সঙ্গীত সাধনা দিয়েই ঈশ্বর সাধনা করছেন মৌসুমী

শিল্পী পালিত ঃঃ আজ আমরা শিলিগুড়ির এক অন্যরকম সঙ্গীত সাধিকার কথা বলবো। তার নাম মৌসুমী দাশগুপ্ত। তার মতে, গানের মধ্যে দিয়েই ঈশ্বরের সাধনা করা যায়। দিনরাত মৌসুমী গান নিয়ে পড়ে থাকেন।

শিলিগুড়ি শহর এবং শহরের বাইরে বেশির ভাগ গানের অনুষ্ঠানে তার গান শোনা যাচ্ছে । গানের প্রতি নিষ্ঠা ও ভালোবাসার জন্যই আজ সকলের কাছে প্রিয় হয়ে উঠতে পেরেছেন তিনি। ছোট থেকেই সঙ্গীত চর্চার মধ্যেই তার বেড়ে ওঠা। তার মা খুব ভালো গান গাইতেন।আর বাবা কেন্দ্রীয় সরকারী কর্মচারী যেমন ছিলেন তেমন আবৃত্তিকার ও নাট্টকর্মী ছিলেন। বাবা মার হাত ধরেই তার গান, আবৃত্তি ও নাটকের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে ওঠে। জলপাইগুড়ি গভ:গার্লস স্কুলে বিদ্যালয় জীবনের পড়াশোনা পূর্ন করেন। পরবর্তীতে আনন্দ চন্দ্র কলেজ থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক হন। শিলিগুড়িতে তারপর পড়তে চলে আসেন। পড়াশোনার পাশাপাশির গানের চর্চাও সমান ভাবে চালু রেখেছিলেন। জলপাইগুড়িতেই সঙ্গীত শিক্ষা গ্রহণ শুরু করেন স্বর্গীয় ভোলা চক্রবর্তী ও সঞ্জীব তালুকদারের কাছ থেকে। বিয়ের পর পাকাপাকি ভাবে চলে আসেন শিলিগুড়ি শহরে। স্বামী বিবেক দাশগুপ্ত সবসময় তাকে উৎসাহ দিয়ে গেছেন গানের জন্য। মৌসুমী দাশগুপ্তের মেয়ের নাম রিনিক্তা দাশগুপ্ত। ইতিমধ্যে আবৃত্তি ও বাচিক শিল্পজগতে পরিচিত নাম।
মৌসুমী দাশগুপ্তের সঙ্গীতের বিচরণ শাস্ত্রীয় সঙ্গীত থেকে রবীন্দ্রসঙ্গীত, টপ্পা থেকে ভজন কীর্তন, ফোক থেকে আধুনিক গানে। স্বামীর কর্মসূত্রে কলকাতাতেও কাটিয়েছেন বেশ কিছু সময়। সেখানেও তিনি তার নিরলস সঙ্গীতের সাধনা করে গেছেন। কলকাতায় থাকাকালীন শাস্ত্রীয় সঙ্গীত গুরু সুকুমার সেনের কাছেও তালিম নিয়েছেন। বিদূষী শিপ্রা বোসের কাছে সঙ্গীত শিক্ষা গ্রহণ করেছেন। কলকাতায় অনসূয়া মুখার্জীর কাছে এখনো মাঝে মাঝে গিয়ে থাকেন। তিনি বঙ্গীয় সঙ্গীত পরিষদ থেকে সঙ্গীতে সিলভার মেডেলিস্ট। নিজের লেখা গানে সুর দিয়ে অদ্ভুত কিছু গান রচনা করে ফেলেছেন ইতিমধ্যে, যা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে শ্রোতাদের কাছে সমাদৃত। তার পরিচালিত সঙ্গীত শিক্ষা একাডেমী – শিলিগুড়ি সৃষ্টি মিউজিক একাডেমিতে নতুন নতুন সম্ভাবনাময় মুখ উঠে আসছে তার হাত ধরেই। সারা ভারতবর্ষে বিভিন্ন গানের অনুষ্ঠানের পাশাপাশি টিভি চ্যানেলেও অংশ নিয়ে চলেছেন। বিচারক হিসেবেও যোগদান করে চলেছেন বহু প্রতিযোগিতা মূলক গানের অনুষ্ঠানে। অর্জন করেছেন বহু পুরস্কার। তার মতে গানই সর্বশ্রেষ্ঠ সাধনা। গানের মধ্যে দিয়েই ভগবানের আরাধনা করা যায়। সঙ্গীত নিয়ে ভবিষ্যতে অনেক কিছু ভাবনা চিন্তা তার রয়েছে।