শিল্পী পালিতঃআজ শিলিগুড়ি নিউ মিলনপল্লীর সম্পা সিনহার আত্মকথা মেলে ধরা হলো —
আমি সম্পা সিনহা। আমার স্বামীর কর্মসুত্রে আমি ভারতবর্ষের বিভিন্ন রাজ্যে তিন বছর করে থেকেছি।অনেকটা যাযাবরের মতন। আমার উনি ছিলেন সেনাবাহিনী তে।আমরা যখন পঞ্জাবে
ছিলাম,আমাদের Cantonmentটা খুব সুন্দর ছিল,ঝক ঝকে তকতকে রাস্তা,সবুজ গাছে ঘেরা।যার জন্যে গরমের প্রখর রোদের হাত থেকে কিছুটা রক্ষা পাওয়া যেত ।ভীষন ভাল লাগত। দুচোখ ভরে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতাম। আমি জানতাম,আমার মধ্যে একটা পাগল মন ছিল।পাঞ্জাবে, একবার জুন মাসের প্রচন্ড গরমরের এক দুপুরে Cantt থেকে একটু দূরে যেতে হয়েছিল।পুরো শরীর ঢাকা পোশাক পরে চোখে Sunglasses দিয়ে বাইকের পেছন সীটে বসে যাচ্ছি হঠাৎ করে মনে হল, এই প্রখর রোদ,খালি চোখে দেখে আমাদের বাংলার রোদের সাথে পার্থক্যটা অনুভব করব।sunglasses খুলে হাতে নিলাম। ঘরে যখন ফিরলাম চোখ লাল হয়ে গেছে এবং চুলকোচ্ছে।সব শুনে, উনি আমায় পাগল বললেন। একবার আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। ঘুম যখন ভাঙল।আমার মেয়ে জানাল এইমাত্র এক দিদা মেয়ের বিয়ের সাহায্য চাইতে এসেছিল,ঘুমের ঘোরে আমি নাকি কিছু দিতে না করেছিলাম । তাড়াতাড়ি মেয়ের হাতে টাকা দিয়ে বললাম,দিদাকে খুজে টাকা দিয়ে আয়। কিছুক্ষন পর মেয়ে ফিরে এসে জানাল,দিদাকে পায়নি। খুব কষ্ট পেলাম মনে মনে। এটাও আমার একটা পাগলাম।
বাইরের মানুষরা আমাকে বলতেন,আমার মধ্যে নাকি অনেক গুন আছে ; আমার মনে হত এটা ঠিক নয় আবার আমার নিকটজনেরা আমায় এত ছোট চোখে দেখতেন কিন্তু সেটাও ঠিক ছিল না। কেননা আমি জানতাম আমার মধ্যে একটা সুপ্ত প্রতিভা আছে, আমি লিখতে পারব।ব্যস শুরু হয়ে গেল আমার লেখার পাগলাম।কিছুদিন পর থেকে আরম্ভ করলাম আমার লেখা। কয়েকটা কবিতা লিখলাম।আমার স্বামী ছেলে মেয়ের উৎসাহে,হাতে কলম এবং খাতা নিয়ে শুরু হল আমার নতুন জীবন। কবিতা এবং গল্প লিখে সেগুলো পোস্ট করলাম আমার লেখা কবিতা।অনুগল্প… উপহার,পরিবর্তন, যেতে নাহি দেব, লিখে পাঠকের অনেক ভালবাসা পেলাম । এখন মনে হয় চেষ্টা করলে আমি আরো অনেক লিখতে পারব। আমাদের প্রত্যেকের ভেতরে কম বেশী প্রতিভা থাকে।এই প্রতিভকে বাইরে এনে তুলে ধরাটা আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পরে আর সেটাই হয় জীবনের সার্থকতা।এমন কত প্রতিভা আছে যা উৎসাহের অভাবে,জীবন অবসানের সাথে সাথে প্রতিভার মৃত্যু ঘটে।
Sukanta Sarani , New Milan pally, PO : Siliguri bazaar, Dist. Darjeeling, Pin. 734005