নিজস্ব প্রতিবেদন ঃ রাস্তার ধারে পড়ে থাকা অসহায়দের উদ্ধার করে শিলিগুড়িতে নজির গড়ছেন এক মহিলা। তার নাম ডালিয়া রায়।
ডালিয়ার মানবিক কাজের সাম্প্রতিকতম উদাহরণ হলো, শিলিগুড়ি মাল্লাগুড়িতে পড়ে থাকা এক মূক ও বধির মহিলাকে উদ্ধার করে তার প্রিয়জন বা পরিবারের লোকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া। ওই মহিলাকে উদ্ধারের পর তার নাম, ঠিকানা, পরিচয় কিছুই জানা যাচ্ছিলো না। তাকে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল থেকে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পৌঁছে প্রথমে চিকিৎসা শুরু হয়। তারপর তাঁর পরিচয়, ঠিকানা জানার প্রয়াস শুরু হয়। আর এই কাজে বিশেষ ভূমিকা করেন ডালিয়া রায়। তাঁকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন সমাজসেবী শক্তি পালও।
ডালিয়া পাঁচ দিন আগে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করে ওই মূক ও বধির মহিলার বিহারের বাড়ি পৌঁছে যান। বিহার পুলিশ ও কিছু সাংবাদিকের সহযোগিতা নিয়ে মহিলার প্রিয়জনদের কাছে যান। এরপর সোমবার মূক বধির মহিলাকে তার বাড়ির লোকের হাতে পৌঁছে দেওয়ার কাজ সম্পন্ন হয় উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। সেই মহিলা ও তার পরিবারের মুখে হাসি ফুটেছে। এ বিষয়ে বিহারের কাটিহার থানার আইসি রঞ্জন সির, ডিডি নিউজের সাংবাদিক মুকেশ চৌধুরী এবং তার সঙ্গীসাথী, এসপি মতিহারী নবীন চন্দ্র ওঝা, মতিহারির পিপড়া থানা সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন ডালিয়া।
প্রসঙ্গত অত্যন্ত কষ্টের মধ্যে দিয়ে বড় হয়েছেন ডালিয়া। তিনি যখন ছোট ছিলেন সেই সময় মালদাতে এক দুর্ঘটনায় বাবামা দুজনকেই হারান ডালিয়া। তারপর শুরু হয় তাঁর জীবনযুদ্ধ। শিলিগুড়ি হাকিমপাড়া বালিকা বিদ্যালয়ে বেশ মেধার সঙ্গে স্কুল স্তরের ভালো ফল দেখিয়ে শিলিগুড়ি কলেজ থেকে স্নাতক হন। এখন তিনি আইনের তৃতীয় বর্ষ অতিক্রম করছেন। হস্ত শিল্প বা হাতের কাজেও তাঁর দক্ষতা রয়েছে। টান আছে মিউজিকের প্রতিও। শিখছেন ভায়োলিন। এছাড়া ক্রিয়েটিভ ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টও পরিচালনা করছেন তিনি। সেই সব নানা গুনের মধ্যে মনুষ্যত্ব বা মানবিক কাজ, রাস্তার ধারে অসহায়দের উদ্ধার করে তাদের পাশে দাঁড়ানোর মতো বিশেষ গুন তাঁর কর্মধারায় এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে।