মুড়ি ঘন্ট

শ্রীময়ী গুহটিয়াঃ #সে একটা সময় ছিল……
আমাদের ছোটবেলাটা,
নেমন্তন্ন বাড়ি মানেই মাছের মাথা দিয়ে মুগ ডাল, মুড়ি ঘন্ট আর ছেঁচড়া…….
হ্যাঁ দারুণ লাগতো তখন,…… কলাপাতায় গড়িয়ে যাওয়া সাদা শুক্তো আর নড়বড়ে কাঠের টেবিলে হামেশাই পড়ে যাওয়া ফুটো ওলা মাটির ভাঁড়ের জল….
কি…. মনে পড়ে?

#তখন সব সার দিয়ে খেতে বসা একসাথে,.. চ্যাঁ ভ্যাঁ আওয়াজ কচি কাঁচাদের,… আর কোমরে গামছা জড়িয়ে,…. ইয়া বড় বড় পিতলের বালতি গামলা নিয়ে রান্নার ঠাকুর বা বাড়ির সদস্যদেরই খাবার পরিবেশন……

#বড্ড সেকেলে, ব্যাকডেটেড…. কিন্তু বড্ড জড়িয়ে রাখা আদরে সোহাগে ভালোবাসায় যত্নে আর……
আর একটু নিন না….
ঐ দিকে আরো একটু দাও তো ভাই….
বা. …
এই যে পাতা খালি কেন,
বা…
কি রে মা পেট ভরে খাচ্ছিস তো….
বা…
আর একটা মাছ নে…..
বা…
ও দাদা ভালো করে খান তো দেখি!
বা….
আয় তোর মাছটা বেছে দি!
বা…..
দইয়ের ওপরটাই দেবেন ভাই….
বা….
মিষ্টির প্রতিযোগিতায় আগের বারও জিতেছেন দাদা এবারও কিন্তু জিততে হবে!
হাঃহাঃ হাঃ……. এসবের তুমুল হৈ চৈ হট্টগোল!

#বেশি খাওয়া!
তা ছিল বৈকি!
কেমন যেন গাঁইয়া কালচার!
হ্যাঁ ঠিক………. তাও ছিল……
তবে যেটা ভিত হিসেবে ছিল সেটা তো মনুষ্যত্ব আর সরলতা!
এখন পাই কোথায় বলো তাদের! বড্ড মেকি এখনও সবকিছুই!

#দাবী ছিল ভালোবাসার, স্নেহের,…..
ইগো!
উঁহু!
বড় একটা দেখা মিলতো না তার!
আর স্ট্যাটাস বা স্ট্যান্ডার্ডের জন্ম তখনও প্রকটভাবে হয় নি!
আন্তরিকতাটাই মাখো মাখো থাকতো এসব আটপৌরে অথচ রাজকীয় রান্নার পদের মতোই!

#মাঝে মাঝেই বানিয়ে ফেলি সেসব রান্না…. আজ ও বানালাম,
ঘরোয়া কিন্তু সবার ভীষণ ভালোলাগার পদ
#মুড়ি_ঘন্ট

#বড় মাছের মাথা কড়া করে নুন হলুদ দিয়ে ভেজে রাখা।
ছোট করে কাটা আলু লাল করে ভেজে পেঁয়াজ রসুন কুচি ভাজতে হবে ।
ধুয়ে জল ঝরিয়ে রাখা গোবিন্দ ভোগ চাল ঘি দিয়ে ভাজতে হবে।
তুলে নিয়ে গোটা গরম মশলা তেজপাতা দিয়ে টোমাটো দিয়ে চিনি দিয়ে কষাতে হবে।
এবার আলু চাল সব দিয়ে জিরে বাটা ধনে বাটা আদা বাটা দিয়ে কাশ্মীরী লঙ্কা গুঁড়ো দিয়ে ভালো করে কষিয়ে গরম জল দিয়ে ঢাকা দিয়ে দিতে হবে।
একটু পরে মাছের মাথা গুলো দিয়ে আবার ঢাকা দিতে হবে।
হয়ে এলে গরম মশলা গুঁড়ো আর ঘি দিয়ে নামাতে হবে।