তবলা না বাজালেই ওদের মন বসে না পড়াশোনায়

নিজস্ব প্রতিবেদন,শিলিগুড়ি ঃঃ একজন সায়ন ব্যাপারী।আর একজন আকাশ পাল। দুজনেই বেশ মজেছে তবলার নেশায়। একদিন তবলা না বাজালে ওদের মন ভালো থাকে না।পড়াশোনায় মন বসে না। আর তবলা বাজিয়ে পড়তে বসলে ওদের মন থাকে ফুরফুরে। পড়াতেও বেশ মন বসে। সায়ন পড়ে অষ্টম শ্রেণীতে। শিলিগুড়ি তরাই তারাপদ আদর্শ বিদ্যালয় ওর স্কুল। শিলিগুড়ি এন জে পির সূর্যসেন কলোনির ই ব্লকে ওর বাড়ি। ওর বাবা শ্যামল ব্যাপারী সামান্য কাঠের কাজ করে। মায়ের নাম ময়না ব্যাপারী।ছোট থেকেই বাড়িতে পাগলের মতো ঢোল, খাট,তিন টিন,কাঠ বাজাতো সায়ন।ওর এই নেশা দেখে ওর বাবামা ওকে তবলা শেখার নেশায় ঠেলে দেয়। এখন আকাশবাণী শিলিগুড়ির শিশু মহলের শিল্পী সায়ন। তবলা বাজানো প্রতিযোগিতায় ওর পুরস্কারও আছে। তিন তাল, গৎ,কায়দা, চক্রদার ওর দুহাতের তালে বেশ জমে ওঠে। ঝাঁপতাল, দাদরা, তেওড়া, রুপক, একতাল সবই ওর হাতের কায়দায় ধীরে ধীরে পরিণত হচ্ছে। কারণ পিছনে আছে ওর গুরুর বিশিষ্ট তবলা শিল্পী সুবীর অধিকারী। সকাল বিকাল রোজ এক থেকে দুঘন্টা চলে ওর তবলার অনুশীলন। রয়েছে ওর হাঁপানি, তবুও কষ্ট উপেক্ষা করে তবলার নেশা ছাড়তে রাজি নয় সায়ন।

সায়নের মতোই তবলার নেশায় ডুবে থাকছে এনজেপি শান্তিপাড়ার আকাশ পাল। আকাশের বাবা পিন্টু পাল সামান্য গাড়ি চালক আর মা টুম্পা পাল। তরাই তারাপদ আদর্শ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেনীতে পড়ে আকাশ। ওর কথায়, তবলার অনুশীলন না করলে মন ভালো থাকে না। আর মোবাইলের নেশা বা বাইরে আড্ডা দেওয়ার নেশা না করে তবলার নেশায় থাকলে বেশ ভালো লাগে। তবলা বাজানোর পর মনটাও পড়ার প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠে। বিশিষ্ট তবলিয়া সুবীর অধিকারী এখন আকাশের তবলা প্রশিক্ষক।
সুবীর অধিকারী এই কিশোর তবলিয়াদের বিষয়েে বলেন, সায়ন,আকাশদের তবলা শেখার আগ্রহকে তিনি উস্কে দিচ্ছেন। এদের বেশ আগ্রহ আছে। আর্থিক দিক দিয়ে এরা পিছিয়ে। কিন্তু তারপরও ওরা প্রতিভা প্রদর্শন করে যাচ্ছে । পিছিয়ে পড়া নতুন সম্ভাবনাময় তবলিয়াদের কিভাবে বছরে অন্তত পাঁচজনকে আর্থিক সহযোগিতা করা যায় সেকথাও তিনি ভাবছেন।