দাদাগিরিতে শিলিগুড়ি দেশবন্ধুপাড়ার পাঁচ বছর বয়সী শিবাংস

শিল্পী পালিত ঃ দাদাগিরিতে গিয়ে মাতিয়ে এলো শিলিগুড়ি দেশবন্ধুপাড়ার পাঁচ বছর বয়সী শিবাংস দত্ত। শিবাংস-র মামা সায়ন্তন পালচৌধুরী নিজেই সব লিখেছেন সপ্রতিভ শিবাংস-র দাদাগিরি সফরের কথা।

দাদাগিরি সীজন ৮ এ সৌরভ গাঙ্গুলি কে বোল্ড আউট! বোলারের বয়স তবে মাত্র পাঁচ বছর। ব্যাট্ কিভাবে ধরতে হয়, সৌরভ তাকে শিখিয়ে দিয়েছেন। তিনবার অডিশনে পাশ করে তবে সরাসরি দাদাগিরির মঞ্চে পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে। দু’বার শিলিগুড়িতে, একবার কলকাতায়। প্রথমবার যখন অডিশন দিতে যায়, তখনই ওখানকার কর্মকর্তাদের নজরে চলে আসে শিলিগুড়ি দেশবন্ধু পাড়ার পাঁচ বছর বয়সী শিবাংস দত্ত। তার কথায় এবং মজার মজার উত্তরে তাকে ঘিরে বেশ একটা উত্তেজনা সৃষ্টি হয় কর্মকর্তাদের মধ্যে। বেশ কিছুক্ষণ তার সাথে গল্প চলে প্রথম ও দ্বিতীয় দুই অডিশনেই। শেষে মহালয়ার ঠিক ক’দিন আগে কলকাতা থেকে তৃতীয় অডিশনের ডাক আসে। তারপর দুর্গা পূজার মধ্যে কিছুদিন সব চুপচাপ। অবশেষে ফোন আসে ভাইফোঁটার পরের দিন। ফোনে জানানো হয় যে তার পরের দিনই কিছু গ্রুমিং, আর তার পরের দিন স্যুটিং। ভাইফোঁটা উপলক্ষে শিবাংস তখন তার মায়ের সাথে তার দাদুর বাড়ি, লাটাগুড়িতে। সেখান থেকে শিলিগুড়ি এসে সেদিন সন্ধ্যায় তারা রওনা দেয় কলকাতা। সারারাত বাসে করে গিয়েও ক্লান্ত হয়নি সে। পরের দিন দুপুর দুটো থেকে রাত সাড়ে নয়টা পর্যন্ত চলে গ্রুমিং। আবার তার পরের দিনই সকাল আটটার মধ্যে পৌঁছাতে হবে স্টুডিওতে। এতো ধকল কাটিয়ে শেষমেষ দাদাগিরির মঞ্চে উপস্থিত শিবাংস তার মা, দাদু, দিদা, ঠাকুমা, পিসি, দাদা ও মামার সাথে। সেজে গুজে যখন তারা সেট্-এ দাঁড়ায়, তখন সকাল সাড়ে দশটা। কিছুক্ষণের মধ্যেই সকলের হাততালির মধ্যে দিয়ে এসে দাঁড়ান ক্রিকেট জগতের মহারাজ, সৌরভ গাঙ্গুলি। বাচ্চাদের সাথে আলাপ সেরে ও ছবি তুলে শুরু হয় সেদিনের পর্ব। যারা এখনও প্রতিযোগিতার জগতে প্রবেশ করেনি, সেই ছয়জন শিশুর কাছে সেই দিনটা ছিল শুধু আনন্দের।

শিবাংস খেলেছিল দার্জিলিং জেলার হয়ে। প্রথম থেকেই উত্তর দেওয়ার ব্যাপারে সে যথেষ্ট সচেতন। সাত নম্বর জার্সি যে তার প্রিয় মহেন্দ্র সিং ধোনি পরে, সেটা তার ভালোই জানা। তাজমহলের ছবি দেখে সে বেশ জোরেই বলে ফেলেছিল উত্তরটা। যদিও প্রশ্নটা তার জন্য ছিলনা। কিভাবে “হেল্প” চাইতে হবে, সেটাও সে মনে রেখেছিল। গুগলী রাউন্ডে একটু পিছিয়ে পড়ে শিবাংস। স্লগ ওভার রাউন্ডে সে অতিক্রম করতে পারেনি। “বাজার” দাবিয়ে উত্তর দিতে সে কিছুটা পিছিয়ে পড়ে।

শিবাংস শিলিগুড়ি দেশবন্ধু পাড়া নিবাসী প্রসেনজিৎ দত্ত ও জয়ীতা দত্ত পালচৌধুরীর পুত্র। মাল্লাগুড়িতে “এনডেভার গ্লোবাল” স্কুলে ইউ. কে. জী-তে পড়ে সে। পড়াশোনা ছাড়াও খেলা এবং গানের প্রতি তার প্রবল আকর্ষণ। মাত্র তিন বছর বয়সেই সে “আনন্দধারা”-র আয়োজিত একটি ছোটদের অনুষ্ঠানে সিসিএন চ্যানেলে গান গায়। শুনে শুনেই তুলে ফেলে যে কোনো গান। এমনকি সেই সব গানের প্যারোডি করতেও সে পিছপা হয়না। মামা সায়ন্তন পাল চৌধুরী ও শিলিগুড়ির খ্যাতনামা শিল্পী শ্রীমতী বর্ণালী বসু-র কাছে সে গানের তালিম নেয়। সবুজ রং তার এতোটাই প্রিয়, যে সবুজ রঙের জামাপ্যান্ট থেকে শুরু করে সাবান পর্যন্ত সবই তার সবুজ চাই। তবে দাদাগিরির অডিশনে বা গ্রুমিং-এ কি শেখানো হয়েছিল জিগ্গেস করলে সে এখনও বলে, “সিক্রেট”।