গানই তাঁর কাছে সর্বশ্রেষ্ঠ সাধনা, লিখেছেন সঙ্গীত শিল্পী রুণকী দত্ত তালুকদার

শিল্পী পালিতঃ আজ আত্মকথায় শিলিগুড়ি রাসবিহারী সরনি হাকিমপাড়ার রুণকী দত্ত তালুকদারের সঙ্গীত চর্চার কথা মেলে ধরা হলো।গানই সর্বশ্রেষ্ঠ সাধনা, যার মধ্যে দিয়ে অন্তরাত্মার ব্যাপ্তি ঘটে, লিখেছেন রুণকীদেবী —

“আমার যে গান তোমার পরশ পাবে” “গান”ই সর্বশ্রেষ্ঠ সাধনা,যার মধ্যে দিয়ে অন্তরাত্মার ব্যাপ্তি ঘটে।ঈশ্বরকে উপলব্ধি করা যায সহজেই।তাই যতক্ষণ দেহে প্রাণ থাকবে গানের মধ্যে থাকতে চাই।

শৈশব কেটেছিল ডুয়ার্সের বনাঞ্চলে।বাবা ছিলেন ফরেস্ট রেঞ্জার সঙ্গীত প্রেমী বড় মনের মানুষ।সরকারী আবাসনে অনেক গুণীজন, শিল্পীরা আসতেন। গান নাচ, কবিতা পাঠের জলসা হত।আমরা তিন ভাই বোন অংশ নিতাম ছোট থেকেই। মা আতিথেয়তায় ত্রুটি রাখতেন না। সাত বছর বয়সে গান শেখা শুরু। বারো বছর বয়সে বাবা মারা যান। এরপর শিলিগুড়িতে বসবাস শুরু।

শ্রী মিহির সান্যালের কাছে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের তালিম নিয়ে “সঙ্গীত বিশারদ” হওয়া । ১৯৯১ সালে শ্রীমতি কুমকুম মুখোপাধ্যায়ের কাছে শিষ্যত্ব পাই।শুরু হয় রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিম নেওয়া। উনত্রিশ বছর ধরে তার গায়নশৈলী অনুসরন করে চর্চা করছি।তিনি বলেছেন গান শেখার আগে বারবার গান পড়তে।অর্থ না বুঝে, ভেতরে না ঢুকে রবি ঠাকুরের গান গাওয়া হয় না। অনেক বছর আগে শেখা গান এখন গাইতে গেলে মনে হয় অর্থটাও যেন বদলে গেছে। অনেক শেখা বাকি রয়ে গেছে।আরও শিখতে চাই।সঠিকভাবে গাইতে চাই।

ডাক্তার শৈলেন দাশ, পূবালি দেব্নাথ,সুপর্ণা ঠাকুর,সুভাষ চৌধুরী,মায়া সেনের মতো বিশিষ্ট শিল্পীদের কাছে তালিম নেয়ার সুযোগ পেয়ে আমি ধন্য হয়েছি। রাজ্য সঙ্গীত আকাদেমির প্রতিযোগিতায় প্রথম,ছাত্র যুব উত্সবে প্রথম পুরস্কার পেয়েছি। বিভিন্ন মঞ্চে গান গাওয়ার সুযোগ হয়েছে। আকাশ বাংলা,ডি ডি সেভেন,সি সি এন ইত্যাদি চ্যানেলে গান গাইতে পেরে আমি সমৃদ্ধ হয়েছি।

বানিজ্য বিভাগে স্নাতক হয়ে কষ্টিং এর একটা গ্রুপ পাস করে পড়াশোনা বন্ধ হয়। বহু বছর পর বাংলা সাহিত্যে অনার্স করেছি। জীবনের কঠিন সহজ সব অবস্থাতে আমার সঙ্গীত জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ায় বাবা মায়ের পর আমার স্বামী আর কন্যার সহযোগীতা অনস্বীকার্য। গানের সাথে পরিবার এবং সমাজের জন্য আমি দায়িত্ব কর্তব্য পালন করে যেতে চাই।

“মরণ হতে যেন জাগি গানের সুরে।”

রুণকী দত্ত তালুকদার
রাসবিহারী সরণী, হাকিমপাড়া।
শিলিগুড়ি