রক্ত দান, জীবন দান— শিলিগুড়িতে মাঝরাতে মুমূর্ষু প্রসূতিকে বাঁচানোর মানবিক তৎপরতা

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ করোনা দুর্যোগ এর জেরে যখন আনলক পর্ব চলছে তখন গভীর রাতে মুমূর্ষু এক প্রসূতির জন্য রক্তের ব্যবস্থা করে ব্যতিক্রমী উদাহরন তৈরি করলেন শিলিগুড়ি ইউনিক ফাউন্ডেশন টীমের তরুন সমাজসেবী শক্তি পাল। মুমূর্ষু ওই প্রসূতির জন্য মাঝরাতে রক্তের ব্যবস্থা করতে তৎপর হয়ে ওঠেন শিলিগুড়ি মহকুমার বিধাননগর ওয়েলফেয়ার সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা তথা পুলিশ কর্মী বাপন দাস।

শনিবার রাত বারোটা নাগাদ নকশালবাড়ির ধীমাল সম্প্রদায়ের প্রানপুরুষ তথা শিক্ষক গর্জেন কুমার মল্লিক খবরের ঘন্টার সম্পাদককে ফোন করে জানান, খড়িবাড়ির বাতাসি নিবাসী প্রসূতি প্রমীলা সিংহের জন্য অবিলম্বে দুইউনিট বি পজিটিভ রক্ত দরকার। ওই প্রসূতি ভর্তি রয়েছেন নকশালবাড়ির একটি বেসরকারি হাসপাতালে। অবিলম্বে রক্ত না পেলে প্রসূতির প্রান বিপন্ন হবে। বিভিন্ন স্থানে আবেদন করেও রক্তের ব্যবস্থা হয়নি। খবরের ঘন্টার সম্পাদক মানবিক কারনে এবিষয়ে উদ্যোগী হওয়ার জন্য আবেদন জানান শিলিগুড়ি ইউনিক ফাউন্ডেশন টীমের তরুন সমাজসেবী শক্তি পাল এবং বিধাননগর ওয়েলফেয়ার সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা বাপন দাসের কাছে। এরপরই তাঁরা রক্তের জন্য উদ্যোগী হন। নকশালবাড়ি থেকে একজন ডোনারকে নিয়ে গর্জেন কুমার মল্লিক রাত দেড়টা নাগাদ পৌঁছন শিলিগুড়ি সেভক রোডের তরাই ব্লাড ব্যাঙ্কে। গভীর রাতেই ইউনিক ফাউন্ডেশনের শক্তি পাল একা বাইক চালিয়ে পৌঁছে যান তরাই ব্লাড ব্যাঙ্কে। শক্তির আবেদন এবং প্রয়াসের পর রাত দুটা নাগাদ এক ইউনিট রক্তের ব্যবস্থা হয়। শক্তি সেই ডোনারকে শংসাপত্র দিয়ে রাতেই উৎসাহিত করেন। রাত তিনটা নাগাদ শক্তি পৌছন তাঁর বাড়িতে। অপরদিকে বিধাননগর থেকে বাপন দাস রাতেই যোগাযোগ করেন উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে। সকালের মধ্যে আর এক ইউনিট রক্তের ব্যবস্থা হয়ে যায়। রক্ত পেয়ে নতুন জীবন ফিরে পান ওই প্রসূতি। করোনা দুর্যোগ এর সময় আনলক পর্বে মাঝরাতে মুমুুর্ষ রোগী বাঁচাতে শক্তি পাল ও বাপন দাসের ওই মহতি প্রয়াসের তারিফ করেছেন গর্জেনবাবু। শিলিগুড়ির বিশিষ্ট সমাজসেবী সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ও এই মহতি কাজের প্রশংসা করেন। শক্তি পাল ও বাপন দাসের ওই মানবিক কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেন সোমনাথবাবু।