নিজস্ব প্রতিবেদন,শিলিগুড়িঃরাত যত গভীর হয় ততই তার পড়াশোনা বাড়ে। তার সঙ্গে লেখালেখি। কখন যে ভোরের পাখিরা সব কিচিরমিচির শুরু করে ,তা তিনি টেরই পান না। বছরের পর বছর ধরে এভাবেই উত্তরবঙ্গের মেখলিগঞ্জের বাড়িতে বসে চলছে তার নিভৃতের সাহিত্য সাধনা।দিনের বেলা সাংসারিক নানান কাজ আর রাতের বেলা পড়াশোনা আর লেখালেখি।এভাবেই ২০০৯ সালে ৬৮টি কবিতা নিয়ে তার প্রথম কাব্য গ্রন্থ রুপসি শোক প্রকাশিত হয়।তারপর কালস্রোত,গদ্যের বই চতুষ্কোণ,ছায়াকলম, শ্রুতি নাটক শরীরি অশরিরী এবং ২০১৯ সালে কলকাতা বইমেলায় স্বপ্ন জবার অন্তরীক্ষ । বইয়ের পর বই লেখার সাধনার জেরে তিনি পুরস্কারও পেয়ে চলেছেন। আর এভাবেই এপার বাংলা ওপার বাংলার সাহিত্য জগতে পরিচিত নাম হয়ে উঠেছেন লক্ষ্মী নন্দী ।
মেখলিগঞ্জের ডাক ঘরের কাছে তার বাড়ি। বাবার নাম শিশির কুমার মিত্রমজুমদার। বাবা ছিলেন ব্যবসায়ী। আর তার মায়ের নাম মায়ারানি মিত্রমজুমদার।মা ছিলেন গৃহবধূ । গৃহবধূ হলে হবে কি, তার মা ছিলেন উচ্চ শিক্ষিতা ।বাবা মায়ের সঠিক শিক্ষা তো ছিলই,তার সঙ্গে নিজের চেষ্টা বা সাধনা। তার জেরে আজ এই পঞ্চাশ বছর বয়সে বই লেখার জন্য বাংলাদেশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যেমন স্বর্ণ পদক পেয়েছেন তেমনই কলকাতা থেকে নিয়ে এসেছেন সাহিত্য সন্মাননা। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের মতো সাহিত্যিকের হাত থেকে নিয়ে এসেছেন পুরস্কার। পেয়েছেন অনেক পুরস্কার। তারমধ্যে ২০১৯ সালে মেখলিগঞ্জের নক্ষত্র সন্মানের কথা উল্লেখ করেন।
তার স্বামীর নাম কুনাল নন্দী। চাকরি করেন কৃষি দফতরে। স্বামীও তাকে এগিয়ে যেতে সহযোগিতা করেন।সপ্তম শ্রেণীতে পড়ার সময় স্কুলের দেওয়াল ম্যাগাজিনে কুকুরের ওপর একটি কবিতা লেখেন। তারপর থেকে তার লেখালেখির নেশা ধরে। আজও সেই নেশা ছাড়তে পারেন নি।কিন্তু কি মজা এই লেখালেখির নেশায়, প্রশ্ন করলে লক্ষ্মীদেবী বলেন,অচেনাকে চেনা, অজানাকে জানার নেশায় লিখে চলেছি। যেদিন বুঝে যাবো কি পাই এই লেখালেখি থেকে সেদিন আর লিখবো না। নতুনদের উদ্দেশ্যে তার কথা, যতো তারা পড়বে আর লিখবে ততোই বৌদ্ধিক বিকাশ ঘটবে। লেখালেখি করে যতই ছেলেমেয়েদের মধ্যে সৃজন ভাবনার বিকাশ ঘটবে ততোই ইতিবাচক চিন্তার প্রসার ঘটবে। আর ইতিবাচক চিন্তার বিকাশ না ঘটলে দেশের উন্নতি হবে না।এই সময় লক্ষ্মীদেবী উপন্যাস লিখছেন। কোচবিহারের উত্তর প্রসঙ্গে মেখলিগঞ্জের কৃষ্টি সংস্কৃতি এবং ভাষা দিবস নিয়ে লিখেছেন সম্প্রতি। আরও উল্লেখ করার বিষয় হল, তার নিজে হাতে গড়া একটি সংস্থাও আছে। নাম,অদ্বিতিয়া শিল্পীগোষ্ঠী। প্রতি বছর দেওালির আগে তার সদস্যরা তার জন্মদিনও পালন করে। আর সেই অনুষ্ঠানের শুরু হয় বেদ পাঠ ও উপনিসদের গান দিয়ে।