন দেখতাম, আমার গান। যা আমার জীবনের চলার গতি। এর বাইরে ভাবতাম, আমার সংসার, আমার স্বামীসন্তান ঘেরা আপনজনের সংসার ।আমি ভগবানের কাছে খুব বেশী কিছু চাইনি, আর তিনি আমায় কম কিছু দেননি। তাই তার কাছে আমার কোনো অভিযোগ নেই ।গানশিখেছি কাকার কাছে, তারপর পড়াশুনার প্রেমে পড়ে ইতিহাসকে এত ভালোবেসে ফেললাম যে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃতীয় স্থান পেয়ে কপালে জুটলো ব্রোঞ্জ মেডেল ।ভাবলাম, আরো পড়বো। কিন্তু বিয়ে হয়ে যাওয়াতে আর হলোনা। তাই অনেক প্রতিকুলতার মাঝে সন্তান ও সংসার আঁকড়ে ধরে এগিয়ে চলতে চলতে একদিন টের পেলাম যে গানকে কিছুটা হলেও ভুলতে বসেছিলাম। তাকে খড়ের মতো শক্ত করে ধরলাম। পাশ করলাম রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ।এর পর একদিকে মেয়েকে মানুষ করা, সংসার সামলানো আর নিজের ভালোলাগা গানকে নিয়ে চলছি। প্রথম সুযোগ এলো বাংলা গান উৎসবে (2008)সালে। প্রতিযোগিতায় জয় পেলাম। সেই শুরুর আনন্দ আজো চোখে জল এনে দেয়। তারপর জলপাইগুড়িতে আইকার্ড এওয়ার্ড জয়। তারপর চললো পরপর বিভিন্ন অনুষ্ঠান। উত্তরবঙ্গ উৎসব,বাংলা সংগীতমেলা , উত্তরবঙ্গ পৌষ মেলা , কোলকাতায় রায়গঞ্জে,রামপুরহাটে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ডাক পেলাম ।ছোটোবড় অনেক অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করে পেলাম অসংখ্য মানুষের ভালোবাসা আর আশির্বাদ যা আমার চলার পথের পাথেয় ।অবসর সময় সেলাই আঁকা আর বাগান পরিচর্যা আর একটুলেখা নিয়ে হেঁটে চলেছি সেই অজানা পথে যেখানে হাত বাড়িয়ে আছে আমার ভগবান যদি কখনো পড়ে যাই সে যেন টেনে তোলেন ।ভালোবাসাই আমার আশ্রয় যা আমার একমাত্র সম্বল আমার যোগাযোগের মাধ্যম মানুষের সাথে আমার ।আর মানুষকে উপেক্ষা করে কখোনো মা কে পাওয়া যায় না কারন মানুষ শব্দের প্রথম অক্ষর ই যে মা ।আমার মা ই আমার পথ প্রদর্শক। আমি তফাৎ বুঝি না ,তফাৎ বুঝিনা আমার জন্মদাত্রী মা ই আমার ঠাকুর ঘরের মা ।গরবী দুঃস্থ আতুর জনের সেবাই আমার জীবনের আদর্শ ।আর এই ভাবে যতদিন পারবো ন্যায় নীতি আর আদর্শ মেনে চলবো আমাদের বন্ধু সাথী বোনেদের জুড়ে গান্ধর্বী গোষ্ঠীকে সংগে নিয়ে ।গানই আমার সাধনা আর ভগবান।
এই গানকে আশ্রয় করে আমি অনেক গুনি ও প্রসিদ্ধ শিল্পীদের সান্নিধ্যে এসে নিজেও সমৃদ্ধ হয়েছি। তাদের মধ্যে ছিলেন _নচিকেতা চক্রবর্তী,পন্ডিত শ্রী অজয় চক্রবর্তী,শ্রীমতি হৈমন্তি শুক্লা,বাংলাদেশের শিল্পী রেজয়না চৌধরী বন্যা,আমার গুরু শ্রী অভিজিত বসু ,শ্রী স্বপনবসু,শ্রীমতি স্বাগতালক্ষী,আরো অনেকে।