সুরের নেশাতেই ডুব দিয়েছেন মালবিকা

শিল্পী পালিত ঃ আজ আমাদের এই ওয়েবপোর্টালের আত্মকথায় শিলিগুড়ি কলেজপাড়ার শিল্পী মালবিকা চক্রবর্তীর কথা মেলে ধরা হচ্ছে। চলুন ঝটপট পড়ে নিই তার সংগ্রাম বা লড়াইয়ের কাহিনী —

–কোচবিহার জেলার এক প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে জীবন যাত্রা শুরু আমার |গ্রামের নামের সাথেই সুর জড়িয়ে আছে __নাম তার টিয়াদহ |বয়ে যাওয়া বানিয়াদহ নদীর কুলকুল, পাখিদের কলতান আর সন্ধ্যার পর ঝিঁঝি পোকার ডাকের মাঝে এ অতি নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে আমার জীবনের প্রথম অধ্যায় |
পারিবারিক অসচ্ছলতা পথ চলার জন্য বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল ঠিকই কিন্তু সুরের মোহ ছোট বেলা থেকেই আমাকে তাড়িয়ে বেড়াত |সুরের সাথে প্রথম যোগাযোগ স্কুলের নাচের মধ্য দিয়ে |এরপর সংস্পর্শে আসি স্বনামধন্য প্রয়াত শ্রী প্রীতি নাথ জোয়ারদার মহাশয়ের |বলা যায় আক্ষরিক অর্থে স্বর ও সুরের সমন্বয়ের সাথে প্রথম পথ চলা ওনার উদার ভালোবাসা ও উদার মানসিকতা, আমার পাথেয় ___আমার সর্বকালীন প্রেরণা |তার কাছে প্রথম গান শেখার থেকেই সুরের স্বপ্ন আমাকে তাড়িয়ে বেড়াত |গানের সাথে নাচের অবদান অবশ্যই অনস্বীকার্য |
এরপর কাজের সূত্রে একবার আমায় কিছুদিন শান্তিনিকেতনে থাকতে হয় |সেখানকার স্মৃতি আমার চির সম্পদ |পরিচয় হয় শ্রী মতি কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয়ার সঙ্গে, তার কাছ থেকে অনেক কিছুই জানতে ও শিখতে পারি |পরিচয় হয় গোড়া শার্মাধিকারী ও দ্বীজেন মুখোপাধ্যায় মহাশয়ের সঙ্গে |তাদের সঙ্গে ব্যাক্তিগত আলাপচারিতায় আমি উদ্বুদ্ধ হই |ওনাদের অনেক মূল্যবান কথা আজও আমার চলার পথ মসৃণ করেছে |
এইভাবে চলতে চলতে জীবনের দিক পরিবর্তন হয় |আমি বিবাহ সূত্রে আবদ্ধ হই |বর্তমানে আমি শিলিগুড়ির বাসিন্দা। গান আমার পেশা নয় অবশ্যই __তবে অদম্য নেশা, সেই নেশার টানে আজও চলেছি |বিবাহ পরবর্তী জীবনে প্রাসঙ্গিকভাবে গানের অভ্যাসের সময় কিছুটা কমে যায়। কিছূ বছর পর আবার সুযোগ আসে এবং কিছু শিক্ষকের সান্নিধ্যে আসি |শ্রী অভিজিৎ চক্রবর্তী মহাশয় এক সময় আমার গানের প্রেরণা হন |তার পরবর্তীকালে উত্তরবঙ্গের প্রখ্যাত গজল শিল্পী শ্রী আশীষ কুমার বণিক মহাশয়ের সান্নিধ্যে আসি |বিবাহ পরবর্তী সময় আমি আমার স্বামীর সহচর্য পেয়েছি যিনি একসময় mouth organ এর শিক্ষার্থী ছিলেন |
এভাবেই চলতে চলতে সাথী হয়ে যাই আমাদের ছোট গানের দলের ___যার নাম “ঐকতান মিউজিক্যাল গ্রুপ “।দলের সব দাদা দিদি ও বন্ধুদের সহযোগিতায় এগিয়ে চলেছি সুরকে সাথী করে |এভাবেই গানের মধ্যে বেঁচে থাকতে চাই সারা জীবন |
কর্মব্যস্ত জীবনে চাওয়া পাওয়ার সমন্বয় ঘটানোর সাধ্য কারোর নেই___নেই আমারো। তার মধ্যেই থেকে যায় বেঁচে থাকার আনন্দ টুকু |সমস্ত ভালোলাগাগুলো একসূত্রে গাঁথা হয় সুর দিয়ে |জীবনে চলার পথকে মসৃণ করেছে যে সুর ___তাকে জানাই সহস্র নমস্কার
মনে হয় কবি গুরুর সেই বাণী ——-রাঙিয়ে দিয়ে যাও যাও যাও গো এবার যাবার আগে |
মালবিকা চক্রবর্তী
Nigam prasad Chakraborty
20 Nandolal Basu Sarani
Siliguri
College para
Darjiling