চ্যালেঞ্জ নেওয়াটা খেলা অপু রানির কাছে

শিল্পী পালিত ঃঃ আজ আত্মকথা বিভাগে অপুরানি উকিল এর আত্মকথা পরিবেশন করছি। বহু পাঠক খবরের ঘন্টার ওয়েবপোর্টালে এই আত্মকথা লেখাগুলো পড়ছেন। ভিউয়ার দেখেই বোঝা যাচ্ছে। বেশ ভালো লাগছে। সকলের কাছে আবেদন, খবরের ঘন্টার ওয়েবপোর্টালের খবর সহ অন্য লেখাগুলো লাইক, শেয়ার করে খবরের ঘন্টাকে এগিয়ে যেতে সহযোগিতা করুন—

—-আমি অপু রানি উকিল। চ্যালেঞ্জ নেওয়াটা আমার কাছে এক প্রকার খেলা।কখনো কেউ যদি বলেছে,মেয়ে মানুষের এই কাজটা করতে নেই,তখনই হাজারো প্রশ্ন ভিড় করতো, এখনো করে।
ছোটবেলা থেকেই ফুটবল,পুকুরে সাঁতার কাটা,আর গাছে চড়া ছিলো আমার খুব প্রিয়।বাড়ির কোনে আমগাছটার মগডালে লুকিয়ে থাকতাম,স্কুল যাবার সময় হলেই।স্কুল ভীতি খুব ছিলো।ছাত্রী হিসেবে পেছনের বেঞ্চের ছিলাম।
তবে পঞ্চম শ্রেণীতে যখন পড়ি তখন থেকে কবিতার ভুত মাথায় চাপে, লিখতাম ছন্দ মিলের কবিতা।মা ছিলো একমাত্র পাঠক।দাদা দিদিদের হাসির খোরাকও ছিলো আমার কবিতা।পরবর্তীতে মাসিক ম্যাগাজিন এ নিয়মিত লিখতাম।
প্রচণ্ড জেদ ছিলো,আর তার বহিঃপ্রকাশ ছিলো ভুখা অনশন।চালচলন আগাগোড়াই রমণীয় ধাচের ছিলো না।(এখনো নয়)ইচ্ছার বিরুদ্ধাচরণ করতে পারিনা।ছলচাতুরী একদম নাপসন্দ।যাকে বুঝতে পারিনা,তার সঙ্গ এড়িয়ে চলি,সে যতোই জনপ্রিয়তার শীর্ষে অবস্থান করুন না কেনো।
নাটক কিনা জানিনা, তবে ছোটবেলায় পাড়াতে খুব, নৌকা বিলাস(রাধা কৃষ্ণ, নিমাই সন্ন্যাস) মঞ্চস্থ হতো,দাপিয়ে অভিনয় করতাম।কখনো রাধা,কখনো নিতাই আর মনে নেই।
বন্ধু শ্রাবণী ও দীপ স্যারের হাত ধরে ২০১৩ সালে আবার নাটকে আসা।একই বৃন্তে,রৌদ্র দিনে লাবন্য,রূপ কথার ফানুস, ক্রস কানেকশান,ব্রজ সংবাদ,ইঁদুর দৌড়,সম্পাদক ছাড়াও নিজের লেখা ও পরিচালনায়,লপটপ,দ্বৈধ,দায়বদ্ধতা, ব্রিলিয়ান্টএ অভিনয় করেছি।
নাটক লেখাটাও আমার একটা চ্যালেঞ্জ। কেউ উপহাস করেছিলো, ব্যাস জেদ চেপে গেলো।আমার লেখা নাটক (শ্রুতি) “পূর্নিমায় অমাবস্যা”শ্রুতি নাটকটি “কলকাতা বাঙুর নাট্যনেশা “প্রতিযোগিতায় তৃতীয় ও শিলিগুড়ি পুষ্প মেলায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে।”দ্বৈধ” নাটকের একটা চরিত্র পেয়েছে দ্বিতীয় স্থান(দিলীপ সরকার)।তাৎক্ষণিক নাটক (যোগার ওপর)”কে প্রথম”শিলিগুড়ি ইন্ডোর স্টেডিয়াম এ অনুষ্ঠিত হয়। আর “কথা”নাটকটি কার মাইকেল স্কুল এ গতো বছর শিক্ষক দিবসে।”ফিরে আসা”ও “বার গার্ল “এর মহড়া চলছে।
৯ সেপ্টেম্বর আমার রচনা ও নির্দেশনায় দীনবন্ধু মঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ছোটদের নাটক,ঘাসফুল ও প্রজাপতি।
যোগা আমার ভালোলাগা, ভালোবাসা,দায়িত্ববোধ।সুস্থ ভারত গড়তে, প্রত্যেকের সুস্থতা আমার অঙ্গীকার । যোগার প্রতি আরো মনোযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে রবীন্দ্র সঙ্গীত এর সাথে বিভিন্ন আসনের সাহায্যে যোগা নৃত্যের প্রোগ্রাম করি দীনবন্ধু মঞ্চে।যা খুব সমাদৃত হয়।
গান খুব ভালোবাসি।অবশ্য ভালো গাইতে পারিনা,তাল লয় জ্ঞান খুব কম,তবুও চেষ্টা ছাড়িনি। মানসিক প্রশান্তির জন্য।(অবশ্য কারো কারো জন্য অশান্তির কারণও হয়)
নাটক নিয়ে অনেক পরিকল্পনা আছে,তবে গতানুগতিক নাটক নয়।
“অবশেষে সকলে মিলিয়া সুখে শান্তিতে বসবাস করিতে লাগিলো,কাহারো কোনো দু:খ রহিলোনা”
এই ধরনের নয়।যা সমাজে ঘটমান তার ওপরে।
খুব ঘুরতে আর ঘুমোতে ভালোবাসি,সময় পেলেই—।
সংসারে প্রত্যেকের কাছে কৃতজ্ঞ, যারা বাঁধন আলগা করে স্বাধীন করে দিয়েছে।আমার দুই ছেলে, আমার অনুপ্রেরণা, ওদের সহযোগিতা অবর্ণনীয়। আমি ওদের থেকে অনেক কিছু শিখি।ওরা আমার সাহস,শক্তি।
আর,আমার চলার পথে কিছু ব্যাক্তিত্ব, ঊজ্বলা আন্টি(জলি),শিখা কাকিমা,(রুপিয়সী বুটিক)কাকিমা,মিনতি কাকিমা (আরো অনেকে) ওনাদের সহযোগিতা সারাজীবন মনে রাখার মতো।
আমি যেনো ওনাদের ভুলে না যাই।