বিয়ের মরশুম নেই, বছর শুরুতে বাসন্তি আর সুখিকে নিয়ে পিকনিকের মাঠে নিরঞ্জন

নিজস্ব প্রতিবেদন ঃ বুধবার শুরু হয়েছে নতুন বছর। এখন বিয়ের মরশুম নেই। তাই শিলিগুড়ি শহর লাগোয়া বৈকুন্ঠপুর ফরেস্টের পিকনিক স্পটে বাসন্তি আর সুখিকে নিয়ে গিয়ে সুখ খোঁজার চেষ্টা করেন তেলিপাড়ার নিরঞ্জন সাহা। কিন্তু এদিন দুপুর পর্যন্ত একটি টাকাও তিনি হাতে পাননি বাসন্তি আর সুখির মাধ্যমে।

একশ দিনের কাজ করে কিছু টাকা তিনি পান। আবার সুখা মরশুমে বাড়ি বাড়ি কুয়ো ঝালাইয়ের কাজ করেও কিছু টাকা রোজগার করেন। কিন্তু তাতেও তার ঘরে সুখ আসে না। অভাব নিত্যসঙ্গী। তাই বিহার থেকে তিনি কিনে এনেছেন বাসন্তিকে। বিয়ের মরশুমে বাসন্তির দৌলতে কিছু রোজগার হয়। অনেক বর বিয়ে করতে যায় বাসন্তির পিঠে চেপে। তাতে নিরঞ্জনের পকেটে এক দেড় হাজার টাকা করে আসে। বাসন্তির সঙ্গে তার ঘরে জন্ম নিয়েছে সুখী। সুখীর মাধ্যমেও কিছু রোজগার হয় তার। কিন্ত অভাব তবুও তাকে টেনে ধরছে। এখন পৌষ মাসে বিয়ে নেই। অথচ শুরু হয়েছে পিকনিক মরশুম। তাই নিরঞ্জন স্থির করেছেন, পৌষ মাসের এই পিকনিক মরশুমটা বাড়ির কাছে সাহু নদীর ধারে বৈকুন্ঠপুর ফরেস্টের পিকনিক স্পটে যাবেন। পিকনিক করতে আসা পরিবারগুলোর ছেলেমেয়েরা যদি বাসন্তি আর সুখীর পিঠে চাপে তবে দুটা পয়সা রোজগার হবে। সেই ভাবনাতে বুধবার বছর শুরুর দিনে তিনি চলে যান ফরেস্টের পিকনিক স্পটে। কিন্তু দুপুর পর্যন্ত হাতে আসেনি কোনও পয়সা।
বাসন্তি আর সুখী আসলে তার দুই পোষ্য ঘোড়া। আজকাল সেলফি জমানার যুগে ঘোড়ার পিঠে চেপে ছবি তোলার একটা ফ্যাশন শুরু হয়েছে। তাই রোজগারের আসায় নতুন বছরে ফরেস্টের পাশে যান তিনি। কিন্তু বনের পরিবেশ রক্ষা আর শৃঙ্খলার জন্য এবছর থেকে একেবারে ফরেস্টে সাহু নদীর ধারে পিকনিক করা বারন। ফরেস্ট থেকে সামান্য দূরে পিকনিক। আর সেখানে মাইকও বাজছে না। রীতিমতো পুলিশ পাহারায় চলছে পিকনিক। আর তাতেই ঘোড়ায় চড়ে ছবি তোলার উদ্দীপনা কমেছে কিনা প্রশ্ন জেগেছে নিরঞ্জনের মনে। এদিন তিনি বেশি অর্থ সুখের আশায় বাসন্তি আর সুখীর পিঠে চেপে আনন্দ নেওয়ার ভাড়াও কমিয়ে করেন কুড়ি টাকা প্রতি একজনে। কিন্তু তাতেও তেমন সাড়া নেই। তার বক্তব্য, বছরের এই সময় স্ট্রেস কমাতে ছেলেমেয়ে নিয়ে বনভোজনে আসেন লোকেরা। ঘোড়ায় চড়ে অনেক শিশু এই সময় তাদের স্কুল জীবনের পড়াশোনার চাপ হালকা করে নেয়৷ কিন্তু সেই আনন্দ নেওয়ার উদ্দীপনা কম থাকায় তার মনে চাপ বাড়ছে৷ কারন তার রোজগার কমছে৷