অভাবের সংসারে আধপেটা খেয়ে মাধ্যমিকে নজরকাড়া ফল সব্জি বিক্রেতার ছেলের

নিজস্ব সংবাদদাতা,পুরাতন মালদা, ১৭ জুলাই ঃ অভাবের সংসারে আধপেটা খেয়ে মাধ্যমিকে নজরকাড়া ফল করলো পুরাতন মালদার এক সবজি বিক্রেতার ছেলে। এমনকি বাবার সাথে বাজারে সবজি বিক্রিতে প্রায়দিনই সহযোগিতা করে এসেছে ওই কৃতী ছাত্র সুজিত পাল (১৬)।  এবারে তার মাধ্যমিকে প্রাপ্ত নম্বর ৬৮১। এক চিলতে চাঁটায় এবং টিনের মোরাম দেওয়া বাড়িতে থেকেই বহু কষ্টের সংসারের মধ্যেও ছেলের এই অভাবনীয় ফলাফলে উচ্ছসিত অভিভাবকেরা।

পুরাতন মালদা ব্লকের সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ১ নম্বর বিমল দাস কলোনির বাসিন্দা রাজকুমার পাল পেশায় সবজি বিক্রেতা। তার দুই ছেলে। বড় ছেলে রাজীব পাল, উচ্চশিক্ষার জন্য ব্যাঙ্গালুরুতে মেডিকেল নার্সিং ট্রেনিং নিয়ে পড়াশোনা করছে। ছোট ছেলে সুজিত পাল এবারে মাধ্যমিকে ৬৮১ পেয়ে সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে।

মালদা শহরের টাউন হাই স্কুলের ছাত্র সুজিত পাল বাংলায় পেয়েছে ৯৭, ইংরেজিতে ৯৬, অংকে ১০০, ভৌত বিজ্ঞানে ৯৫, জীবন বিজ্ঞানে ৯৮, ইতিহাসে ৯৮ এবং ভূগোলে ৯৯। তার মোট প্রাপ্ত নম্বর ৬৮১। কয়েকটি নম্বরের জন্য রাজ্যের এক থেকে দশম স্থানের মধ্যে যেতে পারে নি। তা নিয়ে কিছুটা আক্ষেপ থাকলেও, অবশ্য এখন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন দুঃস্থ পরিবারের ওই ছেলে সুজিত পাল।

সুজিতের বাবা রাজকুমার পাল বলেন, সবজি বিক্রির উপর আমার সংসার। খুব কষ্ট করে বড় ছেলে রাজীবকে ব্যাঙ্গালুরুতে পড়াচ্ছি ।ছোট ছেলে ভালো ফল করেছে । ও এখন আইআইটি সায়েন্স নিয়ে পড়তে চায় । কিন্তু প্রচুর টাকার দরকার। টিনের ছাদের ঘর দিয়ে জল পড়ে। চার দেওয়াল দুমড়ে-মুচড়ে গিয়েছে ।ঘর ঠিক করতে পারি নি। তার উপর ছেলের পড়ানোর চিন্তা, এখন দুশ্চিন্তা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকার এবং প্রশাসন যদি সহযোগিতা করে, উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে হয়তো অনেকটাই এগিয়ে যেতে পারবে।

এদিকে মাধ্যমিকে কৃতি ছাত্র সুজিত পাল জানিয়েছে, ভবিষ্যতে তার কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং হওয়ার ইচ্ছে রয়েছে। তাই সে আইআইটি সায়েন্স নিয়ে পড়তে চাই। কিন্তু গরিবের পরিবারে এখন উচ্চশিক্ষা নিতে গিয়ে কতটা বাধা সৃষ্টি করবে, সেটাই এখন দুশ্চিন্তায় ভাবিয়ে তুলেছে ওই কৃতি ছাত্র ও তার পরিবারকে।