সঙ্গীতই তাঁর জীবনের মূল মন্ত্র, জানাচ্ছেন কমলিকা ব্যানার্জী

শিল্পী পালিত ঃ আজ আমাদের আত্মকথা বিভাগে হুগলির ভদ্রেশ্বর থেকে লিখেছেন কমলিকা ব্যানার্জী–

আমার নাম কমলিকা ব্যানার্জী(ভট্টাচাৰ্য).. আমার সঙ্গীত জীবনে যাদের অবদান তারা হলেন সর্বপ্রথম আমার মা ও বাবা.. মা শ্রীমতি আনজুলা ভট্টাচাৰ্য ও বাবা শ্রী হারাধন ভট্টাচাৰ্য. আমার মা এর কাছে সা বলতে শিখেছি.. মা হলেন আমার প্রথম শিক্ষাগুরু.. আর বাবা ছিল এক অদম্য ইচ্ছা শক্তির অধিকারী, যার মাধ্যমে এই সঙ্গীত জীবনে প্রবেশ করি… বাবা ও মা এর ছিল এক অনন্ত সাধনা যে সাধনার সুফল হিসেবে হয়তো গলায় আমি সুর লাগাতে পারি..আমার স্কুল জীবন কেটেছে চন্দননগর এর “কৃষ্ণ ভাবিনি নারী শিক্ষা মন্দির “”..স্কুলের প্রত্যেকটি দিদিরা অত্যন্ত আমাকে ভালোবাসতেন.. যাদের সাহচর্যে আমি শিক্ষা ও সংস্কার পেয়েছি.. কিছু শিখতে পেরেছি..
আমার মা এর পর আমার শিক্ষা গুরু হলেন শ্রী উৎপল ভট্টাচাৰ্য. যিনি ছিলেন এ.টি কাননের সুযোগ্য শিষ্য. শাস্ত্রীয় সংগীত এর বিভিন্ন রেওয়াজ মাস্টার মশাই এর কাছে তালিম নিতে শুরুকরি.কিন্তু কালের নিয়মে সবাইকে জীবনের দিক পরিবর্তন করতে হয় তাই তার ব্যতিক্রম আমিও ছিলাম না..

এরপর আমি বিদুষী শ্রীমতি প্রভাতী মুখোপাধ্যায় এর কাছে সংগীত শিক্ষার জন্য যাই খুব ছোট বয়সে. সঙ্গীত শিক্ষার সাথে আকাশবাণীতে ১৯৯১ সালে অডিশন দিই “গল্প দাদুর আসর “. এ.. তারপর বহু অনুষ্ঠান করি। যুববানীতেও গান করার সুযোগ পাই…কিছুদিন পরে আমি বেনারস ঘরানার প্রবাদ প্রতিম শিল্পী প. মোহনলাল মিশ্রজির কাছে তালিম নেওয়া শুরু করি… দীর্ঘবছর গুরুজীর আশ্রয়ে থাকি…. নারা বেঁধে গান শেখা শুরু করি… উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ব বিদ্যালয়ে ভর্তি হলাম শাস্ত্রীয় সঙ্গীত নিয়ে পড়ার জন্য.. তখন আমি শ্রীমতি সুরঞ্জনা বসুর কাছেও ঠুমরি দাদরা আরো অন্যান্য লঘু শাস্ত্রীয় সংগীত শিক্ষা অর্জন করেছি. ২০০৮ সালে দিন. “ডোভার লেন কম্পিটিশন “এ খেয়াল, ঠুমরি, ভজন, রাগপ্রধান এ অংশগ্রহণ করে স্থান পাই.. তারপর সেই বছরেই” ন্যাশনাল স্কলারশিপ ” এ অংশগ্রহণ করি খেয়াল বিষয়ে.আমি বিদ্যালয়ে পড়াকালীন আমাদের সঙ্গীত শিক্ষিকা ছিলেন শ্রীমতি ইন্দিরা সিল. যার অবদান আমার জীবনে অনেক খানি জায়গা জুড়ে আছে.আমি বিভিন্ন অনুষ্ঠান অংশগ্রহণ করেছি বিশেষত কাব্যলোক এর অনুষ্ঠান আমার জীবনে বিশেষ আলোকপাত করে. আমি বহু গুণী শিল্পীর সান্নিধ্যে আসতে পারি এবং তাঁদের সাথে এক মঞ্চে গান করার সুযোগ পাই…

পরবর্তীকালে আমি, “বাংলা সংগীত মেলা ” এ সংগীত পরিবেশন করি তাছাড়া তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর এর বিভিন্ন সংগীতানুষ্ঠান করেছি…. এর বাইরে টিভি চ্যানেলে ও ডিজিটাল মাধ্যমে গান করতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবতী মনে করি….সংগীত এক বিশাল সমুদ্র. র আমি এক অতি ক্ষুদ্র একটি জীব হিসেবে এই মহাসমুদ্রতে বিচরণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনেকরি.

সঙ্গীত হলো আমাদের দশটা কলা বিদ্যার এক বিদ্যা… এই বিদ্যার মধ্যে নিজেকে নিমজ্জিত করতে গেলে গুরুর সান্নিধ্যে আসার অত্যন্ত প্রয়োজন হয়, সেই সঙ্গে নিজের রেওয়াজ… হয়তো এখনো কিছুই জানিনা পারিনা তবুও যতদিন বাঁচবো এই সঙ্গীত এর মধ্যে যেন থাকতে পারি এটাই আমার জীবনের মূল মন্ত্র….

10 no kaibarta para lane . bhadreswar.hooghly.pin- 712124